আধিপত্যের লড়াইয়ে বেহালদশা বরিশাল আ’লীগ ও বিএনপির

রাজপথ ক্রমেই ভয়ংকর হতে চলেছে। প্রধান এই দুটি দলের অভ্যন্তরীন ক্রোন্দল এতদূর গড়িয়েছে যে এখানকার বিএনপিকে ৪ খন্ডে ও আ’লীগকে ২খন্ডে রুপান্তরিত করেছে। এখানকার বিএনপির ৪বারের সাংসদ মজিবুর রহমান সরোয়ারের সেই বিএনপি; এখন আর নেই। তার একক আধিপত্যর মানতে নারাজ বিএনপির এই দলটিতে এখন ৪জন প্রতিদ্বন্ডি হয়েছে। সরোয়ারের ৩শক্ত প্রতিদ্বন্ডি হচ্ছেন আহসান হাবিব কামাল,ওবায়দুল হক চান ও নজরুল ইসলাম খান রাজন। স্ব-স্ব গ্র“প ভিন্ন ভিন্ন ভাবে কেন্দ্রীয় যে কোন প্রোগ্রাম বা কমসূচি পালন করছে। সর্বশেষ বিএনপির এই গ্র“পিং রাজনীতি সংঘাতে রুপ নিয়েছে। যে মামলার আসামী খোদ সাংসদ মজিবর রহমান সরোয়ার। কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম রাজনকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় এই মামলা দায়ের হয় সাংসদ সরোয়ার সহ দলীয় কয়েক নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। মজার বিষয় এখানকার বিএনপির রাজনীতিতে বিএনপির বিরুদ্ধে বিএনপি ই অপশক্তি পরিচালনা করছে। ফলশ্র“তিতে বিএনপির এই দলটিতে একদিকে যেমনিভাবে বাড়ছে সংঘাত তেমনি হচ্ছে সংকীর্ন। বিপরীতে বরিশাল আ’লীগের নেতা-কর্মীরাও মানষিকতার দিক থেকে হাসানত বনাম হিরন নামক দুটি গ্র“পে বিভক্ত।

সর্বশেষ এখানকার আ’লীগে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা গ্র“পিং এর বিষয়টি অনেকটাই পরিষ্কার করে দিয়েছে। বাকেরগঞ্জে ছাত্রলীগের কমিটিতে মেয়র হিরন সমর্থিতদের কেউ স্থান না পাওয়ায় বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মিলন ভূইয়া ও যুগ্ন আহবায়ক কাজী মনির উদ্দিন তারিককে মারধরের ঘটনা পর তারিক এক সক্ষাৎকারে বলেছেন, মেয়র হিরনের কারনেই বরিশালে আ’লীগে এই অস্থিতিশীল পরিবেশ। এর আগে বিএম কলেজের যুগ্ন আহবায়ক মঈন তুষার ৩০ এপ্রিল বিএম কলেজ সাংবাদিক সম্নেলন করে আবুল হাসানাত আব্দল্লাহকে সন্ত্রাসীদের জন্ম দাতা বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। স্বভাবতই অভ্যন্তরীন গ্র“পিং এর বিষয়টি দুটি দলের ক্ষেএেই এখন জন সাধরনের নিকট এখন ওপেন সিক্রেট। বলা যায় পদ পজিশনের লোভ বা প্রত্যাশাই মূলত এর জন্য দায়ী। ও দিকে মহানগর বিএনপির কমিটি ঘোষনা হওয়ার পর জেলা বিএনপির কমিটি নিয়ে বিএনপির রাজনীতিতে বর্তমানে চলছে নতুন এক সিরিয়াল। দলীয় নেতা-কমীরা কখনো বলছে আহসান হাবিব কামাল আসছেন জেলা সভাপতি পদে এবং সাধারন সম্পাদকের পদে আসছেন ওবায়দুল হক চান। আবার কখনো বলছে সাধারন সম্পাদক পদে আসছেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি বিলকিস জাহান শিরিন। মেয়র শিবিরের বেশীর ভাগ সৈন্য হল বর্তমান বরিশাল মহানগর আ’লীগ,যুবলীগ ও ছাত্র লীগের নেতা-কর্মীরা।

আ’লীগের নিরপেক্ষ কর্মীদের মধ্যে অপর একটি সূত্র বলছে বরিশালে মেয়র শিবিরের অন্যতমদের তালিকায় যুবলীগের মোমেন শিকদার, বহিস্কৃত যুবলীগ নেতা আবুয়াল হোসেন অরুন, মেজবাহ উদ্দিন দ্বিপু, ট্যারজান তমাল। এছাড়া মহানগর ছাত্রলীগের আসদুজ্জামান আসাদ, বিএম কলেজ ছাত্রলীগের মঈন তুষার, নাহিদ সেরনিয়াবাত, শেখর দাস, বরিশাল কলেজের সাবেক এজি এস সোহাগ ,”ঞ্চল দাস পাপ্পা, জসিম ও পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র লীগ ক্যাডার মিজান। তবে বেশীর ভাগ ছিনিয়ার আ’লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ মেয়র শিবিরের বিপরীতে অবস্থান করছেন। যাদেরকে দলীয় কর্মীরা হাসানাত সমর্থিত বলে দবী করছে । অবশ্য বলা হয় র‌্যাব কর্তৃক ক্রস-ফায়ারে নিহত ভিপি মশিউল আলম সেন্টু বিএনপির রাজনীতিতে ছিলেন সরোয়ারের শক্তিধর হাতিয়ার। যার মৃত্যুতে ছত্র ভঙ্গ হয়েছে বরিশাল জেলা ও মহানগর ছাত্র দলের ইউনিটি। তবে বিএনপির ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দদের মধ্যে বেপরয়া কিছু ছাত্রদল নেতারা দলের এই র্দূদিনে নিজ আখের গুছাতে ব্যাস্তহয়ে পরেছেন। যাদের মধ্যে অন্যতমদের তালিকায় রয়েছেন মনোয়ারুল ইসলাম জিপু। যার বির্তকিত কর্মকান্ড ইতি মধ্যে মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। সব মিলিয়ে ছাত্র দল, যুব দল ও বিএনপির বড় ধরনের এই ফাটলের ধারা অব্যহত থাকলে বরিশালের বিএনপির আসন ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে পরবে।

এ সব ঘটনার আংশিক সত্যতা স্বিকার করে বিএনপির নজরুল ইসলাম খান রাজন জানান, দলীয় অভ্যন্তরীন ক্রোন্দল আসলে যে কোন নির্বাচনেই প্রভাব পরে। তবে এখানকার এমপির মতো প্রত্যেকেই যদি প্রতিপক্ষকে হত্যা করার মত পরিকল্পনা গ্রহন করে তবে সে দলের রাজনীতি করার থেকে না করাই কি ভাল নয়। ও দিকে মেয়র শওকত হোসেন হিরন বরিশালে গ্র“পিং রাজনীতি নেই উল্লেখ করে একটি দৈনিক পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে বলেন বরিশাল আ’লীগ কোন গ্র“পিং বা বিভাজনের রাজনীতি বিশ্বাষ করেন না। তারা সাবেক চীফ হুইপ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর অভিভাবকত্বে বিশ্বাষ করে রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন।