তুচ্ছ ঘটনায় আড়ৎদার ও শ্রমিক সংঘর্ষে রনক্ষেত্র ভাটার খাল

শাহীন হাসান, বরিশাল ॥ অসাবধানতা বসত শ্রমিক মোস্তফা মিয়ার ভ্যানের চাক্কা গায় লাগাকে কেন্দ্র করে রনক্ষেত্রে পরিনত হয়েছে নগরীর ভাটার খাল এলাকা। প্রায় আধ ঘন্টা যাবৎ এ সময় আড়ৎদার ও ঘাট শ্রমিকদের মধ্যে হামলা ধাওয়া-পান্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে মহিলা সহ আহত হয়েছে ৭জন। ঘটনান্থল থেকে থানা পুলিশ আটক করেছে ১জনকে। ঘটনার পরপরি কোতয়ালি থানায় ১কোটি লুট-পাট মামলা দায়ের করে আড়ৎদাররা ঘোষনা দিয়েছে যদি পুলিশ এ ঘটনায় ব্যবস্থা গ্রহন না করে তবে দক্ষিনাঞ্চলে কাচা বাজার বন্ধ করে দেয়া হবে। তকে এ ঘটনার জন্য শ্রমিকদের অতিরিক্ত বাড়াবাড়িকেই দায়ী করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

জানাগেছে, গতকাল সকাল ১১টায় ঘাট শ্রমিক মোস্তফা (২০) কাচাবাজার সহ একটি ভ্যান গাড়ি নিয়ে ভাটার খাল এলাকার তাব্বি বনিজ্যালয়ের সামনে দিয়ে যাবার সময় ধাক্ক লাগে আড়ৎ’র এক শ্রমিকের গায়ে। এতে দু’জনার মধ্যে ঝগড়ার একপর্যায়ে মারামারি বাধে। বিষয়টি মিমাংসাও করে দেয় শ্রমিক নেতা মোশাররফ হোসেন। কিন্তু বিচার উপেক্ষা করে শ্রমিক মোস্তফা ক্ষেপিয়ে তোলে তার পক্ষের শ্রমিকদের। একপর্যায়ে ঘাট শ্রমিকদের কয়েকজন মিলে পুনরায় এসে হকার্স মার্কেটের পিছনে স্টীমার ঘাটের মধ্যে নিয়ে গিয়ে আড়ৎদারদের ১ শ্রমিককে মারধর করে। পরে পানামা ফারুকের ভাই মনা এসে ছাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে তাকেও মারধর করে ঘাট শ্রমিকরা। একপর্যায়ে ক্ষুব্দ হয়ে ওঠে আড়ৎদাররাও। প্রতিবাদি হয়ে উঠলে শুরু হয় সংঘর্ষ। এ সময় ঘাট শ্রমিকদের পক্ষে চেরাগ আলী, হালিম শাহ, কামাল শাহ, ফরিদ, টুলু, আনিচ, হাসান, মোস্তফা ও আনিচ সহ সারেং কামালের নেতৃত্বে প্রায় ৩০/৪০ জন লাঠি-ছোটা নিয়ে হামলা চালায় আড়ৎদারদের উপর। পাল্টা হামলা চালায় আড়ৎদাররাও। শুরু হয় উভয় গ্র“পের ইট-পাটকেল নিক্ষেপ। সে সময় উভয় গ্রুপের হামলায় আনোয়ার(২২) নামের একজন গুরুতর আহত হয়। সংঘর্ষে আহত হয় মনা, কবির, আনিচ, হেমায়েত ও পথচারী শোভারানী সহ কম বেশী ১০ জন। শত চেষ্টা করেও ততক্ষনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পারছিলনা পুলিশ। পরে বাধ্য হয়ে লাঠি চার্জ করে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সোহাগ নামের ১জনকে আটক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় আড়ৎদারদের পক্ষ থেকে ১কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি ও লুটপাটের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে আসামী করা হয় চেরাগ আলী,  হালিম শাহ, কামাল শাহ, ফরিদ, টুলু, আনিচ, হাসান ও সারেং কামাল সহ অজ্ঞাত বেশ কয়েকজন আসামীদের।

সংঘর্ষের বিষয়ে কাচা বাজার সমিতির সাধারন সম্পাদক তাদের কর্মচারীদের উপর অহেতুক হামলা চালান হয়েছে উল্লেখ করে জানান, এ ঘটনায় ২৪ঘন্টার মধ্যে শ্রমিকদের বিচার না হলে দক্ষিনাঞ্চলের কাচাবাজার বন্ধ করে দেয়া হবে। অপরদিকে ঘাট শ্রমিক নেতা পরিমল জানান, আমরা একই জায়গায় বসবাস করি তাই বিষয়টির সমাধান চাই। ঘটনা মিমাংসার জন্য এটি এম শহিদুল্লাহ ও শাহীন ভাই এর সাথে কথা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন শ্রমিক নেতা পরিমল। ঘটনার পর থেকে ভাটারখাল এলাকা জুড়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।