অতঃপর বাকসু নির্বাচনের সিদ্ধান্ত

নির্বাচনের দাবীতে মঙ্গলবার সড়ক অবরোধ বিক্ষোভসহ অধ্যক্ষকে দু’ঘন্টা ব্যাপী প্রশাসনিক ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। কলেজের ছাত্রলীগ,বামপন্থী ছাত্রসংগঠন ও শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে অবশেষে  দুপুরে অধ্যক্ষ বাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার সিদ্ধান্ত ঘোষনা করেছেন।
 
বিএম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ন আহবায়ক নাহিদ সেরনিয়বাদ বলেন শিক্ষার্থীদের প্রানের দাবী বাকসু নির্বাচন। দীর্ঘ দিন ধরে কলেজের শিক্ষার্থীরা নির্বাচনের দাবীতে নানাবিধ কর্মসূচীর মাধ্যমে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এখন সফলের পথে। অধ্যক্ষ তফসিল ঘোষনার দিনক্ষন নির্ধারন করেছেন। তিনি হাজারো শিক্ষার্থীদের সামনে প্রকাশ্যে বলেছেন আগামী জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে বাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করা হবে। এমনকি তিনি তফসিল ঘোষনার জন্য লিখিতও দিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, বাকসু নির্বাচনের দাবীতে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিএম কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে অধ্যক্ষ’র কার্যালয় প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে রাখা হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা নির্বাচন নিয়ে আর টালবাহানা নয় দ্রুত তফসিল ঘোষণা করতে শ্লোগান দেয়। মিছিলটি ক্যাস্পাসের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিন করে কলেজের মসজিদ গেটে এসে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের একটি গাড়ির কাচ ভাঙে এবং টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। বিক্ষুদ্ধ ছাত্রদের পুলিশ মৃদু লাঠি চার্জ করে। পুলিশের সঙ্গে বাকিবিতন্ডা ঘটে। কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের যুগ্ন আহবআয়ক মঈন তুষার, নাহিদ সেরনিয়াবাদ, ফাতেমা মমতাজ মলি, শুভ সেন, ছাত্র অধিকার আন্দোলনের আহবায়ক নুরুল আম্বিয়া বাবু, ছাত্রমৈত্রীর কলেজ শাখার সভাপতি শামিল শাহরুখ তমাল, জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি সিদ্ধার্থ মন্ডল, ছাত্রইউনিয়ন নেতা অহিদুজ্জামান অহিদ।

সূত্র জানায়, কলেজ অধ্যক্ষকে চাপ প্রয়োগ করে ছাত্র নেতারা তার নিকট থেকে তফসিল ঘোষনার সিদ্ধান্ত নিতে প্রমান হিসাবে লিখিত নিয়েছে। বিএম কলেজ ছাত্র অধিকার আন্দোলনের আহবায়ক নুরুল আম্বিয়া বাবু বলেন বাকুস’র তফসিল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। তফসিল ঘোষনা হলেই আন্দোলনের কর্মসূচী প্রত্যাহার করে নেয়া হবে।

এদিকে বিএম কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক মোঃ ফজলুল বারী চয়ন বলেন এ মুহুর্তে বাকসুর নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। তফসিল ঘোষনা হলে তাদের অংশ গ্রহন না করার সম্ভবনা বেশি। পরিবশে সৃষ্টি হলে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করা যেতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

কলেজ অধ্যক্ষ ড.ননী গোপাল দাস বলেন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে আমি মৌখিকভাবে বলেছিলাম আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে বাকসুর নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করব। কিন্তু তারা মৌখিক বক্তব্যকে কর্নপাত না করে আমার নিকট থেকে লিখিত নেয়ার জোর চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে তাদের চাপের মুখে লিখিত দিতে বাধ্য হয়েছি। তিনি আরো বলেন কলেজের সুষ্টু পরিবেশ বজায় থাকলে আগামী মাসেই আমি তফসিল ঘোষনা করব। এ ক্ষেত্রে তিনি কোন গড়িমসি করবেন না বলে এ প্রতিবেদককে জানান।

প্রসঙ্গত কলেজের ছাত্রলীগ ও প্রগতিশীল ছাত্রনেতাদের অভিযোগ বাকসু নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করার নেপথ্যে রয়েছেন বরিশাল জেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক সাবেক চীফ হুইফ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। তিনি বাকুসু নির্বাচন চাচ্ছেন না। কারন নির্বাচন হলে তার পন্থীদের কেউ ঠাঁই পাবে না বাকসুতে। তার সমর্থিত মাঠের কোন ছাত্রনেতাও নেই। তার ঘোরতর সমর্থক রফিক সেরনিয়াবাদ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ন আহবায়ক। কিন্তু রফিকের জালিয়াতির মাধ্যমে মাস্ট্রার্সে ভর্তি হওয়ার বিষয়টি ইতামধ্যে ফাঁস হয়ে গেছে। ফলে নির্বাচন নিয়ে নানা টালবাহানা করে আসছেন আবুল হাসানাত। এক্ষেত্রে বাকুসু নির্বাচন হলে ঠাঁই পাবে আ’লীগের প্রভাবশালী অপর নেতা বিসিসি মেয়র শওকত হোসেন হিরন সমর্থিত ছাত্রনেতারা। এর মধ্যে সাংগঠনিক নেতা হিসাবে পরিচিত হলেন মঈন তুষার ও নাহিদ সেরনিয়াবাদ।