কাউন্সিলর আকমল বেপারীর বেপরোয় তান্ডবে কমপক্ষে ১০জন আহত, বাড়িঘর ভাংচুর, চাঁদাবাজীসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড অব্যাহত রয়েছে। নির্বাচনে এ কাউন্সিলরের পক্ষে কাজ ও ভোট না দেয়ায় হুমকীতে প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার গ্রাম ছাড়া হয়েছে বলে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাড়িঘর ছেড়ে এসব পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় একাধিক অভিযোগ দিলেও পুলিশ রহস্যজনকভাবে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
স্থানীয় ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর আকমল বেপারীর মূল প্রতিদ্বন্ধি ছিল বেল্লাল হোসেন। বেল্লাল হোসেনে পক্ষে কাজ ও ভোট দেয়ার অপরাধে নির্বাচনে আকমল বেপারী বিজয়ী হওয়ায় তার সমর্থকেরা ভোট গ্রহনের দিনই রাতে পাঙ্গাশিয়া গ্রামের জামাল বেপারী বাড়িঘর তচনছ ও আলমগীরের মুদী দোকানে লুট করার চেষ্টা চালায়। পরের দিন একই এলাকার মুজাম খন্দকারকে লোহার রড দিয়ে মারাত্মক জখম করে। হারুন খন্দকারের বাড়ির সামনে খালের উপর সাঁকো ভেঙ্গে যাতায়ত বন্ধ করে দেয়। মুজাম খন্দকার(৪০), রুহল আমীন খন্দকার(৩০) ও বশির খন্দকার(৪০) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে এবং জামাল বেপারী(৩২), মাসুম খন্দকার(১৫) ও রতন খলিফা(২০)কে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ছালেক খন্দকারের ট্রাক্টর জিম্মিকরে ৫০হাজার টাকা চাঁদাদাবী করছে এবং টাকা না দেয়া পর্যন্ত কৃষিকাজ করতে দিচ্ছে না। আকমল বেপারী ও তার সমর্থকদের হুমকীতে গ্রাম ছাড়া হয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার।
ছাদেক খন্দকার বলেন, ‘সন্ত্রাসী জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হলে যা হয় তাই আমাদের ভাগ্যে জুটেছে। আকমলের হুমকীতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পাশ্ববর্তী গৌরনদী উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামে বোনের শশুর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি’। ছাদেক খন্দকার, হারুন খন্দকার ও আবুল হোসেন জানান, ‘ভোট দেয়া কি আমাদের অপরাধ? আকমলকে ভোট না দেয়ার কারনে আমরা এখন বাড়িতে যেতে পারছি না। প্রায় ৫০টির মতো পরিবার এলাকা ছেড়ে আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। ওর সন্ত্রাসী বাহিনী থাকার কারনে কেউ ভয়ে মুখ খুলতে পারছে না’। নুরুল হক সরদার বলেন, ‘আকমল আমাকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ২৪ঘন্টার মধ্যে বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার জন্য হুমকী দিয়েছে। এখন কোথায় গেলে জীবনের নিরাপত্তা পাব তাই খুঁজছি’। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের কথা না শুনে পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা আকমল বেপারীকেই গুরুত্ব দেয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এ ব্যাপারে কাউন্সিলর আকমল বেপারী সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সহকারী পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) আশফাক বলেন, ‘অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত চলছে’।
যোগাযোগ করা হলে কালকিনি থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আকমল বেপারীর ব্যাপারে আমরা একাধিক অভিযোগ পেয়েছি। হয়তো কিল-ঘুষি দিতে পারে কিন্তু ঘটনা যা ঘটছে তার চেয়ে বেশী রটানো হয়েছে। কেউ যদি বাড়িতে না যেতে পারে তাহলে তাদেরকে অনুরোধ করবো আমার কাছে বলার জন্য’।