গলাচিপা-দশমিনা সংযোগ সেতুর নির্মাণ কাজ ১০ বছর ধরে বন্ধ

বরিশাল প্রতিনিধি ॥ রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে মাত্র একটি ব্রিজের অভাবে আজও গলাচিপা উপজেলার সঙ্গে বাউফল ও দশমিনা উপজেলার সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ২০০০ সালে এটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। আলীপুর নদীর এক পাড়ে গাইডওয়ালসহ পাঁচটি পিলার এবং অপর পাড়ে ৪০ ফুট ¯¬াব নির্মাণের পরই এর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য সরকার পরিবর্তন, চাঁদাবাজি ও প্রকল্প ডিজাইনের ত্রুটিকে দায়ী করেছেন স্থানীয়রা। ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় জেলার তিন উপজেলার ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। সূত্র জানায়, গলাচিপা, দশমিনা ও বাউফলের ১০ লাখ মানুষের জেলা সদরে যোগাযোগসহ অভ্যন্তরীণ যাতায়াতের সুবিধার্থে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আলীপুর নদীর ওপর ‘আলীপুর ব্রিজ’ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০০০ সালের ৪ অক্টোবর তৎকালীন বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী আখম জাহাঙ্গীর হোসাইন এর নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের গুরুত্বপূর্ণ ফিডার ও গ্রামীণ সড়কে বৃহৎ ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ১১৫ মিটার গার্ডার ব্রিজটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পরই গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পটির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয় সূত্র জানায়, এ সময় একটি রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতা ঠিকাদারসহ সংশি¬ষ্টদের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। চাঁদাবাজরা এ ক্ষেত্রে চরমপন্থি সর্বহারা পার্টির নাম ব্যবহার করে। কিন্তু সংশি¬ষ্টরা চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় শুরু হয় জোরজুলুম। একপর্যায়ে তারা বেশকিছু নির্মাণসামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় তিন উপজেলার মানুষ যোগাযোগের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। প্রতিদিন হাজারো মানুষকে ঝুঁকি নিয়ে খেয়ানৌকায় নদী পার হতে হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে নদী রুদ্ররূপ ধারণ করলে খেয়ানৌকায় পারাপারও বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় দুর্ভোগ আরও বাড়ে। জানা গেছে, ২০১০ সালে ব্রিজটি নির্মাণের ফের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ জন্য নতুন প্রাক্কলন তৈরি করা হয়েছে। এতে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি টাকারও বেশি। কিন্তু অর্থের সংস্থান না থাকায় কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে পটুয়াখালী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ কামাল হোসেন জানান, নতুন ডিজাইন ও প্রাক্কলন তৈরি করে অনুমোদনের জন্য ঢাকায় সদর দফতরে পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ এবং অনুমোদন পাওয়া গেলে নির্মাণ কাজ শুরু হবে।