আগৈলঝাড়ায় আইন শৃংখলা বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত ॥ শিক্ষিকা শারমিন হত্যাকান্ডের প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে ক্ষোভ

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা আইন শৃংখলা বিষয়ক সভায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অশালিন মন্তব্যের মাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন উপজেলা পরিষদের  ভাইস চেয়ারম্যান জসিম সরদার। গতকাল রবিবার পূর্ব নির্ধারিত উপজেলা মাসিক আইন শৃংখলা সভায় দুপুরে তিনি এ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

আগৈলঝাড়ায় আলোচিত শিক্ষিকা শারমিন হত্যা ঘটনায় শারমিনের পরিবারের অভিযোগ ও বিভিন্ন ব্যক্তির বরাতে দিয়ে গৌরনদী, আগৈলঝাড়া ও জেলা শহর বরিশালের সংবাদ কর্মীরা বিভিন্ন পত্রিকায় আগৈলঝাড়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জসিম সরদারকে নিয়ে যে সংবাদ পরিবেশন করেছে তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে গতকালের আইন শৃংখলা সভায় সাংবাদিকদেও বিরুদ্ধে বিশোধাগার করেন তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর বিশ্বাসের সভাপতিত্বে ওই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা খান। বক্তব্য রাখেন আগৈলঝাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি অশোক কুমার নন্দি, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শেফালী রানী সরকার, মুক্তিযোদ্ধা আঃ রইচ সেরনিয়াবাত, প্রেসক্লাব সভাপতি সরদার হারুন রানা, ইউপি চেয়ারম্যান ইলিয়াস তালুকদার, বিপুল দাস, আবুল হোসেন লাল্টু, গোলাম মোস্তফা সরদার। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন কৃষি কর্মকর্তা রমেন্দ্র নাথ বাড়ৈ, প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শচিন্দ্র নাথ বৈদ্য, উপজেলা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক ইউসুফ মোলা প্রমুখ। সভায় জসিম সরদার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় তার বক্তব্যে বলেন, আগৈলঝাড়ায় ভাড়ায় সাংবাদিক এসে আমার বিরুদ্ধে সংবাদ লেখে। এদের পরিচয়পত্র আছে কিনা তাও আমার জানা নেই। আমি যাদের সাথে বসার প্রশ্নই ওঠেনা তারা সাংবাদিক হওয়ার কারণে তাদের সাথে কথা বলতে হয়, বসতে হয়। ওই সভায় উপস্থিত এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ না করার শর্তে রশিকতা করে প্রশ্নের সুরে বলেন, জসিম সরদারের সাথে সাংবাদিকদের জমি নিয়ে কি বিরোধ আছে? না জসিম সরদার হত্যার পরোক্ষ সহযোগী হিসেবে নিজেকে বাঁচানোর জন্য সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিশোদগার করছেন? এসময় তিনি আরো জানান, জসিম সরদার নিজে জনপ্রতিনিধি হলেও কোনটি বিচারযোগ্য অপরাধ আর কোনটি স্থানীয় বিচার অযোগ্য অপরাধ তা তিনি জানেননা। ওসি শারমিনের সাধারণ ডায়েরী নেয়ার পর জসিম নিজে উদ্ধুদ্ধ তার সহচর আবুলকে বাঁচাতে গৈলায় আবুলের বিরুদ্ধে বিচার করে জুতা পেটা করে। এরপর পুলিশের ধাওয়ার কারনে দুই মাস আত্মগোপনে থাকে আবুল। জসিমের সহচর হওয়ায় আবুলকে এলাকায় আনে জসিম। শারমিন হত্যার এক সপ্তাহ আগেও জসিম আবুলকে তার নিজের লোক হিসেবে ৫’শ টাকা দিয়ে সহায়তা করে। জুতা পেটার কারনে ক্ষিপ্ত হয়ে আবুল শারমিনকে হত্যা করেছে বলে বিভিন্ন আইন সংস্থার কাছে জবান বন্দি দিয়েছে। অথচ শারমিনের পরিবার থেকে জসিমের কাছে কোন বিচারই চাওয়া হয়নি বলে শারমিনের পরিবার জানায়। জসিম বিচার করার ফলে পুলিশ আর জিডি নিয়ে তেমন ঘাটাঘাটি করেনি। শারমিনের পরিবারের আরো অভিযোগ একাধিকবার নিহত শারমিনকে তার কর্মস্থলের সাবেক প্রধান শিক্ষক আ.মতিনের ফোনে জসিমের অফিসে আসতে বলেছিল। তবে কেন আসতে বলেছিল শারমিন তা জানতে চাইলে কোন কারন বলতে পারেননি জসিম। বিস্বস্ত সূত্রে জানাগেছে, নিহত শারমিনের ছোট বোন আইরিন জাহান ইমুর স্বামী জসিমের মামাতো ভাই। তার মাধ্যমে শারমিনের পরিবারকে চাপের মুখে রাখতে চাইছে জসিম। সেখান থেকে আশাবাদি হওয়ার পরই জসিম সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিশোদগার করতে সাহস পেয়েছেন। এদিকে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে জসিমের আক্রমনাত্মক বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন স্বয়ং উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা খান। হট্রগোলের কারনে পূর্নাঙ্গ সভা না করতে পেরে তরিঘরি আইন শৃংখলার অবনতি বা সন্তোষ প্রকাশ না করেই শেষ করতে হয়েছে।