আগৈলঝাড়ার রমনীকান্তর পাঠশালা

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বর্তমান ডিজিটাল যুগে পাঠশালার পাঠদান চিন্তা করা না গেলেও বাস্তবে বরিশালের আগৈলঝাড়ার প্রত্যন্ত রমনীকান্তঅঞ্চলে এমনি একটি পাঠশালায় পাঠদান করানো হচ্ছে। উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রাংতা গ্রামের রাখাল রায়ের ছেলে রমনীকান্ত বেপারী (৫৫) সংসারে অভাব অনটন থাকলেও সমাজের অসহায় শিশুদের শিক্ষা দানের লক্ষে গত ৪ বছর ধরে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল রাংতা  গ্রামের রাস্তার পাশে অবস্থিত রাংতা দুর্গা মন্দির ঘড়ের সামনের (আরচালা) একটি পাঠশালা প্রতিষ্ঠা করেন। রমনীকান্ত বেপারী উচ্চশিক্ষিত না হয়েও সমাজের দরিদ্র ও অসহায় শিশুদের জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছেন।

পাঠশালায় বর্তমান প্রজন্মের ৩ থেকে ৭ বছর বয়সের ৩৫ জন শিশুকে পাঠদান দেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে ১ টা পর্যন্ত এখানে হাতেক্ষরি থেকে প্রথম শ্রেণী পর্যন্ত শিশুদের পড়ালেখা করানো হয়। পাঠশালা প্রতিষ্ঠার পর থেকে এলাকার শিশুদের শিক্ষা দানে নিরলস পরিশ্রমের ফসল হিসেবে পাঠশালাটি আজ এলাকাবাসীর স্বপ্ন পূরণে সার্থক হয়েছে। এলাকার দরিদ্র, অসহায়, অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত, অভিভাবকদের অনুরোধে তাদের ছেলে-মেয়ে, যাদের স্কুলে ভর্তির বয়স এখনও হয়ে ওঠেনি তাদের রমনীকান্ত বেপারীর পাঠশালায় লেখাপড়া করানো হয়। সভ্যতার ক্রমবিকাশে বর্তমান শিশুরা পাঠশালা কি জিনিস বা সেখানে কি হয় তাদের ধারণা নেই। পাঠশালাটিতে শিশুদের বছরে দু’বার পরীক্ষা নেয়া হয়।

শিক্ষক রমনীকান্ত বেপারী জানান, তিনি সল্প শিক্ষিত হলেও শিক্ষার প্রসার বিস্তারের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তার এই পাঠশালায় শিশুদের অভিভাবকরা নুন্যতম সম্মানী হিসেবে কিছু  টাকা দেন। ক্লাশ শুরুর পূর্বে জাতীয় সংগীতও পরিবেশন করা হয় এই পাঠশালায়। ওই এলাকায় শিশু ছাত্র-ছাত্রী ও তার অভিভাবকদের কাছে রমনীকান্ত বেপারী একটি প্রিয়মুখ। পাঠশালার মাধ্যমে তার পরিচিতি রাংতা গ্রাম সহ আশপাশের দু’চার গ্রামের মানুষের কাছে নিবেদিত মুখ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। রমনীকান্ত বেপারীর প্রত্যাশা পাঠশালায় শিক্ষা দানের মাধ্যমে মৃত্যুর পড়েও যেন মানুষ তাকে স্মরণ করে।