ঝালকাঠিতে এক যুবতীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন – শোকে পিতার মৃত্যু

আহমেদ আবু জাফর, ঝালকাঠি ॥ ঝালকাঠিতে এক যুবতীকে জঙ্গলের মধ্যে গলায় রশি দিয়ে হাত পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ঘটনার বর্ননা শুনে কেউই স্তম্ভিত না হয়ে পারেনি। এলাকার লোকজন সজ্ঞাহীন অবস্থায় ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে যুবতীর চিকিৎসা করে সুস্থ করলেও মেয়েকে নির্যাতনের বিচার না পাওয়ার শোকে অসুস্থ বাবা রুস্তম আলী গতকাল মারাগেছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের মহদীপুর গ্রামে। জানাগছে, মহদিপুর গ্রামের রুস্তম আলীর মেয়ে ছাহেরা বেগমের সাথে একই গ্রামের ইউনুচ হওলাদারের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর যৌতুকের দাবীতে ছাহেরাকে দৈহিক নির্যাতন করে তার শিশু কন্যাকে রেখে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেয়।

এ ঘটনায় ঝালকাঠি আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়। সে  কারনে তারা ক্ষিপ্ত  হয়ে ছাহেরাকে মামলা তুলে নিতে হুমকী প্রদান করে। প্রানভয়ে সে ঝালকাঠি শহরে ঝি”এর কাজ করত  বলে সে জানায়। গত ১১ নভেম্বর সন্ধ্যায় বিভিন্ন বাসা থেকে পাওয়া  কুরবানীর মাংস বাবার জন্য বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় মহদীপুর গ্রামের রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে মৃধা বাড়ির জঙ্গলে দেবর জাকির, রুহুল আমিন, জসিম ছাহেরাকে হাত পা বেধে নির্মম দৈহিক নির্যাতন চালায়।

এ সময় তার যৌনাংগে লাথি ও কামরিয়ে সংজ্ঞাহীন করে ফেলে। এরপর বিবস্ত্র করে গলায়  রশি দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাখে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে  এলাকার চৌকিদার ও  স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

৭দিন যাবৎ ঝালকাঠি হাসপাতালে চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে সে ঝালকাঠি থানায় তার স্বামী ও ৩ সহযোগীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঝালকাঠি থানার ওসি ঘটনা তদন্তের জন্য থানার উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়। তদন্তের পর এখনও পুলিশ মামলাটি এজাহারভুক্ত করেনি বলে ছাহেরা জানায়। ঝালকাঠি সদর থানার উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, অভিযোগের ব্যাপারে প্রাথমিক একটি জিডি করা হয়েছে।