গৌরনদীর এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পুরনে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার হাইস্কুল গুলোতে এবারের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পুরনে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে । বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের ধার্যকৃত ফির ৩/৪ গুন বেশী ফি আদায় করা হচ্ছে বলে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন। দুই বিষয়ের অভিরিক্ত বিষয়ে ফেল করলে ধার্যকৃত অর্থ আরো বহুগুনে বেড়ে যায়।

অভিভাবক, শিক্ষার্থী, সংশ্লিষ্ট স্কুল ও শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের অধীনে গৌরনদী উপজেলার ২৫ টি হাইস্কুলের প্রায় ২ হাজা ৬ শত ৫০ জন এসএসসি পরীক্ষার্থী রয়েছে। গত ২ নভেম্বর থেকে ফরম পুরন শুরু করা হয়। আগামি ১৪ নভেম্বর  ফরম পুরনের শেষ দিন ধার্য করা  হয়েছে। বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের একটি সূত্র জানান, বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবারের এসএসসি ফরম পুরনে নিয়মিত মানবিক, ব্যাবসায় শিক্ষা পরীক্ষার্থীর ফরম পরনে ৯ শত, বিজ্ঞান বিভাগে ৯শত ৯০ টাকা ধার্য করা হয়। এ ছাড়া অনিয়মিত পরীক্ষার্থীদের জন্য মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ১ হাজার, বিজ্ঞানে ১হাজার ৯০টাকা নির্ধারন করা হয়। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ এবারের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পুরনে স্কুলগুলোতে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হচ্ছে। বোর্ডের ফরম পুরনে কোন শ্রেনী পার্থক্য (কল) না থাকলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রেনী পার্থক্য অনুযায়ী ফরম পুরনের ফি আদায় করা হয়।

অভিভাবক উপজেলার খাঞ্জাপুর গ্রামের মো. কামাল হোসেন, নলচিড়া গ্রামের মো. খবির আলী, উত্তর চাদর্শী গ্রামের মো. লোকমান হোসেনসহ অনেকেই অভিযোগ করেন,  বাছনিক পরীক্ষায় প্রথম শ্রেনীতে উত্তীর্ন (ফাষ্ট কল) মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষায় ২ হাজার ৫ শত ৮০ টাকা, বিজ্ঞানে ২ হাজার ৬শত ৭০ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেনীতে উত্তির্ন মানবিক, ব্যাবসায় শিক্ষা ২ হাজার ৭শত ৮০টাকা, বিজ্ঞানে ২ হাজার ৮শত ৭০ টাকা ও তৃতীয় শ্রেনীতে উত্তির্ন মানবিক, ব্যাবসায় শিক্ষা ২ হাজার ৯শত ৮০ টাকা বিজ্ঞানে ২ হাজার ৯ শত ৭০ টাকা করে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরম পুরনে আদায় করা হচ্ছে। এ ছাড়া কোন কলেই উত্তির্ন হয়নি এরুপ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এর সাথে ফেলকৃত  প্রতিটি বিষয়ে আরো ২শত টাকা অতিরিক্ত ফি নেয়া হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে গৌরনদী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জনৈক নেতা এর সত্যতা স্বীকার করে জানান, এবারে এসএসসি ফরম পুরন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহনে গৌরনদী উপজেলার ২৫ টি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকদের এক  সভা গত ২৩ অক্টোবর গৌরনদী গালর্স হাইস্কুল এন্ড কলেজে অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক উক্ত ফি আদায় করা হচ্ছে।

গৌরনদী উপজেলা সদরের অভিভাবক দিন মজুর হারুন খান অভিযোগ করেন, তার পুত্র বাছনিক পরীক্ষায় দ্বিতীয় কলে নির্বাচিত হন। ২ হাজার ৬ শত টাকা দিয়ে তার পক্ষে ফরম পুরন সম্ভব নয়। তাই ফরম পুরনের অর্থ সংগ্রহ করতে অন্যের কাছে ধর্না দিচ্ছে। এখনো তার পুত্রের ফরম পুরন করতে পারেনি বলে জানান। অতিরিক্ত ফি আদায়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিভাবক মো. সরোয়ার হোসেন, মো. নজরুল ইসলাম, আ. মালেক বলেন, আমরা এমনিতেই ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলের বেতনসহ সকল পাওয়া পরিশোধ করেছি। তারপরে ফরম পুরনে এত অতিরিক্ত ফি আদায় জুলুম করার সামিল। গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিমল কৃঞ্চ সিকদার, খাঞ্জাপুর পাঙ্গাশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফরিদ উদ্দিন, ধানডোবা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মানিক তালুকদার, পালরদী মডেল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু জাফর সিকদার, অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শিক্ষকদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ ফি নেয়া হচ্ছে।