শাহীন হাসান ॥ কেঁচো খুজতে গিয়ে সাপ বেরিয়েছে। ৩০ বোতল ফেন্সিডিল সহ ফকির বাড়ি রোড থেকে ৩ জনকে প্রথমে আটকের পর র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে নগরীর কুখ্যাত ফেন্সিডিল সম্রাটের আস্তানার চাঞ্চল্যকর তথ্য। রাত ১০টার দিকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, র্যাবের মেজর রাশেদ ও এএসপি মোর্শেদের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয় মাদক সম্রাট খ্যাত ভাটিখানা মন্দির সংলগ্ন পীযুষ কান্তি দাসের বাসভবনে। ঘরের বাস দিকের শেষ মাথার রুমটিতে চালানো হয় চিরুনি তল্লাশি। সন্দেহজনক মাটি খুড়তেই বেরিয়ে আসে ফেন্সিডিলের গোডাউন। মাটির নেচে ড্রাম পুঁতে ফেন্সিডিল মজুদের দৃশ্য সত্যিই অকল্পনীয়। খুড়তে খুড়তে একে একে ফেন্সিডিলের সংখ্যা হয়ে দাঁড়ায় ১৫শ’ ৬৪ বোতল। উদ্ধারের পর র্যাবের মেজর রাশেদ, এএসপি মোর্শেদ ও ডিএডি হাবিব সহ কয়েক র্যাব সদস্য ফেন্সিডিলগুলো বস্তাভর্তি করলে বস্তা সংখ্যা হয় মোট ৮টি। যার মধ্যে ২টি বড় আকৃতির ড্রামও রয়েছে। উদ্ধার তৎপরতা শেষ করার পূর্বেই গ্রেফতার করা হয় ফেন্সি সম্রাট পীযুষ কান্তি দাসের স্ত্রী সহ তার ভাই দেবা কান্তি দাসের স্ত্রী ও প্রশ্রয়দাতা মাকে। দৃশ্যটি এক নজর দেখার জন্য ভাটিখানা এলাকায় শত শত মানুষের ভিড় পড়ে। উপস্থিত থাকা স্থানীয় কাউন্সিলর বাদশাহ জানান, ওরা অনেক আগ থেকেই ফেন্সি ব্যবসা করতো। কিন্তু প্রমাণের অভাবে ওরা সব সময়ই ধরা ছোঁয়ার বাইরে ছিল। ঘটনায় অনেক আগেই মাদক সম্রাট দেবা ও পীযুষ গা-ঢাকা দেয়। পীযুষ একটি হত্যা মামলার সাথেও জড়িত। তাছাড়া দেবা-পীযুষের বিরুদ্ধে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকে মারধরের ঘটনায় কাউনিয়া থানায় একটি মামলাও রয়েছে। এর আগে ফকির বাড়ি রোডের জহুরা ম্যানশন থেকে ৩০ বোতল ফেন্সিডিল সহ গৌতম দাস (২৭), আরিফুর রহমান রানা (২২) ও সমর কুমার নামে ৩ জনকে আটক করে র্যাব সদস্যরা। সে সময় তাদের কাছ থেকে ফেন্সিডিল বিক্রির নগদ ৪ হাজার ৫শ’ টাকাও উদ্ধার করা হয়। এরা প্রত্যেকেই ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী। তাদের দেয়া স্বীকারোক্তিতেই ভাটিখানা এলাকার পীযুষ-দেবার বাস ভবনে অভিযান চালিয়ে র্যাব-সদস্যরা এই অসাধ্য সাধন করে।
এ বিষয়ে র্যাবের উপ-পরিচালক মেজর রাশেদুজ্জামান জানান, আমাদের একটি চৌকস দল প্রথমে ফেন্সিডিল সহ ৩ জনকে আটক করে। পরে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে জানতে পারি পীযুষ-দেবার ফেন্সিডিলের খবর। সে মোতাবেক অভিযান চালানো হয়েছে। একই সাথে তিনি উল্লেখ করেন, কোন মাদক ব্যবসায়ীকে ছাড় দেয়া হবে না। র্যাব নিষ্ঠার সাথে তাদের দায়িত্ব পালন করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে।