সংসদে সৈয়দা আসিফা আশরাফী স্পিকারকে “মাইক দে”

আজ সোমবার অধিবেশনের শুরুতে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুক পয়েন্ট অব অর্ডারে কথা বলার জন্য দাঁড়ালে স্পিকার তাঁর হতাশার কথা বলেন।

স্পিকার বিরোধী চিফ হুইপের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি কিছু বলবেন? তাঁর আগে আমাকে কিছু বলতে দেন। গতকাল (রোববার) আমার প্রতি যে আচরণ করা হয়েছে, আপনারা তার প্রতিকার করেননি। আপনারা আমার প্রতি সহানুভূতি দেখালেন না। আমাকে আপনাদের একজন সদস্য বললেন, মাইক দে। এই আচরণ দুঃখজনক। আমি তো শুধু স্পিকার নই। আমি তো তার বাবার বয়সীও।’

এরপর স্পিকার সরকারি ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘আপনাদের সবাই কার্যপ্রণালী বিধি জানেন। আমি আপনাদের সহযোগিতা নিই। তার মানে এই নয় যে আপনাদের সব কথা হুবহু তামিল করব। সংসদে আমার কথাই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।’

স্পিকারের বক্তব্যের জবাবে এ সময় বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবদিন বলেন, ‘আমাদের সদস্য এ ধরনের কথা বলতে পারেন না। তবে আপনি রেকর্ড দেখতে পারেন। রেকর্ডে এ রকম কথা থাকলে আমি তার পক্ষ থেকে আপনার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’
জয়নাল আবদিন আরও বলেন, গতকাল বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার বিদেশ গমনের সময় বিএনপির অনেক সাংসদকে বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে ঢুকতে দেওয়া হয়নি এবং তাঁদের ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহার করতে দেয়নি।
স্পিকার এ ঘটনাকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন এবং অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।

এরপর সরকারদলীয় চিফ হুইপ আব্দুস শহীদ বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম, তখন আমরাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একই আচরণের শিকার হয়েছিলাম। কিন্তু সংসদে এসে তা বলতে পারিনি।’


বিরোধী দলের ব্রিফিং
ওয়াকআউটের পর রাতে সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন অভিযোগ করেন, নেতা-নেত্রীদের সম্পর্কে অশোভন উক্তি করে সরকার সংসদকে অকার্যকর করতে চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও চান না বিরোধী দল সংসদে থাকুক।

জয়নুল আবদিন বলেন, ‘সরকারি দলের একজন নারী সাংসদ আমাদের নেতা শহীদ জিয়া, বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সম্পর্কে অশোভন বক্তব্য রাখার পরও ডেপুটি স্পিকার তাঁর জন্য সময় আরও বাড়িয়ে দেন। আমরা তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করার পরও আমাদের ফ্লোর দেননি। তিনি আমাদের দেখেও দেখেননি। তারেক রহমান ও আরাফাত রহমানের মামলা এখনো বিচারাধীন। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ এখনো প্রমাণিত হয়নি। অথচ সরকারি দলের সদস্যরা তাঁদের বিরুদ্ধে কটূক্তি করে যাচ্ছেন। নেতা-নেত্রীদের সম্পর্কে অশালীন বক্তব্য রাখা হলে তা এক্সপাঞ্জ করা হবে— স্পিকারের এমন রুলিং থাকলেও ডেপুটি স্পিকার ওই বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করেননি।’

বিএনপির সংসদীয় দল ডেপুটি স্পিকারের এই আচরণের নিন্দা জানিয়ে ওয়াকআউট করেছে বলে জানান জয়নুল আবদিন জানান। ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ মাহবুব উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, রেহেনা আক্তার, সৈয়দা আসিফা আশরাফী, শাম্মী আখতার, নিলুফার চৌধুরী, রাশেদা বেগম, শেখ সুজাত মিয়া প্রমুখ।

Source : Prothom-Alo