শাহীন হাসান, বরিশালঃ দক্ষিনাঞ্চলবাসীর প্রতিক্ষিত স্বপ্নের ইউনিভার্সিটি অব বরিশাল (বিইউ)’র ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের জন্য ভর্তি কার্যক্রম ২৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে। গতকাল সকাল ১০ টায় ঢাকাস্থ ইউনিভার্সিটি অব বরিশাল (বিইউ)’র লিয়াজো অফিসে বসে অনলাইলে ভর্তি ফরম ছাড়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। আগামী বছরের জানুয়ারীর প্রথম দিকে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস শুরু হবে। ভর্তি ফরম পাওয়া যাবে অনলাইনে ইউনিভার্সিটি অব বরিশাল’র অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে http://www.barisaluniv.edu.bd। ভর্তি ফরমের মুল্য নির্ধারন করা হয়েছে ৩০০ টাকা। ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য বিজ্ঞান অনুষদের (ক ইউনিট) জন্য ন্যুনতম এসএসসি এইচ এসসিতে জিপিএ ৭.৫, মানবিক অনুষদের (খ ইউনিট) জন্য ন্যুনতম জিপিএ ৬.৫, বানিজ্য অনুষদের (গ ইউনিট) জন্য ন্যুনতম জিপিএ ৭। তবে এসএসসি ও এইচএসসি যে কোন একটি পরীক্ষাতে কারো জিপিএ ৩ এর নিচে থাকলে সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে না। এমসিকিউ পদ্ধতিতে ১২০ মার্কের এ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং পরীক্ষার সময়কাল থাকবে ১ ঘন্টা। ২০০৯ সালের পূর্বে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা এ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারবে না।
অনলাইনে ভর্তি ফরম বিতরনের জন্য ইতোমধ্যে মোবাইল কোম্পানী টেলিটকের সাথে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ বছরের জন্য সমঝোতা স্বারক সম্পন্ন হয়েছে।
ইউনিভার্সিটি অব বরিশাল’র উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুনর রশিদ খান জানান, ইউনিভার্সিটি অব বরিশাল (বিইউ)’র স্থাপনা নির্মান কাজ এ বছরের ডিসেম্বরের দিকে শুরু হবে। ইতোমধ্যে চারটি ভবন নির্মানের জন্য ২০ কোটি টাকার দরপত্রের কাজ যাচাই বাছাই চলছে।
শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর পাশাপাশি নিজ ক্যাম্পাসে যাওয়ার লক্ষ্যে দ্রুত গতিতে সকল কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। ইউনিভার্সিটি অব বরিশালে ( পূর্বনাম: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়) শিক্ষার্থী আকৃষ্ট করতে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পরিকল্পনা মাফিক এগোতে সক্ষম হলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়কে টপকে যাবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। বিভিন্ন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালযের সাথে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সংযোগ স্থাপন করে দিতে চান উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুনর রশিদ খান।
বিশ্ববিদ্যলয়ের ভিসি ড. হারুন জানান, ভর্তি পরীক্ষা আগামী ২ ডিসেম্বর না হয়ে কয়েকদিন পিছিয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন জানুয়ারীর প্রথম দিকে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে ক্লাস শুরু করার মাধ্যমে এ অঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন কমিটির আন্দোলন কমিটি অন্যতম সদস্য আনোয়ার হোসাইন বলেন, এটা খুশির খবর যে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে বরিশালবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে।
এদিকে নিজস্ব ক্যাম্পাস কর্নকাঠীতে ফিরে যেতে সেখানে স্থাপনা নির্মানের জন্য ২০ কোটি টাকার দরপত্র আহবান করা হয়েছে। চার গ্রুপের কাজের ঐ দরপত্র গত ১৯ সেপ্টেম্বর সোমবার খোলা হয়েছে। শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান কার্যলয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মজিবুর রহমান জানিয়েছেন, মোট ২২ টি দরপত্র জমা পড়েছে। যাচাই বাছাই শেষে শীঘ্রই সর্বনিম্ন দরদাতা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হবে। তিনি বলেন, আগামী ২ মাসের মধ্যে ওয়ার্ক অর্ডার হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে আশা করছি ডিসেম্বরে নির্মান কাজ শুরু হবে।
জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে সেখানে দুটি প্রশাসনিক এবং দুটি একাডেমিক ভবন নির্মিত হবে। দরপত্রের কার্যাদেশ দেয়ার পর থেকে ১৮ মাসের মধ্যে নির্মান কাজ সম্পন্ন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিতে হবে। সে হিসেবে ২০১৩ সালের মার্চে নিজস্ব ক্যাম্পাসে ফিরে যাবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। এদিকে এ টেন্ডার আহ্বানের পর থেকে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালী একটি মহল কাজ বাগিয়ে নিতে অপতৎপরতা শুরু করেছে। বিসিসি মেয়রর ছোট ভাই মামুন হোসেন ও যুবলীগের বহিস্কৃত নেতা আবুয়াল হোসেন অরুন ওই কাজের বিক্রিত দরপত্র গুছ করতে বর্তমানে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. হারুনর রশিদ খান বলেন, এ প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হোক এমন কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে না।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এরই মধ্যে ৪ টি অনুষদের জন্য ৬ বিষয় অনুমোদন দিয়েছে। চলতি শিক্ষাবর্ষে (২০১১-১২) ৪শ’ শিক্ষার্থী ভর্তি করে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে।