নলছিটিতে ডাকাতির ঘটনাগুলো থানায় এলেই চুরি’র মামলায় পরিনত হয়

উম্মে রুমান, বরিশাল ॥ ঝালকাঠীর নলছিটি উপজেলার আইনশৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। গত কয়েক মাস যাবৎ এ উপজেলায় আশংকাজনক হাড়ে বেড়ে চলেছে ডাকাতীর ঘটনা। ফলে উপজেলার সর্বত্রই এখন ডাকাত আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে সাধারণ মানুষ। আর ক্ষতিগ্রস্থরা থানায় মামলা করতে আসলে ডাকাতীর মামলা না নিয়ে নেয়া হচ্ছে চুরির মামলা। এখানকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাফ নির্দেশ ডাকাতি বলে কোন কথা নেই এখানে যা হচ্ছে সব চুরির মামলা রেকর্ড হবে। আর প্রতিনিয়ত এধরনের ঘটনা ঘটলেও এখন ওসির ভয়ে বা কামখেয়ালীর কারনে কেউই মামলা করতে থানায় যাননা।

স্থানীয় ও ভূক্তোভোগীরা জানায়, উপজেলার দশটি ইউনিয়নের দপদপিয়া ও মগড় ইউনিয়ন দু’টিতে গত এক মাসে ২০টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে, এর মধ্যে দপদপিয়া ইউনিয়নে গত ৪নভেম্বর মুন্সিবাড়ি, ১১নভেম্বর ভরতকাঠী গ্রামের সম্রাটদের বাড়িতে, ১২নভেম্বর তিমিরকাঠী গ্রামের মাঝিবাড়ি, বোডেরহাট জিরো পয়েন্টে, ১১ডিসেম্বর দপদপিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সন্নিকটে বাদশা মিয়ার বাড়ি, গাজী বাড়ি, ১২ডিসেম্বর কয়ারচর নিখিল মাষ্টারের বাড়ি, কদম আলীর মেয়ের বাড়ি ও চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি শিমুল তলা মিয়া বাড়িতে এবং ১০ নভেম্বর মগড় ইউনিয়নের কড়ুয়াকাঠী গ্রামের দেলোয়ার মিয়ার বাড়ি, গত বছরের ২১ডিসেম্বর চরমোনাই’র খলিফা কাঠিপাড়ার সেকন্দার আলী পীর ছাহেবের বাড়ি, ১০ জানুয়ারি ২০জানুয়ারি সাদেক আলীর বাড়িতে ডাকাতি সংঘঠিত হয় বলে ভূক্তভোগী ও এলাকাবাসি জানায়। এ ছাড়া গত ২১ জানুয়ারি দিবাগত রাত সাড়ে এগারোটার দিকে ইউনিয়নের কাঠিপাড়া গ্রামের হাসমতউল্লাহ খানের বাড়ি ও মাঝি বাড়িতে ডাকাত পড়লেও হাওলাদার বাড়ির আব্দুর রহমান কাঠিপাড়া পীর ছাহেবের মাদ্রাসার মাইকে জানান দিলে ওই এলাকার লোকজনের সরব উপস্থিতির কারণে ডাকাতদল ভেগে যায় বলে জানান মাদ্রাসার ছাত্ররা।

উপজেলার নাচনমহল ইউনিয়নে গত এক মাসে ৭-৮টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে জানান ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহম্মদ হোসেন খোকন। বাড়িতে ডাকাতি হওয়ার পরে সর্বস্ব হারিয়ে থানায় এসে ডাকাতির অভিযোগ করার পরও নলছিটি থানা পুলিশের ডাকাতি মামলা হিসেবে নথিভূক্ত না করে চুরি মামলা দায়ের করে বলেও অভিযোগ ভূক্তভোগীদের। পুলিশের এই ভূমিকায় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জনমনে। চরমোনাই’র খলিফা নলছিটি উপজেলাধীন মগড় ইউনিয়নের কাঠিপাড়া গ্রামের পীরছাহেব মাওলানা সেকান্দার আলী খানের বাড়ীতে গত ২১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে দুধর্ষ ডাকাতি সংঘঠিত হওয়ার পরেরদিন নলছিটি থানায় মামলা দায়ের করতে এলে অনেক টালবাহানার পর চুরি মামলা হিসেবে নথিভূক্ত করে নলছিটি থানা পুলিশ। এ ব্যাপারে নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুজ্জামান এর সাথে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বিষয় গুলো এড়িয়ে গিয়ে আইনের ধারায় কোনটি কি মামলা হবে তা বলতে শুরু করেন । পরে তাকে কাটিপাড়ার পীর সাহেবের বাড়ীতে ডাকাতির ঘটনায় চুরির মামলা নিলেন কেন যানতে চাইলে মোবাইলের লাইনটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।