আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি ॥ ভাঙ্গাগড়া, পাল্টাপাল্টি কমিটি গঠন, গ্রুপিং ও সংঘর্ষের আশংকার কারনে কেন্দ্রিয় বিএনপি বরিশালের আগৈলঝাড়া বিএনপির কার্যক্রম স্থগিত করেছেন। ত্যাগী ও তৃনমুল নেতা কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোস বিরাজ করছে। দলীয়সুএে জানাগেছে, বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বিএনপি নবম জাতীয় সংসদ নির্বচনের পর থেকে তৃ-ধারায় বিভক্ত হয়ে দলীয় কার্যক্রম চালাচ্ছে। ওই সময় কেন্দ্রিয় বিএনপি নেতা ও চারদলীয় সমর্থিত বরিশাল-১ আসনের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার সোবহান সমর্থিত লোকজন নিয়ে উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির বিরুদ্ধে কেন্দ্রিয় অপর বিএপি নেতা আকন কুদ্দুস সমর্থিত নেতা কর্মিরা কোনঠাসা হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শনসহ সংবাদ সম্মেলন করেছিল। পরবর্তীতে ২০০৯ সালের ২৭ নভেম্বর কাউন্সিলের মাধ্যমে আ.লতিফ মোল্লা সভাপতি, আফজাল হোসেন শিকদারকে সাধারণ সম্পাদক ও মাহবুবুল ইসলামকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা হয়।
ওই কমিটি গঠনের সময় আকন কুদ্দুসুর রহমানসহ তার সমর্থিত নেতা কর্মীরা কাউন্সিলে উপস্থিত থাকলেও কৌশল গত ভাবে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে সোবাহান সমর্থিত নেতা কর্মিরা বিজয়ী হয়েছিল বলে কুদ্দুস সমর্থিত নেতা কর্মীরা অভিযোগ করে বিদ্রোহ করেছিলেন। কমিটি গঠনের সময় সংস্কারপন্থীর ধূয়া তুলে সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপনের অনুগতদের রাখা হয়নি। কমিটি গঠনের পর থেকে ইঞ্জিনিয়ার সোবাহান সমর্থিত নেতা কর্মিদের সাথে কুদ্দুস ও স্বপন সমর্থিত নেতা কর্মিদের দুরত্বের সৃষ্টি হয়। এক গ্র“প অন্য গ্র“পের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনার মধ্য দিয়ে চলছে তাদের দিনকাল। একারণে দীর্ঘ দিন দলীয় উল্লেখযোগ্য কোন কর্মসূচিই উপজেলা সদরে পালন হচ্ছেনা। দলের তৃণমুল নেতাকর্মীরা একাধিক গ্র“পে বিভক্ত রয়েছে। এদিকে বিএনপি’র ইউনিয়ন সভাপতি, সম্পাদক সহ নেতা কর্মীদের অভিযোগ ও দলীয় কার্যক্রমে অংশ গ্রহন না করার প্রেক্ষিতে গত ২০ আগষ্ট জেলা (উঃ) বিএনপি সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ এমপি আগৈলঝাড়া উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত করে আবুল হোসেন লাল্টুকে আহ্বায়ক করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হলে অর্ন্তঃজ্বালায় নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বিক্ষোভে ফেটে পরে বিলুপ্ত কমিটির নেতারা। বিক্ষুব্ধ বিলুপ্ত কমিটির নেতারা তাদের কমিটি বহাল রেখে নব গঠিত আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে গত ২৫ আগষ্ট সংবাদ সন্মেলন ও মানব বন্ধন পালন করে। এ ঘটনার এক দিন পর ২৭ আগষ্ট গৌরনদী উপজেলা বিএনপি সভাপতি ও ৯ ম জাতীয় সংসদে ৪ দলীয় জোটের মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার সোবহান তার অনুসারীদের কমিটি বহাল রাখতে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের কাছে জেলা বিএনপি কর্তৃক অবৈধভাবে আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপি কার্যকরি কমিটি বিলুপ্ত করে অসাংগঠনিকভাবে আহ্বায়ক কমিটিগঠনের অভিযোগ করে পূর্বের কমিটি পুণঃ বহাল রাখার আবেদন করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে দলের মহাসচিবের কার্যালয় থেকে যুগ্ম মহাসচিব ও দপ্তরের দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত এ্যাড. রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত ২৮ আগষ্ট জেলা (উঃ) বিএনপি সভাপতি এমপি ফরহাদ ও সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমানকে বিএনপি/ সাধারণ/৭৬/২৫/২০১১ স্মারকে ৭ দিনের মধ্যে আগৈলঝাড়া বিএনপি কমিটি বিলুপ্তর কারন লিখিত প্রতিবেদন আকারে পেশ করতে নির্দেশ দেন। এদিকে সোবহান দলের মহাসচিবের উপর আস্থা রাখতে না পেরে বিলুপ্ত কমিটি টিকিয়ে রাখার জন্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আ. লতিফ মোল্লাকে দিয়ে ২৯ আগষ্ট বরিশাল সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে জেলা সভাপতি, সম্পাদক, আগৈলঝাড়া উপজেলা আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। যার নং-২০৯/১১।
গত ৩ অক্টোবর বরিশাল সিনিয়র সহকারী জজ স্বপন সাহার আদালত আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির উপর জারিকৃত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছেন। এ দিকে দু’গ্র“পের দলীয় কর্মসুচি পালন করতে গেলে সংঘর্ষের আশংকায় গতকাল ৯ অক্টোবর কেন্দ্রিয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীরের নির্দেশ ক্রমে যুগ্ম মহাসচিব ও দপ্তরের দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত এ্যাড. রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিএনপি/বরিশাল (উঃ)৩৫/২০১১ইং স্বারকে দলের যুগ্ম মহাসচিব শাহজাহানকে তদন্ত করে প্রতিবেদনের নির্দেশ দেয়। তদন্ত প্রতিবেদনের রিপোর্ট ও কেন্দ্রিয় বিএনপির সিন্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। দলীয় কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় ত্যাগী ও তৃনমুল নেতা কর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃস্টি হয়েছে।