আগৈলঝাড়ায় নাতির হাতে দাদি খুন – “বৃদ্ধ তোতা মিয়া পাঁচ দিনেও জানেন না তার স্ত্রী বেঁচে নেই”

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বেডে শুয়ে অসহ্য যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার পশ্চিম ছয়গ্রামের বৃদ্ধ আলী আলম ওরফে তোতা হাওলাদার (৭০)। তার স্ত্রী নুরজাহান বেগম (৬০) খুন হওয়ার ৫দিন পরেও তিনি (বৃদ্ধ তোতা) জানেন না তার সহধর্মীনি বেঁচে নেই। তাকে জানানো হয়েছে নুরজাহান বেগমকে একই হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে খুনী জাকিরুল হাওলাদার গ্রেফতার হওয়ার পর মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে খুনীকে মানসিক ভারসাম্যহীন (পাগল) আখ্যায়িত করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। নিহতের সিংঙ্গাপুর প্রবাসী পুত্র রোকনউজ্জামান হাওলাদার জানান, মায়ের খুনের খবর পেয়ে তিনি গত ২২ অক্টোবর সিংঙ্গাপুর থেকে দেশে এসেছেন। ২১ অক্টোবর সকালে তার মা খুন হন। তিনি আরো জানান, তার মায়ের মৃত্যুর মাত্র আধাঘন্টা আগেও মোবাইল ফোনে তার সাথে কথা হয়। তার মা তখন বলেছিলো, বাবা তুই তাড়াতাড়ি দেশে ফিরে আয়। একমাস পরে দেশে ফেরার কথাছিলো রোকনউজ্জামানের। গত দু’বছর পূর্বে রোকনউজ্জামান সিংঙ্গাপুরে পাড়ি জমিয়েছিলেন। কর্মস্থলে বসে মায়ের খুন হওয়ার কথা শুনে তড়িঘড়ি করে সে দেশে ফিরে আসে। এসব কথাগুলো তিনি তার বাবার অগোচরে জানিয়েছেন।  

হাসপাতালের বেডে শষ্যাশয়ী বৃদ্ধ তোতা হাওলাদার জানান, ঘটনারদিন গত ২১ অক্টোবর সকাল এগারোটার দিকে তার নাতি জাকিরুল কোনকিছু না বলেই তাদের একটি ছোট্ট চারা গাব গাছ কাটা শুরু করে। এসময় তাকে বৃদ্ধা নরজাহান বাঁধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জাকিরুল ধারালো দা দিয়ে নুরজাহানকে এলোপাথারি কোপাতে থাকে। এসময় বৃদ্ধার ডাকচিৎকারে তোতা হাওলাদার এগিয়ে আসলে জাকিরুল তাকেও কুপিয়ে জখম করে। তাদের ডাকচিৎকারে এলাকাবাসি এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে বরিশাল হাসপাতালে ভর্তি করে।

সূত্রমতে, হাসপাতালে নেয়ার পথে নুরজাহান বেগম মারা যায়। একইদিন খুনী জাকিরুলকে এলাকাবাসি আটক করে থানা পুলিশের কাছে সোর্পদ করে। এ ঘটনায় গত ২২ অক্টোবর নিহতের পুত্র অহেদুজ্জামান হাওলাদার বাদি হয়ে আগৈলঝাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গ্রেফতারের পর খুনী জাকিরুল পুলিশের কাছে অকপটে খুনের কথা স্বীকার করে।

নিহতের পুত্র রোকনউজ্জামান অভিযোগ করেন, হত্যা মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য খুনীকে পাগল আখ্যায়িত করে এলাকায় নানা অপপ্রচার রটিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি তার মায়ের হত্যাকারীর ফাঁসির দাবি করেছেন।