আগৈলঝাড়ায় প্রভাবশালী কর্তৃক সংখ্যালঘুদের জমি দখল করে মাছ চাষ

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বরিশালের আগৈলঝাড়ায় এক প্রভাবশালী কর্তৃক ভেরী বাঁধের স্লুইজ গেট বন্ধ করে অসহায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৫০ একরেরও অধিক জমি দখল করে অবৈধভাবে মাছ চাষ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে দু’শতাধিক পরিবার ফসল উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে প্রভাবশালী ও তার ভাড়াটিয়া লোকজনদের হাতে শারিরিক নির্যাতনের স্বীকার হতে হচ্ছে ওইসব অসহায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনদের। উপায়অন্তুর না পেয়ে গতকাল সোমবার শতাধিক ভুক্তভোগীরা ওই প্রভাবশালীর হাত থেকে রেহাই পেতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

জানা গেছে, উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের বড়মগড়ার বরাবাড়ি গ্রামের আব্দুল মালেক বকতিয়ারের পুত্র স্থানীয় প্রভাবশালী মোশারফ বকতিয়ার। গত ২ বছর ধরে মোশারফ তার ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে প্রভাব খাটিয়ে ওই গ্রামের অসহায় সংখ্যালঘু পরিবারের ৫০ একরেরও অধিক জমিতে ওয়াপদা বেরী বাঁধের স্লুইজগেট বন্ধ করে জোরপূর্বক নেট জালের ব্যারিকেট দিয়ে মাছ চাষ করে আসছে।

কৃষক সূর্যকান্ত বাড়ৈ জানান, বৈশাখ-জৈষ্ঠ মাসে তারা জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষ করলে মোশারফ মাছ চাষের জন্য তার ইচ্ছেমতো পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্লুইজ গেট খুলে দিয়ে অতিরিক্ত পানি প্রবেশ করায়। ফলে তাদের রোপনকৃত ধানে পচন ধরে যায়। পরবর্তীতে মোশারফ ওইসব জমির মধ্যে মাছের পোনা ছেড়ে দেয়। এছাড়াও কার্প জাতিয় মাছ চাষ করায় ওইসব মাছ চাষীদের লাগানো ফসল খেয়ে সাবার করে দেয়। প্রভাবশালী মোশারফ সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের জমিতে জবরদখল করে গত দু’বছর ধরে এভাবেই মাছ চাষ করে আসছেন।

চাষীরা এর প্রতিবাদ করায় প্রায়ই মোশারফ ও তার লোকজনদের হাতে শারিশারিক নির্যাতনের স্বীকার হতে হয়েছে। এ ব্যাপারে চাষী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অফিসে অভিযোগ করেও কোন সুফল পাননি। উপায়অন্তুর না পেয়ে গতকাল সোমবার ক্ষতিগ্রস্থ শতাধিক চাষীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপংকর বিশ্বাসের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। চাষী সুকন্ঠ বালা বলেন, এ খবর শুনে প্রভাবশালী মোশারফ ও তার লোকজনে আমাদের বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করছে। তাদের হুমকির মুখে আমরা এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।

আগৈলঝাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেন্দ্র নাথ বাড়ৈ বলেন, এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেননি। তবে মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে চাষীদের সুবিধার্থে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর বিশ্বাস বলেন, চাষীদের ফসল নষ্ট কিংবা জোর করে মাছ চাষ করা যাবেনা। প্রয়োজনে আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে এটা বন্ধ করবো।