আর্কাইভ

ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভারতের সাবেক তারকারা ক্ষুব্ধ

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই টেস্টে ভারতের বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইন আপের চূড়ান্ত ব্যর্থতার পর ভারতের সাবেক ক্রিকেটাররা তীব্র সমালোচানা করেছেন। তাদের মতে দলে এখন তরুনদের সুযোগ দেবার সময় এসেছে।

গত বছর ইংল্যন্ডের মাটিতে চারটি টেস্টে পরাজয়সহ ভারত এই নিয়ে পরপর ছয়টি টেস্টে বিদেশের মাটিতে পরাজয়ের তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জণ করল। গত শুক্রবার সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে তারা স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার কাছে এক ইনিংস ও ৬৮ রানে পরাজিত হওয়ায় চার ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে গেল। শচিন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড়, ভেঙ্কটসাই লক্ষণ, ভিরেন্দ্র শেবাগের মত রান মেশিন দলে থাকা সত্বেও ভঙ্গুর পারফরমেন্স উভয় টেস্টেই দলের ব্যর্থতার মূল কারণ। চার ইনিংসের মধ্যে তিনটি ইনিংসে সফরকারীদের রান সংখ্যা যথাক্রমে ২৮২, ১৬৯ এবং ১৯১। সিডনিতে দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের ব্যাট থেকে আসে ৪০০ রান।

ভারতের এই ব্যাটিং ব্যর্থতা সম্পর্কে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক ইয়ান চ্যাপেল পত্রিকায় কলামে লিখেছেন, গত কয়েক বছর ধরে ভারত সংক্ষিপ্ত তালিকার নির্বাচন নীতি নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু এখন সময় এসেছে ব্যাটিং লাইন আক্ষেপ তরুনদের প্রাধান্য দেবার। বিদেশের মাটিতে পরপর ছয়টি পরাজয় বোধকরি নির্বাচকদের ভুল স্বীকার করতে সহযোগিতা করবে। ভুল থেকে শিক্ষা নেবার বিষয়টি খেলারই একটি অংশ। কিন্তু শচিন টেন্ডুলকারসহ ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা অনবরত একই ভুল করে যাচ্ছে। টেস্ট ক্রিকেটের বর্তমান সময়ে দুইজন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ব্যাটসম্যান দ্রাবিড় এবং টেন্ডুলকার খুব শিগগিরই ৩৯ এ পা রাখবেন। অন্যদিকে লক্ষনের বয়স হবে ৩৭।
চ্যাপেলের মতে, দলের এই হতাশাজনক পরিস্থিতিতে নির্বাচকদের সামনে সুযোগ এসেছে নতুনদের পরখ করে দেখার। তরুণ খেলোয়াড়রাও নিজেদেরে প্রমাণের একটা ক্ষেত্র খুঁজে পাবে। বিশেষ করে এই মুহূর্তে তরুণদের সামনে হারানোর কিছু নেই। সিনিয়ররা যেখানে অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমনকে রুখতে পারছে না সেখানে হ’য়তোবা তরুন খেলোয়াড়রা ভারতের ভাগ্যকে পরিবর্তনের প্রয়াস তৈরী করতে পারবে। গত ১০ মাস যাবত শততম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থাকা টেন্ডুলকার এখন পর্যন্ত দুই টেস্টে ২২৬ রান করে করে ভারতের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এর মধ্যে শুক্রবার দ্বিতীয় ইনিংসে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৮০ রান।
এদিকে সাবেক অধিনায়ক কপিল দেব বলেছেন টেস্ট দলে কারো জন্যই স্থানটা স্থায়ী নয়। তিনি বলেন, ভারতের ব্যাটিং লাইন আপটা কাগজে কলমে শক্তিশালী হতে পারে কিন্তু আসলেই সেটি সেরা কিনা সেটা নির্ভর করবে নির্দিষ্ঠ একটি দিনে তারা দলকে কি দিতে পারছে। অবসরের বিষয়টি একজন খেলোয়াড়ের জন্য অবশ্যই বোধগম্য হওয়া উচিৎ। কিন্তু তুমি যদি পারফর্মই না কর এবং দল যদি না জিতে তাহলে তোমার পূর্ববর্তী কৃতিত্ব তোমাকে পুর্নজন্ম দিবে না।
দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়াতে ভারতের সাবেক অধিনায়ক দিলিপ ভেঙ্কসরকার বলেছেন,  ভারতীয় ক্রিকেটের এখন সবচেয়ে সঙ্কটময় বিষয় হচ্ছে কোন খেলোয়াড়ই বুঝতে পারছে না কিভাবে বর্তমান পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে হবে। মূল বিষয়টি হচ্ছে আমাদের দলে এমন কোন নতুন চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড় নেই যে কিনা পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবে। আমরা হয়তোবা আমাদের সেরা সময়টা পার করে এসেছি। দুই দশকেরও বেশী সময় ধরে টেন্ডুলকারের উপর নির্ভরশীলতা আমাদের দৈনতার বহিঃপ্রকাশ।

সাবেক ব্যাটিং জিনিয়াস সুনীল গাভাস্কার দলের এই চরম ব্যর্থতার পিছনে অনুশীলনের অভাবকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, পুরো বিশ্বের মতই বড়দিন অস্ট্রেলিয়াও বড় করেই পালন করা হয়। সেই উৎসবের মধ্যেও অস্ট্রেলিয়ানরা যদি নিজেদের পারফরমেন্স ধরে রাখতে পারে তবে আমাদের খেলোয়াড়দের এই ব্যর্থতা কেন। তারা কেন সঠিকভাবে অনুশীলন করেনি। তারা কি নৈস্বর্গিক দৃশ্য দেখতে গেছে নাকি ক্রিকেট খেলতে গেছে।
আজকের বাংলা

আরও পড়ুন

Back to top button