আলীকদমে মৎস্য পোনা ক্রয়ে বরাদ্দকৃত টাকা হরিলুট

ক্রয়ের জন্য সরকারীভাবে বরাদ্দকৃত অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে। পোনা ক্রয়ের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নিয়ম থাকলেও তা করা হয়নি। নামেমাত্র কোটেশান বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পোনা ক্রয় দেখিয়ে সিংহভাগ অর্থ আত্মসাতের পাঁয়তারা চলছে বলে মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান। খোদ উপজেলা চেয়ারম্যানকেও জানানো হয়নি পোনা ক্রয়ের বিষয়টি।

মৎস্য ব্যবসায়ী মোঃ ইছহাক ও স্থানীয় ঠিকাদারগণ জানান, সরকার মৎস্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে সারাদেশে বিনামূল্যে পোনা মাছ প্রদানের লক্ষ্যে প্রতি উপজেলায় ১ লক্ষ টাকা হারে বরাদ্দ দেয়। আলীকদম মৎস্য অফিসে বরাদ্দ দেয়া টাকায় পোনা ক্রয়ের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি কিংবা স্থানীয়ভাবে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়নি। মৎস্য অফিসের সংশ্লিষ্টরা স্থানীয় তিনজন ঠিকাদারের লাইসেন্সের ফটোকপি সংগ্রহ করে। পরে মৎস্য কর্মকর্তা মর্জি মাফিক দরপত্র তৈরী ও দর দেখিয়ে স্থানীয় একজন ঠিকাদারকে নিন্ম দরদাতা দেখিয়ে ৯০ কেজি পোন ক্রয় করে। প্রতিকেজি পোনা ২২০ টাকা হারে মাত্র ১৯ হাজার ৮শ’ টাকায় ৯০ কেজি পোনা ক্রয় দেখিয়ে অবশিষ্ট টাকা হরিলুটের আয়োজন করা হয়েছে। স্থানীয় বাজার মূল্যে এক লক্ষ টাকায় ৪শ’ কেজি পোনা কেনা যাবার কথা। সিডিউল অনুযায়ী প্রতিটি পোনার ৫ ইঞ্চি হারে ক্রয় করার নিয়ম থাকলেও কেনা হয়েছে ২ থেকে আড়াই ইঞ্চির পোনা। পোনা ক্রয়ের জন্য কোটেশান বিজ্ঞপ্তির কথা বলা হলেও তা উপজেলা পরিষদ কিংবা মৎস্য অফিসের কোন নোটিশ বোর্ডে টাঙানো হয়নি। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগাযোগ করা হলে মৎস্য অফিসের ক্ষেত্র সহকারী মোঃ কফিল জানান, কোটেশান বিজ্ঞপ্তি কোন নোটিশ বোর্ডে টাঙানো হয়নি।

উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কালাম জানান, সরকারী বরাদ্দে মৎস্য পোনা ক্রয়ের বিষয়টি তাকে কিংবা তার অফিসে কোনভাবেই অবহিত করা হয়নি। জালিয়তির মাধ্যমে মৎস্য কর্মকর্তা পোনা ক্রয় খাতের সিংহভাগ অর্থ আত্মসাতের পাঁয়তারা করছে বলে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন, এ দুর্নীতির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন দপ্তরে লিখিত পত্র দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ারুজ্জামান জানান, স্থানীয়ভাবে কোটেশান বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে মৎস্য ক্রয় করা হয়েছে। এতে দুর্নীতি হয়নি।

উল্লেখ্য, মাছের উৎপাদন বাড়াতে সরকার এই প্রথমবারের মতো পোনা ক্রয় খাতে সর্বোচ্চ বাজেট বরাদ্দ দিয়েছে। মৎস্য অধিদপ্তরের ১২টি প্রকল্প এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব বাজেট থেকে যৌথভাবে অর্থায়ন করা হয়। মাছের উৎপাদন বাড়াতে গত বছরের সাত কোটি টাকার স্থলে এবার ১৮ কোটি টাকার পোনা ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। এখাতে অনিয়ম-দুর্নীতি ঠেকাতে এবার আগেই সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।