গৌরনদীতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সভায় হট্টগোল

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ৭৫টি মন্ডপে আসন্ন দূর্গা পূঁজা উপলক্ষে বরাদ্দ হওয়া ৩০ মেট্রিক টন চাল বিক্রি করে টাকা কম দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পূঁজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দকে না জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন প্রচলিত দরের চেয়ে কম মূল্যে ওই চাল বিক্রি করে সকল মন্ডপকে ঠকিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদে অনুষ্ঠিত আইন শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সভায় হট্টগোল হয়। সভার সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সভায় কিছুটা চট্টগোল হওয়ার কথা স্বীকার করেন।

জানা গেছে, প্রতিবছর দুর্গা পূঁজা উপলক্ষে সরকার প্রতিটি মন্ডপে চাল বরাদ্দ দেয়। উপজেলা পরিষদ থেকে পূঁজা মন্ডপের তালিকা পাঠানো হয় জেলা প্রশাসনে। সেখান থেকে বরাদ্দকৃত চাল পাঠানো হয় উপজেলা পরিষদে। ওই চাল ভাগাভাগি করে দেয়া হয় প্রতিটি মন্ডপে। পূঁজা উদযাপন কমিটির দেয়া ৭৫টি মন্ডপের তালিকা অনুযায়ী এ বছর গৌরনদী উপজেলার জন্য ৩০ মে. টন চাল বরাদ্দ দেয় জেলা প্রশাসন। ওই চাল পূঁজা উদযাপন কমিটিকে না দিয়ে প্রচলিত দরের চেয়ে কমমূল্যে বাজারে বিক্রি করে প্রতিটি মন্ডপে ৯ হাজার ৩শ’ করে নগদ টাকা দেয়া হয়। এ নিয়ে সেখানে হট্টগোল হয়।

সভায় প্রশ্ন তোলার কথা স্বীকার করে উপজেলা পূঁজা উদযাপন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রনব কুমার বাবু দত্ত বলেন, সরাসরি চাল বরাদ্দ দিলে তারা প্রতিটন ২৪ হাজার টাকা করে বিক্রি করতে পারতেন। কিন্তু তা না করে স্থানীয় সাংসদ অ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস প্রতিটন চাল ২৩ হাজার করে বিক্রি করেছেন। এতে তারা ঠকেছেন। তাই সভায় ইউএনও’কে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেছেন, কমিটির সাথে সমন্বয় না করে এভাবে চাল বিক্রি করা উচিৎ হয়নি। যদি তারাই সব করেন তাহলে পূঁজা উদযাপন কমিটির দরকার কি ? এ কারনে তারা কমিটির সভাপতির উপরা চাপ সৃস্টি করেছেন।

কমিটির সদস্যদের চাপ সৃস্টির কথা স্বীকার করে পূঁজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কালিয়া দমন গুহ বলেন, উপজেলায় বরাদ্দ হওয়া ৩০ মে. টন চাল কমিটিকে না জানিয়ে এমপি সাহেব একাই বিক্রি করে টাকা দিয়েছেন। এতে সবাই ক্ষুব্ধ হয়েছে। এ ব্যাপারে সভাপতি হিসেবে সবাই তার কাছে জবাব চাইছেন। এমনকি উপজেলা আইন শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সভায় ইউএনও’র কাছে প্রশ্ন তুলেছেন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রনব কুমার বাবু দত্ত।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, প্রতিবছর পূঁজা উদযাপন কমিটি চাল বরাদ্দ পেয়ে বিক্রি করে। এবার যাতে ন্যায্য দাম পাওয়া যায়, সেজন্য কমিটির নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে এমপি সাহেব বিষয়টি তদারকী করেছেন। তিনি বলেন, আমার (ইউএনও) স্বাক্ষরে চাল পাশ হলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে এমপি সাহেব সকল উন্নয়ন কাজ তদারকী করেন। এ ব্যাপারে বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনের সাংসদ অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বরাদ্দকৃত চাল বাজার দরে বিক্রি করা হয়েছে।