বরিশালে ঘর গোছাচ্ছেন সরোয়ার

শাহীন হাসান, বরিশাল ॥ বরিশালের আ’লীগ ও বিএনপি দল গোছানোর চেষ্টা করছেন না গ্র“পিং ও কোন্দল ভারী করছেন? দলীয় অভ্যন্তরীন ক্রোন্দল এখানকার বিএনপিকে ৪ খন্ডে ও আ’লীগকে ২খন্ডে রুপান্তরিত করেছে। যদিও ইতিমধ্যে অনেকটাই বিদ্রোহী প্রতিপক্ষদের  সাথে আতাত করে পূর্বের থেকে অবস্থান অনেকটা শক্ত করে ফেলেছেন সাংসদ সরোয়ার। তবে বলা হয় যে দলে গ্র“পিং যত বেশী সাংগঠনিকভাবে সে দল তত বেশী শক্তিশালি। স্ব স্ব গ্র“প ভারী করতে নেতাদের কর্মী সংগ্রহে দল সে সময় আরও বেশী এ্যকটিভ হয়। কর্মী সংগ্রহ করে প্রতিপক্ষের সাথে পাল্লা দিয়ে। ঘরে ঘরে পৌছায় নেতাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম। সাংগঠনিক এই সুক্ষ বিবেচনায় দিক থেকে প্রধান বিরোধীদল বিএনপি এগিয়ে। তার একক আধিপত্যর মানতে নারাজ বিএনপির এই দলটি প্রতিপক্ষ হিসেবে ৩জন বিদ্রোহী। স্ব-স্ব গ্র“প ভিন্ন ভিন্ন ভাবে কেন্দ্রীয় যে কোন প্রোগ্রাম বা কমসূচি পালন করছে। সর্বশেষ বিএনপির এই গ্র“পিং রাজনীতি সংঘাতে রুপ নিয়েছে। যে মামলার আসামী খোদ সাংসদ মজিবর রহমান সরোয়ার। কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম রাজনকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় এই মামলা দায়ের হয় সাংসদ সরোয়ার সহ দলীয় কয়েক নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। যদিও গত সপ্তাহে সংবাদ সম্নেলন করে মামলা তুলে নেয়ার ঘোষনা দিয়েছেন রাজন। কিন্তু উঠাননি। কৌশলি এই নেতা বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দেখানোর জন্য এ ধরনের নাটক মঞ্চায়িস্থ করেছেন সাংবাদিকদের সামনে।

বিপরীতে বরিশাল আ’লীগের নেতা-কর্মীরাও মানষিকতার দিক থেকে হাসানত বনাম হিরন নামক দুটি গ্র“পে বিভক্ত। তবে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ও হিরনকে জুড়ে যে গ্র“পিং’র গুজব রয়েছে মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে আ’লীগে তা কোন ধরনের প্রভাব ফেলবেনা। কারন গ্র“পিং এর কারনে এখানকার আ’লীগে মেয়র হিরনের কোন প্রতিদ্বন্ডির সৃষ্টি হয়নি। যদি ও এই গ্র“পিংকে কখনোই স্বীকার করেনা এখানকার আ’লীগ। তবে সর্বশেষ এখানকার আ’লীগে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা গ্র“পিং এর বিষয়টি অনেকটাই পরিষ্কার করে দিয়েছে। বাকেরগঞ্জে ছাত্রলীগের কমিটিকে ঘিরে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মিলন ভূইয়া ও যুগ্ন আহবায়ক কাজী মনির উদ্দিন তারিককে মারধরের ঘটনায় অভ্যন্তরীন গ্র“পিং এর বিষয়টি জন সাধরনের নিকট অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

ওদিকে বিএনপির একটি সূত্রের দাবী এখানে সরোয়ারের ৩শক্ত প্রতিদ্বন্ডি কামাল, চান ও রাজন আস্তে আস্তে তাদের দল ভারী করায় বিএনপি এখন ৪টি গ্রুপে বিভক্ত হয়েছে। বরিশাল সদর আসনের ৪বার নির্বাচিত এমপি সরোয়ার তার একক আধিপত্যের কারনে দলটিকে কয়েকটি খন্ডে পরিনত করেছেন। বলা যায় পদ পজিশনের লোভ বা প্রত্যাশাই মূলত এর জন্য দায়ী। কথা থাকে হাসানাত বনাম হিরন সমর্থিতদের মানুষিক  দ্বন্দ্বের বিষয়টি আ’লীগের অস্বিকার। হাসানাত সমর্থিত একটি সূত্র বলছে, মূলত হঠাৎ করে জাতীয় পার্টি থেকে আ’লীগে যোগ দানের বছর খানেকের মাথায় হিরনের এই উত্থানের বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি হাসানাত সমর্থিতরা। তারা বলছে, দলীয় নেতা কর্মীদের নিজ শিবিরে আনতে একটু একটু করে অনেকটা কৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। প্রথম দিকে বিভিন্ন টেন্ডার বা কাজ দিয়ে অনেকটাই সু-চুতুর কৌশলে ব্যক্তি দল ভারি করেছেন মেয়র হিরন। তবে মেয়র শিবিরের বেশীর ভাগ সৈন্য হল বর্তমান বরিশাল মহানগর যুবলীগ ও ছাত্র লীগ। আ’লীগের নিরপেক্ষ কর্মীদের মধ্যে অপর একটি সূত্র বলছে বরিশালে মেয়র শিবিরের অন্যতমদের তালিকায় যুবলীগের শাহীন শিকদার, বহিস্কৃত যুবলীগ নেতা আবুয়াল হোসেন অরুন, মেজবাহ উদ্দিন দ্বিপু, ট্যারজান তমাল, মহানগর ছাত্রলীগের আসদুজ্জামান আসাদ, বিএম কলেজ ছাত্রলীগের কর্ম পরিষদের ভিপি মঈন তুষার, জি এস নাহিদ সেরনিয়াবাত, মহানগর সদস্য শেখর দাস, বরিশাল কলেজের সাবেক এজি এস সোহাগ , জসিম ও পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র লীগের মিজান। তবে বেশীর ভাগ ছিনিয়ার আ’লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ মেয়র শিবিরের বিপরীতে অবস্থান করছেন। যাদেরকে দলীয় কর্মীরা হাসানাত সমর্থিত বলে দবী করছে । উল্লেখ্য ২০০৮ সালে মেয়র হিরন রহস্য জনক ভাবে মেয়র ইলেকশনে  জয়ী হবার পর মাত্র ২বছরে পাল্টে দিয়েছেন নগরীর চিত্র। যে কারনে নগরবাসীর আস্থা কিছুটা হলেও তিনি অর্জন করেছেন। বিপরীতে বিরোধীদল বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েও দলীয় কোন কর্মকান্ডে স্বক্রিয় ভাবে অংশ গ্রহন করতে পারছেনা। যার নেপথ্য কারন দলটির চেইন অব কমান্ডরা কয়েকটি গ্র“পে বিভক্ত। মজার বিষয় এখানকার বিএনপির রাজনীতিতে বিএনপির বিরুদ্ধে বিএনপি ই অপশক্তি পরিচালনা করছে। আর তাই ক্রমান্বয়ে গ্র“পিং এর কারনে দলটি সংকীর্ন হতে থাকলেও বৃদ্ধি পাচ্ছে বিএনপির কর্মী সংখ্যা।

এদিকে খোদ বিএনপির প্রধান প্রতিপক্ষ সরোয়ার বর্তমানে দলের ভাঙ্গা-গড়া নিয়ে মহা-দুশ্চিন্তাগ্রস্থ। যে বরিশালে এমপি মজিবর রহমান সরোয়ার দলের উপর এক চাটিয়া প্রভাব বিস্তার করতেন সেখানে এখন ৪টি ফাটল ধরেছে। সমকক্ষ নেতা হতে চাইছেন কামাল, চান ও রাজন। অবশ্য বলা হয় র‌্যাব কর্তৃক ক্রস-ফায়ারে নিহত ভিপি মশিউল আলম সেন্টু বিএনপির রাজনীতিতে ছিলেন সরোয়ারের শক্তিধর হাতিয়ার। যার মৃত্যুতে ছত্র ভঙ্গ হয়েছে বরিশাল জেলা ও মহানগর ছাত্র দলের ইউনিটি। তবে বিএনপির ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দদের মধ্যে বেপরয়া কিছু ছাত্রদল নেতারা দলের এই র্দূদিনে নিজ আখের গুছাতে ব্যাস্তহয়ে পরেছেন। যাদের মধ্যে অন্যতমদের তালিকায় রয়েছেন মনোয়ারুল ইসলাম জিপু। যার বির্তকিত কর্মকান্ড ইতি মধ্যে মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে।