গৌরনদীতে প্রাথমিক স্কুলের ৫ টি ভবনে ঝুঁকি নিয়ে ক্লাশ চলছে

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ৫ টি ভবনে দেড় সহস্রাধিক শিক্ষাথী আতংকের মধ্যে ক্লাশ করছে। ফলে ওই স্কুল গুলোর শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা করছে। ২০০৯ সালে ধানডোবা ও গেরাকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের ছাদ ও ছাদের ভিম ধসে ২ শিক্ষক ও ২০ শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল।

গৌরনদী উপজেলা শিক্ষা ও এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে উপজেলার ধানডোবা, গেরাকুল, পশ্চিম শাওড়া, বেজগাতি মৈস্তারকান্দি, নলচিড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনগুলো ঝুকিপূর্ণ। এসব বিদ্যালয় ভবনের পিলার, ছাদের ভিম ও ছাদে ফটল ধরেছে। এর অধিকাংশ ভবন ১৯৯৪ ও ৯৫ সালে উপজেলা এলজিইডি অফিসের অত্ত্বাবধানে ফেসেলিটিস বিভাগের অর্থায়নে নির্মাণ করা হয়। গরঙ্গল, উত্তর পিঙ্গলাকাঠি, উত্তর হোসনাবাদ, পূর্ব হোসনাবাদ, বাটাজোর, রামসিদ্দি বাজার, জয়শীরকাঠি, মেদাকুল, পূর্ব ডুমুরিয়া, মিয়ারচর , হাপানিয়া, কাঠালতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিন হোসনাবাদ, চাঁদশী মনোয়ারা রেজিষ্টার প্রাথিমিক বিদ্যালয় জরাজীর্ণ হওয়ায় সংস্কার প্রয়োজন। এসব বিদ্যালয়ের কোন কোন ভবনের ছাদ দিয়ে ও আধাপাকা বিদ্যালয়ের টিনের ছাউনী দিয়ে পানি পড়ে। আবার কোন কোন ভবনের প্লাস্টার খসে পড়েছে। দরজা জানালা ভেঙে গেছে।

ধানডোবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ম্যানের্জি কমিটির সভাপতি সেকান্দার আলী হাওলাদার, গেরাকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নাছিমা খানম জানান, ১৯৯৫ সালে বিদ্যালয় দুইটির ভবন নির্মাণ করা হয়। ঠিকাদার নিম্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় ছাদের একাংশ ও একটি ভিম খসে পড়েছে। ভিম ধসে ও প্লাস্টার খসে পড়ায় লোহার রড় বেরিয়ে গেছে। ক্লাশ রুমের সংকটের কারনে ঝুকিপূর্ণ ভবনে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কের মধ্যে ক্লাশ করছে। পশ্চিম শাওড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা সাহিদা বেগম জানান, ১৯৯৪ সালে বিদ্যালয়ের ভবনটি নির্মাণ করা হলেও ছাদের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরে প্লাস্টার খসে পড়ছে। বৃষ্টি হলেই ক্লাশ রুমের ভেতর বৃষ্টির পানি পড়ে বই-খাতাসহ শিক্ষার্থীদের শরীর ভিজে যায়। ঝঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাশ হলে ছাদ ধসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছে তারা। ধানডোবা স্কুলের শিক্ষার্থী ফারজানা, এ্যানি, আবু সাঈদ, নাসির, আলমাচ, রাব্বি জানান, স্কুল ভবনের ছাদের একাংশ ও ছাদের ভিম খসে পড়লেও ঝুকিপূর্ণ ভবনে আতঙ্কের মধ্যে ক্লাশ করছে তারা। ক্ষোভ প্রকাশ করে পশ্চিম শাওড়া স্কুলের শিক্ষার্থী কেয়া আক্তার, সাথী, মুন্নি, সাব্বির, নাঈম জানান, বর্ষা মৌসুমে স্কুলের একমাত্র ভবনের ছাদ দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়লেও ভিজে তাদের ক্লাশ করতে হয়। তাদের দুর্ভোগের কথা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জেনেও  স্কুল ভবন পুনঃনির্মণ কিংবা সংস্কারের কোন উদ্যোগ নিচ্ছেন না।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম রহমান চৌধুরী জানান, শিক্ষকদের মাসিক সভায় ৫ টি স্কুল ঝুকিপুর্ণ ও ১৪ টি স্কুল জরাজীর্ণ তালিকা করে পুনঃনির্মাণ ও সংস্কারের প্রয়োজন বলে শিক্ষা মন্ত্রনালয়কে জানানো হয়েছে। অতি ঝুকিপূর্ণ ৫ টি স্কুল ভবনে শিক্ষার্থীদের ক্লাশ না নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের মৌখিক ভাবে নির্দেশ দেয়া  হয়েছে।  পাশের আধাপাকা স্কুল ঘরে ক্লাশ নেওয়ার জন্য বলেছেন তিনি। উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, ৩ টি সরকারি প্রাধমিক বিদ্যালয় ভবনকে অতি ঝুকিপূর্ণ, ২টি সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়কে মোটামুটি ঝুকিপূর্ণ চিহিনত করা হয়েছে। ধানডোবা, বাটাজোর, নলচিড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভবন পুনঃনির্মাণের জন্য বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রনালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।