এবার প্রাণ দিলো স্কুল ছাত্রী সোনিয়া

পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরলো সদ্য সমাপ্ত এসএসসি পরীক্ষার্থী সোনিয়া আক্তার (১৭)। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে সোনিয়া মারা যায়। বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য সরকার দলীয় প্রভাবশালী একটি মহল তৎপর হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার পশ্চিম সুজনকাঠী গ্রামে। নিহত স্কুল ছাত্রী সোনিয়া আক্তার ওই গ্রামের দিনমজুর শাহ আলম হাওলাদারের কন্যা। 

সোনিয়ার মা শেফালী বেগম জানান, আগৈলঝাড়া সদরের শ্রীমতি মাতৃমঙ্গল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে সোনিয়া এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে। সোনিয়ার বড় বোন তানিয়া বেগম (২২) বলেন, প্রতিবেশী প্রভাবশালী মোফাজ্জেল হাওলাদারের পুত্র লিটন হাওলাদার দীর্ঘদিন থেকে আমার বোন সোনিয়াকে বিয়ের প্রলোভনে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। লিটনের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে বিভিন্ন সময় সোনিয়াকে বিভিন্ন ধরনের উত্যক্ত করে আসছিলো। গত বুধবার (২৩ মার্চ) বিষয়টি সোনিয়া আমাকে জানায়। ওইদিন দুপুরে আমি উত্যক্তর ঘটনায় লিটনকে শ্বাসিয়ে দেই। এসময় আমার সাথে লিটনের বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে লিটন দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমাকে কুপিয়ে জখম ও আমার বোন সোনিয়াকে শারিরীক নির্যাতন করে। আমি বিষয়টি আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা খানকে অবহিত করি। চেয়ারম্যান আমাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেন। উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দেয়ার অপরাধে বখাটে লিটন ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সকালে আমাদের ঘরের সম্মুখে এসে সোনিয়াসহ আমাদের পরিবারের অন্যান্যদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।

এ ঘটনায় লোকলজ্জার আমার বোন সোনিয়া ওইদিন (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে পরিবারের সবার অজান্তে বাড়ির পাশ্ববর্তী পুকুর পাড়ে গিয়ে বিষপান করে। বাড়ির লোকজনে মুর্মুর্ষ অবস্থায় সোনিয়াকে উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে আটটার দিকে সোনিয়া মারা যায়। খবর পেয়ে ওইদিন রাত দশটার দিকে আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ সোনিয়ার লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। গতকাল শুক্রবার ভোরে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে প্রেরন করা হয়।

তিনি আরো জানান, বিষপানের পূর্বে সোনিয়া তার পড়ার টেবিলে একটি চিরকুট লিখে রেখে গেছে। ওইচিরকুটে লেখা রয়েছে “আমার মৃত্যুর জন্য লিটন দায়ি”। এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এস.আই জসিম উদ্দিন জানান, বিষপানে নিহতের ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে নিহতের দাদা ধলু হাওলাদারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। যৌন হয়রানীর ব্যাপারে এখনো কেউ অভিযোগ দায়ের করেননি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।