ফেলানী হত্যায় ভারতের অনুতাপ

দুই দিনব্যাপী বৈঠক শেষে বুধবার জেডব্লিউজি’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী হত্যার হওয়ার ঘটনায় ‘অনুতাপ ও সমবেদনা’ প্রকাশ করেছে।

এর আগে রোববার ওই ঘটনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানো হয়। বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনার রাজীত মিত্রকে ওই লিখিত প্রতিবাদলিপিটি দেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব মোস্তফা কামাল। পাশাপাশি এ ধরনের ঘটনা এড়াতে বৈধ পথে সীমান্ত পারাপার হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে ভারত।

গত ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ১৫ বছরের কিশোরী ফেলানী মারা যায়। এরই মধ্যে ফেলানী হত্যা প্রতিরোধে ব্যর্থদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ চেয়ে হাইকোর্টে একটি আবেদন করা হয়েছে।

ফেলানীর বাবা নাগেশ্বরী উপজেলার দক্ষিণ রামখানা ইউনিয়নের বানার ভিটা গ্রামের নুরুল ইসলাম নূরু ১০ বছর ধরে দিল্লিতে কাজ করেন। ফেলানী তার সঙ্গে সেখানেই থাকতো। দেশে বিয়ে ঠিক হওয়ায় সে বাবার সঙ্গে ফিরছিলো।

সীমান্ত পার হওয়ার সময় কাঁটাতারের বেড়ায় কাপড় আটকে গেলে ফেলানী চিৎকার শুরু করলে বিএসএফ সদস্যরা তাকে গুলি করে হত্যা করে ও লাশ নিয়ে যায়। পরদিন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) সদস্যদের কাছে লাশ ফেরত দেয় বিএসএফ।

বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কার্যদলের যুগ্মসচিব পর্যায়ের বৈঠক মঙ্গলবার শুরু হয়ে শেষ হয় বুধবার। বৈঠকে সীমান্তে হত্যা বন্ধ, সীমান্ত সমস্যার সমাধান, বন্দি বিনিময়সহ দ্বিপক্ষীয় নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

আলোচনায় উঠে আসা বিভিন্ন প্রস্তাব দুই দেশের স্বরাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে উত্থাপন করা হবে। বুধবার বিকেলে ওই বৈঠক শুরু হয়েছে।

যুগ্মসচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কামালউদ্দিন আহমেদ। ভারতের পক্ষে ছিলেন সে দেশের যুগ্মসচিব (উত্তর-পূর্বাঞ্চল) শম্ভু সিং।

বৈঠক শেষে কামালউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, পারস্পরিক সহযোগিতা ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ আলোচনায় উঠে আসা বিভিন্ন সুপারিশ দুই দেশের স্বরাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে উত্থাপনের জন্য পাঠানো হয়েছে।

তবে ওই সুপারিশের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। বলেন, আন্তরিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। ফেলানী হত্যার ঘটনায় ভারত ‘ক্ষমা চাইবে’ কি না এ বিষয়ে কোনো মতামত দিতে অস্বীকৃতি জানান ভারতীয় প্রতিনিধি দলের প্রধান শম্ভু সিং।

শম্ভু সিং বলেন, “আমার সচিব এখানে এসেছেন। এ বিষয়ে কোনো কথা বলা আমার সমীচিন নয়। প্রশ্ন থাকলে তিনিই জবাব দেবেন।”

বাংলাদেশ ভারত যৌথ কার্যদলের সচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার আলোচনার ওপর যৌথ বিবৃতি দেওয়া হবে। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন স্বরাষ্ট্রসচিব আবদুস সোবহান সিকদার এবং ভারতের স্বরাষ্ট্রসচিব গোপাল কে পিল্লাই দেবেন সেদেশের নেতৃত্ব।

দুই দেশের স্বরাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের সর্বশেষ বৈঠক হয়েছিলো ২০০৯ সালে নয়াদিল্লিতে।

 

Source : BDnews24.com