শীর্ষ নিউজের বরিশাল ব্যুরো চীফ আহম্মেদ জালালকে হত্যার চেষ্টা

ওপর হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। বুধবার মধ্যরাতে নগরীর সদর হাসপাতাল রোডের ’ল কলেজ সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এর আগ থেকেই হত্যার মিশন নিয়ে মাঠে নামে বিসিসি মেয়র ও মহানগর আ’লীগের আহবায়ক শওকত হোসেন হিরনের আর্শিবাদপুষ্ঠরা।

সন্ত্রাসী হামলার প্রত্যক্ষদর্শী দৈনিক গনকন্ঠ ও বিডি প্রেস ডটনেটের বরিশাল ব্যুারো চিফ শাহীন হাসান জানান, শীর্ষ নিউজের বরিশাল অফিস থেকে মোটরসাইকেলে করে বাসায় ফেরার পথে এ হামলার ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বরিশাল মেয়রের মদদপুষ্ট চিহ্নিত সন্ত্রাসী তপনের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্রলীগ ক্যাডার তাকে হত্যার চেষ্টা চালায়। এ সময় এলাকার লোকজন এসে তাকে ও মটরসাইকেল উদ্ধার করে। সূত্র জানায়, তপনের পিতার নাম বজলু মোল্লা। সন্ত্রাসী তপন ল’ কলেজের অভ্যন্তরে তার চাচা নাসির মোল্লার বাসায় বসবাস করে আসছে। তার বিরুদ্ধে এলাকায় ইয়াবা ব্যবসা, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডসহ অন্তহীন অভিযোগ রয়েছে। বিসিসি মেয়রের আত্মীয়তার সুবাধে আ’লীগ নেতৃতত্বাধীন মহাজোট সরকার আসার পর থেকে বেপরোয়া কর্মকান্ড করে চলছে তপন।

জানা গেছে, বরিশাল সিটি করর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক শওকত হোসেন হিরন এবং তার আশীর্বাদপুষ্টদের দুর্নীতি ও নানাবিধ অপকর্মের প্রতিবেদন শীর্ষ নিউজ ডটকমে প্রকাশ করায় তার ওপর এ হামলা চালানো হয়েছে। বিশেষ করে মেয়রের আর্শিবাদপুষ্ঠ মহানগর যুবলীগের আহবায়ক নিজামুল ইসলাম নিজাম ও যুবলীগের বহিস্কৃত নেতা টেন্ডারবাজ হিসাবে পরিচিত আবুয়াল হোসেন অরুন বাহিনীর গুছ প্রক্রিয়ায় টেন্ডার কাজ ভাগিয়ে নেয়াসহ দখল সন্ত্রাসের একাধিক প্রতিবেদন শীর্ষ নিউজে প্রকাশ পায়। একই সঙ্গে বরিশাল আ’লীগের কর্ণধর সাবেক চীফ হুইফ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ’র ভক্তদের হামলা, মামলা দিয়ে নানাভাবে হয়রানী করার চিত্রও ফুটিয়ে তোলা হয় প্রতিবেদনে। প্রকাশ করা হয় হিরনপন্থী কর্তৃক আ’লীগের ত্যাগী নেতাদের, কোনঠাসা করে রাখা ও নির্যাতনের সচিত্র প্রতিবেদন। এতে মেয়রের ভাই মামুন, আর্শিবাদপুষ্ঠ নিজাম-অরুনের মুখোশ উন্মোচন হলে সাংবাদিক আহমেদ জালালকে হত্যার মিশনের পরিকল্পনা করে। মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে আহমেদ জালালকে আক্রমন করার নির্দেশ দেয় পরিকল্পনাকারীরা।

শীর্ষ নিউজ ডটকম’র সম্পাদক মোঃ একরামুল হককে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় গ্রেফতার ও রিমান্ডে নেয়ার ঘটনায় ১ আগষ্ট বরিশালে সাংবাদিকদের উদ্যোগে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানবন্ধন শুরুর আগ থেকেই ছাত্রলীগ নেতা জসিমের নেতৃত্বে সদর রোড ও তার আশপাশে মহড়া দেয়। ওইদিন বেলা ১১টায় ছাত্রলীগ নেতা জসিম দুরত্বে অবস্থান করে মানববন্ধনে হামলা চালায়  কালিবাড়ি রোডের মাদক ব্যাবসায়ী অন্তু, ল’কলেজ এলাকার অপু, বি.এম কলেজ ছাত্রলীগের জোবায়ের, বাহাদুর, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মিজানুর রহমান মিজান, অক্সফোর্ড মিশন রোডের সুমন, ক্যাডার তারিক, নাদিম, বাপ্পা, জসিমের গাড়ির ড্রাইভার শুভ। হামলায় আহমেদ জালালসহ ৮ সাংবাদিক আহতও হয়। একাধিক সূত্র জানিয়েছে হামলার পরে ক্যাডারদের মধ্যে টাকার ভাগাভাগি নিয়ে অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্ব ঘটে। হামলা চালাতে  ক্যাডার জুবায়ের ও অন্তুর কাছে অর্ধ লাখ টাকা দেয় নিজাম-অরুন। কিন্তু হামলায় অংশগ্রহনকারীদের কোন টাকা না দিয়ে পুরোটাই পকেটে পুড়ে নেয় জুবায়ের ও অন্তু। এ নিয়ে তাদের মধ্যকার বিরোধও চলছে।

বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি জাহাঙ্গির হোসেনকে হামলার বিষয়টি অবহিত করা হয়। তিনি জানান, ইতিমধ্যে পুলিশের একটি দল সন্ত্রাসী তপনকে আটক করতে অভিযান শুরু করেছে। এদিকে হামলার ঘটনার খবর পেয়ে বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লিটন বাশার, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি মীর মনিরুজ্জামান, যুগান্তর ও এনটিভির বরিশাল ব্যুরো চীফ আকতার ফারুক শাহিন, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার বরিশাল বিভাগীয় কমিটির সভাপতি বীরেন সমাদ্দার,বরিশাল প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক হুমায়ুন কবির সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। তারা বলেন, এ বিষয়ে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসিম উদ্দীন জানিয়েছেন তপন ছাত্রলীগের কেউ নয়। সে সন্ত্রাস প্রকৃতির। হামলার সঙ্গে তিনি সম্পূক্ত নন বলে মন্তব্য করেন।