কে হচ্ছেন বরিশাল জিলা পরিষদের প্রশাসক

রাজনৈতিক অঙ্গনে  বিষয়টি আলোচনায় আলোচিত হচ্ছে।

প্রশাসক পদে আসীন হতে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন সংস্কৃত মন্ত্রনালয়ের জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালনা বোর্ডের সদস্য শিল্পপতি খান মশিউর রহমান, বরিশাল মহানগর আ’লীগের যুগ্ন আহবায়ক অ্যাড.আফজালুল করিম, কোতোয়ালী থানা আ’লীগের সভাপতি ও বাকসুর সাবেক ভিপি আনোয়ার হোসেন, জেলা আ’লীগের যুগ্ন সম্পাদক মনিরুল হাসান খান ,কর্নেল(অব) জাহিদ ফারুক শামীম,বীর বিক্রম মাহাবুবুর রহমান, মহানগর যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন। এর বাইরে মহিলালীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা শাহানারা বেগমের প্রশাসক পদে ঠাঁই নেয়ার গুঞ্জন চলছে। তবে কে হচ্ছেন প্রশাসক তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। যদিও এদের মধ্যে গোয়েন্দা রিপোর্ট,মাঠ জরিপসহ হাইকমান্ডে দৌঁড়ঝাপে এগিয়ে রয়েছেন খান মশিউর রহমান ও আফজালুল করিম । এদের মধ্যে থেকে  যেকোন একজন প্রশাসক হওয়ার বিষয়টি অনেকটাই নিশ্চিত।

যতদূর জানা যায়,হাইকমান্ডে সমাজসেবক আ’লীগ নেতা খান মশিউর রহমানের আলাদা ইমেজ রয়েছে। ক্লীন ম্যান হিসাবে মশিউর রহমান পরিচিত হওয়ায় প্রশাসক পদে এগিয়ে রয়েছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি বরিশাল সদর আসন থেকে আ’লীগের প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন চেয়েছিলেন।  খান মশিউর রহমান দীর্ঘ দিন ধরে নিরবে মহানগরীসহ সদর উপজেলার সবকটি ইউনিয়নের উন্নয়নে নিজের সাধ্যমত ভূমিকা রেখে আসছেন। অসহায় দুস্থ মানুষের পাশে দাড়িয়ে সেবার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। বিশেষ করে সাধারন জনগনের মাঝে খান মশিউর রহমান ক্লীনম্যান হিসাবে পরিচিতি । অপরদিকে আফজালুল করিম বিগত সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু হাইকমান্ডের নির্দেশে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে শরীক দল জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে তিনি ছাড় দিয়েছেন। ফলে রাজনীতিতে তার এই ত্যাগের কারনে প্রশাসক পদে নিয়োগ পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এছাড়া ভিপি অনোয়ারেরও আওয়ামী রাজনীতি গতিশীল করতে অনেক ঘাম ঝড়িয়েছেন।

এদিকে সংস্কৃত মন্ত্রনালয়ের জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালনা বোর্ডের সদস্য  খান মশিউর রহমান বলেন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে পুরোদমে এগিয়ে চলছেন। ভিশন টোয়েন্টি টোয়েন্টি ওয়ান বাস্তবায়নের লক্ষে জননেত্রী জেলা পরিষদকে শক্তিশালী করনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এক্ষেত্রে প্রশাসক পদে আমাকে নিয়োগ দেয়া হলে জননেত্রীর ভিশন বাস্তবায়নে স্বচ্ছ ও সুন্দরভাবে দ্বায়িত্ব পালনে সক্ষম হব। তিনি আরো বলেন সাবেক চীফ হুইফ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ ও বিসিসি মেয়র শওকত হোসেন হিরনসহ আ’লীগের সিনিয়র নেতাদের সহযোগিতা নিয়েই সুচারুভাবে দ্বায়িত্ব পালন করতে চাই।

আ’লীগ নেতা আফজালুল করিম বলেন রাজনীতিতে আমার ত্যাগের বিষয়টি সকলেই অবগত। নেত্রী আমার সাংগঠনিক কর্মকান্ডে মুগ্ধ। এজন্য প্রশাসক পদে নিয়োগ পেতে তিনিই যোগ্য বলে দাবী করেন ।

বাকসুর সাবেক ভিপি আনোয়ার হোসেন জানান ছাত্ররাজনীতি থেকে শুরু করে দলকে সুসংগঠিত করতে তার অনেক ত্যাগ মেধা শ্রম রয়েছে। দলের জন্য তিনি নিবেদিত দাবী করে বলেন সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে যোগ্য হলেও দলের সিদ্ধান্তে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন। তিনি বলেন বরিশাল আ’লীগে প্রশাসক পদে নিয়োগ পেতে তার বিকল্প কোন নেতা নেই। তাকে প্রশাসক পদে নিয়োগ দেয়া হলে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানও হয়ে আসতে পারবেন। কিন্তু অন্য কাউকে দিলে সে চেয়ারম্যান হতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেন।
মনিরুল হাসান খান জানান দীর্ঘ ৪৫ বছরের অধিক আ’লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পূক্ত। দলের প্রতিটি কর্মসূচীতে তার অংশ গ্রহন বিদ্যামান।  তিনি দাবী করেন দল থেকে অন্যায় সুবিধা নিয়ে কখানো তিনি অর্থনৈতিক ফায়দা লুটেন নি। অন্যায় সুবিধা নেয়ার রাজনীতিও তিনি পছন্দ করেন নি। তিনি জানান প্রশাসক পদে তিনিই যোগ্য।

কর্নেল জাহিদ ফারুক শামীম বলেন দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে তিনি জাতীয় সংসদে সদর আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। অল্পের ব্যধানে তিনি হেরেছেন। তিনি বলেন প্রশাসক পদে বসতে আগ্রহী। আর নিয়োগের বিষয়টি দলীয় নেত্রীর হাতে। আমি এ পদের যোগ্য হলে তিনি বসাবেন।

প্রসঙ্গত সম্প্রতি আ’লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সবকটি জেলা পরিষদে প্রশাসক নিয়োগ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এক্ষেত্রে নিয়োগ পাবেন দলীয়ভাবে যাদের ত্যাগ রয়েছে। দলীয়ভাবে যোগ্যতা দক্ষতা ও সততা বিবেচনা আনার কথা রয়েছে। এদের মধ্যে আ’লীগের জেলা মহানগরের নেতৃত্ব পর্যায়ের নেতারা প্রধান্য পাবেন। মহাজোটের শরীকরা এ পদে আসতে পারেন। সাবেক এমপি বা সাংসদ কিংবা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন এরকম নেতারা ঠাঁই পেতে পারেন। এ খবরের পরই জেলা পরিষদের প্রশাসক পদে আসীন হতে নানামুখী দোঁড়ঝাপ করে আসছে বরিশাল আ’লীগের নেতারা।