রাষ্ট্রীয় মর্যাদা চাই – বীর মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেন

গৌরনদী ডটকমঃ স্বাধীনতা যুদ্ধের ৪০ বছর পেরিয়ে গেলেও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়ে আজো স্বীকৃতি মেলেনি অস্ত্রহাতে রনাঙ্গন কাঁপানো বীর মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম Freedom Fighter Moazzemহোসেনের। মৃত্যুর আগেকি তার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করা হবে এ নিয়ে তিনি রয়েছেন মহাদুশ্চিন্তায়। বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের চন্দ্রহার গ্রামের মৃত হামিজ উদ্দিন খলিফার পুত্র কে.এম মোয়াজ্জেম হোসেন (৬০) বলেন, আমি রাষ্ট্রীয় সম্মানি ভাতা চাইনা। মৃত্যুর পর শুধু রাষ্ট্রীয় মর্যাদা চাই। আর এ মর্যাদাটুকু পাবার জন্য আমার মৃত্যুর পূর্বে যদি মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম দেখে যেতে পারতাম, তাহলে মরেও শান্তি পেতাম।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সারাদিয়ে তরুণ বয়সেই মোয়াজ্জেম হোসেন যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরেছিলেন। ভারত থেকে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে ৯ নং সেক্টরের গ্র“প কমান্ডার নিজাম উদ্দিন আকনের অধীনে যুদ্ধ ক্ষেত্রে তিনি বীরত্বের ভূমিকা রেখেছিলেন। নিজের জীবন বাজি রেখে রনাঙ্গনে সাহসী ভূমিকা পালন করে ছিনিয়ে এনেছিলেন সবুজে রক্তে লাল বিজয় পতাকা। স্বাধীনতার ৪০ বছর পরে আজও সেই সাহসী মুক্তিযোদ্ধার ভাগ্যে জোটেনি স্বীকৃতি। আজো তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভূক্ত হতে পারেননি। তালিকা ভুক্তির জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের কাছে একাধিকবার আবেদনও করেছিলেন। ২০০৬ সনের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার যাচাই বাছাই কমিটি কর্তৃক প্রকাশিত তালিকায় তার নাম থাকা সত্বেও রহস্যজনক কারনে গেজেটে তার নাম প্রকাশিত হয়নি।

এ ব্যাপারে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবেদন করা হলে তৎকালীন সময়ে (২০০৭ সনের ২৩ সেপ্টেম্বর) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব (প্রশাসন) উম্মুল হাসনা’র স্বাক্ষরিত এক স্মারকপত্রে মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেনের কাগজপত্র মন্ত্রনালয়ে প্রেরনের জন্য অনুরোধ করা হয়। সেমতে সকল কাগজপত্র মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হলেও তা আর আলোর মুখ দেখেনি। আক্ষেপ করে মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সেইদিনের (১৯৭১ সনের) রাজাকার ও লুটারেরা মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ঠাঁই করে নিয়েছে। অথচ আমি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যথেষ্ট প্রমানাদি ও কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও তালিকাভূক্তি হতে পারিনি। আমার মতো অসংখ্য প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারাই এখনো তালিকাভূক্ত হতে পারেননি। তিনি আরো বলেন, আমি রাষ্ট্রীয় সম্মানি ভাতা চাইনা। মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা চাই। আর এ মর্যাদাটুকু পাবার জন্য আমার মৃত্যুর পূর্বে যদি মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম দেখে যেতে পারতাম, তাহলে মরেও শান্তি পেতাম। তিনি সঠিক যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে তার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অর্ন্তভুক্তি করার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।