বরিশালের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

সন্ধ্যার পর থেকে বরিশালের নদ-নদীগুলোতে স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েক মিলিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে বরিশাল জেলার নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চল বাকেরগঞ্জ, মুলাদী, হিজলা উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া শুক্রবার ভোররাত থেকে বরিশাল নগরীর পলাশপুর, হাটখোলা, মোহাম্মদপুর, রসুলপুর ও স্টেডিয়াম এলাকা পানি প্লাবিত হয়েছে। তবে শুক্রবার দুপুরের পর থেকে আবহাওয়া স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

এদিকে লেবুখালী ফেরিঘাটের গাংওয়ে পানির নিচে তলিয়ে থাকায় পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার সঙ্গে বরিশালের সড়ক যোগাযোগ সর্ম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বরিশাল আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক মফিজুর ইসলাম জানিয়েছেন, নিম্নচাপটি এখন দুর্বল হয়ে উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে সরে গেছে। তবুও সাগর ও নদী উত্তাল থাকায় উপকূলীয় নৌবন্দর এলাকায় ৩নং সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৬৮.৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ ছিল ২৩ থেকে ৩০ কিলোমিটার। বর্ষা মৌসুম হওয়ায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথাও জানান তিনি। বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেইজ রিডার শহিদুল ইসলাম জানান, এ অঞ্চলের নদনদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ মিলিমিটার বেশি পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে নদী সংলগ্ন নিমাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে শুক্রবার দুপুরের পর থেকে পানি নামতে শুরু করেছে।

বরিশাল নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালক বিভাগের ঊর্ধ্বতন উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. আশ্রাফ হোসেন বলেন, ‘কোনো নৌযান দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। তবে নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে দিক হারিয়ে ঢাকা থেকে বরিশাল ও পটুয়াখালীগামী পারাবাত-১১ ও আঁচল-৬ নামে ২টি লঞ্চ চরে উঠিয়ে দিয়েছেন চালকরা। তিনি বলেন, ‘প্রায় হাজার খানেক যাত্রী নিয়ে পারাবাত-১১ এর চালক বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউপির রাজার চর এলাকায় ভোররাতে চরে উঠিয়ে দেয়। তবে লঞ্চের যাত্রীরা ট্রলার ও পারাবাত-২ লঞ্চে করে গন্তব্যে এবং ঘাটে পৌঁছেছেন। এদিকে বরিশাল নগরীর টিয়াখালী ঘরামীর পোল এলাকায় ৫টি  বৈদ্যুতিক খাম্বা উপড়ে পড়লেও তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন ওজোপাডিকোর (ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহগির হোসেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিম্নাঞ্চল এলাকায় কিছু মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। তবে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সে বিষয়ে জানাতে পারেনি মৎস্য অধিদপ্তর। অপরদিকে, কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, কিছু শাকসবজির বাগানে পানি উঠেছে। তবে পানি নামতে শুরু করায় তেমন কোনো ক্ষতি হবে না বলে জানান তিনি। বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম আরিফ-উর রহমান জানিয়েছেন, জেলায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।