শারমিন হত্যা মামলার আসামির পক্ষে তদবিরকারীকেও গ্রেফতার করা হবে -বিসিসি মেয়র হিরন

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ নির্মম ভাবে কুপিয়ে হত্যা করা বরিশালের আগৈলঝাড়ার স্কুল শিক্ষিকা ও সেনা সদস্যর স্ত্রী শারমিন আক্তারের শোকার্ত পরিবারের পাশে দাড়িয়েছেন বরিশালের সিটি মেয়র, জেলা প্রশাসকসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

গতকাল শনিবার সকালে নিহত শারমিনের বাবার গৈলার প্রভাতি ফ্লাটের বাসায় শোকার্ত শারমিনের স্বামী ও তার পরিবারকে শান্তনা দেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এডভোকেট শওকত হোসেন হিরন। মেয়রকে কাছে পেয়ে শারমিনের মা কামরুন্নাহার রুমী ও বাবা শাহজাহান সরদার কান্নায় ভেঙ্গে পরেন। মেয়রের কাছে তারা তাদের মেধাবী মেয়ের হত্যাকারীর ফাঁসির দাবি করেন। এসময় শারমিনের স্বামী চট্রগ্রাম ৩৪ এসটি ব্যাটেলিয়ান (এএস) সেনা সদস্য সোহেল তালুকদার বলেন, আমার স্ত্রীকে আবুল উত্যক্ত করত। এ ঘটনায় স্ত্রীকে নিয়ে আমি থানায় জিডি করতে গেলে পুলিশ ওই সময় জিডি নেয়নি। এ নিয়ে ওইসময় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জসিম সরদার ও উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক ইউসুফ মোল্লার উপস্থিতিতে শালিস বৈঠকের আয়োজন করা হয়। শালিস বৈঠকে আবুলকে জুতাপেটা করা হলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে পুনরায় শারমিনকে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করে আসছিলো। শারমিনের স্বামী সোহেল আরো বলেন, পুলিশ যদি তার জিডি নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিত তাহলে আজ হয়তো শারমিনকে হারাতে হতো না। এসময় শারমিনের ছোট বোন আইরিন জাহান ইমু নিহত শারমিনের হাতের লেখা তথ্য সম্বলিত একটি ডায়েরী মেয়র হিরণ ও জেলা প্রশাসক এস.এম আরিফ-উর রহমানকে দেখান। এসয় মেয়র হিরন বলেন, আপনাদের আশ্বস্ত করে বলতে চাই, আপনাদের মেয়েকে আমরা ফেরত দিতে পারবো না। তবে খুনী যে দলেরই হোক আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এসময় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত করে এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। তিনি আরো বলেন, কেউ যদি এই মামলার আসামির পক্ষে তদবির করতে আসে তবে তাকেও গ্রেফতার করার জন্য মেয়র ওসিকে নির্দেশ দেন। নিহতের পরিবারসহ স্থানীয় শতাধিক লোকের উপস্থিতিতে মেয়র হিরন আরো বলেন, এ খুনের পেছনে যদি কোন ইন্ধনদাতা থাকে তার বিরুদ্ধেও আইনী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ওসিকে নির্দেশ দেন। বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম আরিফ-উর রহমান উপস্থিতিদের উদ্দেশ্যে বলেন, শিক্ষিকা শারমিন হত্যাকান্ডের ঘটনা প্রধান মন্ত্রীর দপ্তর থেকে তাকে জানানো হয়েছে এবং মনিটরিং করতে বলা হয়েছে।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় বাস ট্রাক ওয়ানার্স এ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান এএসএম আলি খবির চাঁন, আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর বিশ্বাস, বরিশাল মহানগর আওয়ামীলীগ যুগ্ম আহবায়ক এডভোকেট আফজালুল করিম, এড. একেএম জাহাঙ্গীর হোসেন, মহানগর আওয়ামীলীগ নেতা লস্কর নুরুল হক, বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আনিস উদ্দিন আহমেদ শাহীন, বানারীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক, বরিশাল মেট্রো পলিটন চেম্বার প্রেসিডেন্ট নিজাম উদ্দিন, ডাইরেক্টর আজিজুর রহমান শাহীন, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা রুস্তুম সেরনিয়াবাত, জেলা যুবলীগ নেতা আবু আল হোসেন অরুন, আগৈলঝাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগ আহবায়ক ইউসুফ মোল্লা, আগৈলঝাড়া উপজেলা যুবলীগের সম্পাদক ও ভাইস চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন সরদার, আগৈলঝাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি অশোক কুমার নন্দি উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে কর্মকর্তারা নিহত শারমিনের বাবার বাড়ি দক্ষিন গৈলা গ্রামে গিয়ে শারমিনের কবর জিয়ারত করে মরহুমার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া-মোনাজাত করেন। এদিকে গতকাল শনিবার প্রাথমিক শিক্ষকদের ডাকা কর্মসূচী অব্যাহত ছিলো। সমিতির সভাপতি সোহরাব হোসেন বাবুল জানান, কর্মসূচী মধ্যে আজ ১৬ অক্টোবর সকালে মানববন্ধন ও শোক সভা অনুষ্ঠিত হবে।