শহিদুল্লাহ (বর্তমানে চট্টগ্রামে কর্মরত) ও তার পুত্রের বিরুদ্ধে কাজের মেয়েকে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগকারী ও মেরিস্টোপসের দু’নার্স সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা বরিশালের বর্তমান জেলা ও দায়রা জজ একেএম সলিম উল্লাহ’র কাছে ধর্ষিতাকে যে মহিলা মেম্বর গৃহকর্মীর কাজ দিয়েছিলো তিনিও সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। এক আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এ সাক্ষ্য প্রদানকালে ভিকটিম তদন্ত কর্মকর্তাকে জানান, বাকেরগঞ্জের অজোপাড়াগায় থেকে তাকে ঐ মহিলা মেম্বর জেলা জজের নাজিরের মাধ্যমে জজ সাহেবের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ দেয়। এরপর জেলা ও দায়রা জজ তাকে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে। বিষয়টি দায়রা জজের স্ত্রীকে জানিয়ে কোনো লাভ হয়নি। বরং দায়রা জজের পুত্র আরিফ উল্লাহ তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। ঐ গৃহকর্মী গর্ভবতী হয়ে পড়লে ২০০৯ সালের ২৫ জুন তাকে মেরিস্টোপস ক্লিনিকে নিয়ে ভর্তি করানো হয়। ৭ জুলাই মেরিস্টোপসে ১২শ’ টাকা জমা দিয়ে গর্ভপাত করানো হয়। সুস্থ হয়ে ধর্ষিতা পুনরায় জজের বাসায় কাজে যুক্ত করে আবারো ধর্ষণের শিকার হন। গত বছর ১৫ জানুয়ারী জজ সাহেব তাকে গ্রামের বাড়ি চলে যেতে বলে। সেখান থেকে বরিশালে এসে চাকুরীর জন্য পরীক্ষা দিতে পরামর্শ দেয়। এসময় জজ সাহেব ধর্ষিতাকে জানান, আমার বাসা থেকে চাকুরী প্রার্থী হিসেবে পরীক্ষায় অংশ নিলে আমার বদনাম হবে। সরল বিশ্বাসে ধর্ষিতা তার গ্রামের বাড়িতে চলে যান। পরবর্তীতে জানতে পারেন জেলা জজ শহীদুল্লাহ এখান থেকে বদলী হয়ে চলে গেছেন। নাজির দ্বীন মোহাম্মদের স্মরণাপন্ন হলে তিনি উভয় পক্ষ থেকে সুবিধা আদায় করেন। জেলা ও দায়রা জজের কাছে বিষয়টি আপোষ নিষ্পত্তির জন্য ৫ লাখ টাকা উৎকোচ দাবী করেন। অপরদিকে ধর্ষিতাকে তার বাসায় আশ্রয় দিয়ে দ্বীন মোহাম্মদ তার সাথে অবৈধ মেলামেশা করতে থাকেন। দ্বীন মোহাম্মদের স্ত্রী বিষয়টি টের পেয়ে ধর্ষিতাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আপোষ নিষ্পত্তির জন্য জজের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার মধ্যে দ্বীন মোহাম্মদ ধর্ষিতাকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে বিদায় করে। বাকি দেড় লাখ টাকা দ্বীন মোহাম্মদ আত্মসাত করে বলে ভিকটিম তদন্ত কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন। একই সাথে মেরিস্টোপসের দু’ নার্স উল্লেখিত তারিখে জজের বাসার গৃহপরিচারিকার গর্ভপাতের ঘটনা স্বীকার করে সাক্ষ্য দিয়েছেন। বাকেরগঞ্জের মহিলা মেম্বরও এই ঘটনা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত দেন-দরবারের কথা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে তুলে ধরেছেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা এখানকার জেলা ও দায়রা জজ কেএম সলিম উল্লাহ তদন্ত প্রতিবেদন আইন, বিচার ও সংসদ মন্ত্রণালয় পেশ করার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আদালত সূত্র জানিয়েছে।