গৌরনদীতে কলেজ ছাত্রীকে নগ্ন ছবির ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে চাঁদা দাবি ॥ দু’জন গ্রেফতার

গৌরনদী সংবাদদাতা ॥ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বেজহার গ্রামের প্রবাসী স্বদেশ মন্ডলের কন্যা ও মাহিলাড়া ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেনীর ছাত্রী বৈশাখী মন্ডলের ছবি কৌশলে মোবাইলে ক্যামেরা বন্দি করেছে পশ্চিম বেজহার গ্রামের দু’বখাটে যুবক। পরে তারা ওই ছবি দিয়ে কম্পিউটরের মাধ্যমে নগ্ন ছবি তৈরী করেছে। ওই নগ্ন ছবি কলেজ ছাত্রী ও তার মাকে দেখিয়ে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে। দাবিকৃত চাঁদা না দিলে ওই নগ্ন ছবি ইন্টারনেটের মাধ্যেমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনায় বুধবার কলেজ ছাত্রীর মা বাদি হয়ে গৌরনদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওইদিন সন্ধ্যায় দু’বখাটেকে গ্রেফতার করেছে।

মামলার বিবরন ও  বাদির অভিযোগে জানা গেছে, মাহিলাড়া ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেনীর ছাত্রী বৈশাখী মন্ডল কলেজে আসা যাওয়ার পথে কৌশলে মোবাইলে ছবি তুলে নানা ধরনের কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো পশ্চিম বেজহার গ্রামের ইউসুফ আলী সরদারের বখাটে পুত্র এস.এম তারেক (২০) ও শামছুল হক সরদারের পুত্র সোহাগ সরদার (১৯)।

কলেজ ছাত্রীর মা ঝুমা মন্ডল (৪০) জানান, গত ৪ ডিসেম্বর তার মেয়ে বৈশাখী কলেজে প্রাইভেট পড়তে আসলে কলেজের উত্তর পাশে পৌঁছলে বখাটে তারেক ও সোহাগ কৌশলে মোবাইল ক্যামেরার মাধ্যমে বৈশাখীর ছবি তোলে। গত মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় পুনরায় প্রাইভেট পড়তে কলেজে আসার সময় কলেজের সন্নিকটে শ্যামা মন্দিরের কাছে পৌঁছলে বখাটেরা তার কন্যার (বৈশাখীর) পথরোধ করে নানা ধরনের উত্যক্ত শুরু করে। একপর্যায়ে মোবাইল সেটে থাকা কলেজ ছাত্রীকে নিয়ে কৃত্রিম নগ্ন ছবি প্রদর্শন করে বখাটেরা তাকে কু-প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হলে এ ছবি ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়।

ঝুমা মন্ডল আরো জানান, ওইদিন রাতে বখাটে তারেক ও সোহাগ তাদের বাড়িতে গিয়ে মোবাইল সেট থেকে বৈশাখীর ছবি বের করে কম্পিউটারের মাধ্যমে তৈরী করা নগ্ন ছবি প্রদর্শন করে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। না দিলে ওই ছবি ইন্টারনেটের মাধ্যেমে প্রকাশ করার হুমকি দেয়া হয়। তিনি নিরুপায় হয়ে ওই রাতেই বিষয়টি বখাটেদের অভিভাবকদের কাছে জানায়।

অভিভাবকরা ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তাদের বাড়াবাড়ি না করার জন্য শাসিয়ে দেয়। উপায়অন্তুর না পেয়ে বুধবার দুপুরে কলেজ ছাত্রীর মা ঝুমা মন্ডল বাদি হয়ে গৌরনদী থানায় বখাটে তারেক ও সোহাগকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম ঘটনার মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মামলা দায়েরের পর পুলিশ ঝটিকা অভিযান চালিয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় মামলার আসামি তারেক ও সোহাগকে গ্রেফতার করে।