পর্দা উঠলো বিশ্বকাপ ক্রিকেটের

ICC World Cup 2011প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ বিশ্বকাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এ সময় শান্তির প্রতীক কপোতের দল ডানা মেলে উড়ে যায় আকাশে। আতশবাজির আবির ছড়িয়ে পড়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের ওপর সন্ধ্যাকাশে।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে স্টেডিয়ামের পূর্ব পাশে শিল্প ব্যাংক ভবনে টানানো বিশাল পর্দায় ভেসে ওঠে বিশ্বকাপের প্রতিকৃতি। ICC World Cup 2011জমকালো এ অনুষ্ঠান দেখতে গোটা ক্রিকেট বিশ্বের দৃষ্টি ছিলো বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের দিকে। বিস্ময়ের চৌকাঠ পেরিয়ে বিশ্ব দেখেছে অনন্য-অপূর্ব লাল-সবুজ বাংলাদেশকে। বিশ্বাকাপের উদ্বোধনের মাধ্যমে বিশ্বকাপICC  World Cup 2011 ক্রিকেটের সহআয়োজক বাংলাদেশ তৈরি করলো নতুন ইতিহাস। এর আগে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে দশম আইসিসি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঞ্চে আসনগ্রহণ করেন। এ সময় আইসিসি’র প্রেসিডেন্ট শারদ পাওয়ারকে স্বাগত জানানো হয়। জাতীয় সঙ্গীতের পরপরই দেশের ঐতিহ্যবাহী ভ্যানগাড়িতে করে আনা হয় বিশ্বকাপের মাসকট ‘স্ট্যাম্পিকে’। এরপর সুসজ্জিত গাড়িতে চড়ে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের স্বাগত সঙ্গীত গাইতে গাইতে মাঠে প্রবেশ করেন ইবরার টিপু। জুলফিকার রাসেল রচিত ‘ও পৃথিবী, এবা র এসোঃ বাংলাকে নাও চিনে, ও পৃথিবী, এবার এসো, বাংলাদেশ নাও চিনে, ও পৃথিবী, তোমায় স্বাগত জানাইঃ এই দিনেঃ’। ইবরার টিপুর সঙ্গে গানটি পরিবেশন করেন মিলা, কণা ও এলিটা। গানে বাঁশি, বেহালা, তবলা, ঢোল, সানাইসহ ১৮টি অ্যাকস্টিক বাজিয়েছেন ৪০ জন যন্ত্রশিল্পী।

ICC  World Cup 2011সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বর্ণিল সাজে সজ্জিত ‘লিড’ নামের রিকশায় চড়ে ১৪ দেশের অধিনায়কের নেতৃত্বে অংশগ্রহণকারী দলের সদস্যরা অংশ নেন মার্চপাস্টে। ১৪ অধিনায়কের সঙ্গে ছিলেন ১৪ শিশু। ঢাকার অভিজাত স্কুলগুলো থেকে ১৪ শিশুকে বাছাই করা হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে সঙ্গীত পরিবেশন করেন ভারতের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী সনু নিগম।

ICC World Cup 2011এরপর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি আহম মোস্তফা কামাল এমপি শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) প্রেসিডেন্ট শারদ পাওয়ার, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আলী আহাদ সরকার, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তৃতা শেষে ২০১১ বিশ্বকাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। বিশ্বকাপের উদ্বোধনের পর ভারতের সেলিব্রেট ইভেন্ট ‘সিম্পোনি অব কালারস’ এবং শ্রীলংকার সেলিব্রেট ইভেন্ট ‘দ্য পার্ল অব ইন্ডিয়ান ওশান’ দর্শকদের নিয়ে যায় স্বপ্নীল আবেশে। এই দুটি পর্ব ছিলো ২০ মিনিটের। এরপর বাংলাদেশের দুই বরেণ্য নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নীপা ও শিবলী মহম্মদের পরিচালনায় ২০ মিনিটের ‘দ্য রাইজিং টাইগার অব এশিয়া’ পরিবেশিত হয়। এতে ‘৫২-র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, বাংলা নববর্ষ বরণসহ বিভিন্ন উৎসব এবং চাকমা, রাখাইন, মারমা, সাঁওতাল, গারো উপজাতীয়দেICC  World Cup 2011র সংস্কৃতি এবং বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা হয়। এ সময় ঢাকার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ২১০০ ছাত্রছাত্রী এবং সশস্ত্র বাহিনীর ৩৫০ জন সদস্য কোরিওগ্রাফিতে অংশ নেন। পরিচালনা করেন ভারতের বিখ্যাত কোরিওগ্রাফার সন্তোষ শেঠজি। এ সময় খ্যাতিমান কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন শোনান দেশের গান। জনপ্রিয় গায়িকা মমতাজ পরিবেশন করেন আমার ঘুম ভাঙ্গায়া গেলোরে মরার কুকিলে.., খায়রুন লো.. এবং নান্টু ঘটকের কথা শুইনা..। রুনা লায়লা গেয়েছেন শিল্পী আমি শিল্পী.., দমাদম মাস ক্যালেন্ডার.. জনপ্রিয় দুটি গান। রাত পৌনে ৯টার দিকে বিশ্বকাপের থিম সং ‘দে ঘুমাকে’ পরিবেশনের মাধ্যমে শেষ হয় বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের।

বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধন আজ বৃহস্পতিবার হলেও মাঠে খেলা শুরু হবে আগামী শনিবার। রাজধানীর শের-ই বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ওই মাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ভারত। ১৪টি দল দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে ৪৩ দিনের টুর্নামেন্টে লড়াই করবে। ২ এপ্রিল মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড় স্টেডিয়ামে ফাইনাল।

 

Photo Source : Yahoo – Prothom-Alo