বরিশালের ব্যাপ্টিষ্ট চার্চের জমিতে অবৈধভাবে বস্তি বানানোর পায়তারা

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বরিশালের ভিআইপি এলাকায় বাংলাদেশ ব্যাপ্টিষ্ট চার্চ ট্রাস্টের জমিতে বস্তি বানানোর পায়তারা চলছে। ওই জমিতে টংঘর তোলে দিনরাত চলে মাদক ও গাঁজার ব্যবসা। একটি চক্র বরিশালের বিভিন্ন স্থানে লোক এনে তাদের থেকে টাকা নিয়ে ওই জমিতে ঘর বানিয়ে দিবে বলে আদায় করছে মোটা অংকের টাকা। বৈধতা পেতে সংবাদ সম্মেলন, স্মারকলিপি, মানববন্ধন করছে ওই চক্রটি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নগরীর আলেকান্দা মৌজার জেএল-৫০যার এস এ খতিয়ান ২৪১৯ ও ২৪২১ দাগ নং ৫০৮১ থেকে ৫০৯১ পর্যন্ত যার জমির পরিমাণ ২ একর ৫৩ শতাংশ। এ জমির মালিক বাংলাদেশ ব্যাপ্টিষ্ট চার্চ ট্রাস্ট এ্যাসোসিয়েশন পক্ষে সাধারণ সম্পাদক বিবিসিএস ৩৩ সেনপাড়া পর্বতা, মিরপুর-১০ ঢাকা। এ জমি দেখা শুনা করেন ট্রাস্টের প্রতিনিধি রেভারেন্ট অরবিন্দ সরকার পালক প্রধান বরিশাল আঞ্চলিক ব্যাপ্টিষ্ট চার্চ সংঘ। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের একটি কুচক্রি ভূমিদস্যু ওই জমিটি হাতিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন ফন্দি ফিকির করছে। ইতিমধ্যে ওই ষড়যন্ত্রকারীরা একটি মামলা দায়ের করেছে। ইতিমধ্যে মাননীয় আদালত নিষেধাজ্ঞার আদেশ বাতিল করেছে। পালক প্রধান জানান ওই জমিতে আমাদের ৫টি ঘর রয়েছে যা ভাড়া দেয়া হয়েছে। কিন্তু  পল প্রভাকর সাহা, রবিন বাড়ৈ, রনজিৎ মল্লিক, জ্যাকব বাড়ৈ, স্তিফানহাজরা মহানন্দ বাড়ৈ, আগৈলঝাড়া বরিশাল উজিরপুর থেকে স্বচ্ছল খ্রিষ্টানদের এনে এখানে টংঘর বানিয়ে দখল করার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে বিসিসি কর্তৃপক্ষ বিনা অনুমতিতে বিনা প্লানে টংঘর নির্মাণ বন্ধের জন্য নির্দেশ দিয়েছে। পল প্রভাকর ২৮ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলনে ৫৪টি পরিবারের কথা বললেও বাস্তবে ১০টি টংঘরও নেই। ওই জমির নিয়মিত খাজনা পরিশোধকরছে জমির মালিক পক্ষ চার্চ ট্রাষ্ট। জমিটির চারদিক দেয়াল দেয়া ঘেরা। ওইখানে ওই লোকদের বসবাসের অনুমতি প্রদান করেনি কেউ। মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে সহানুভুতি পাওয়ার জন্য ব্যাপ্টিষ্ট চার্চের জমি দখলের পায়তারা করেছে ওই ভূমিদস্যু চক্রটি। ওই চক্রটির বাদল বালা, অমল বালা, রনজিৎ মল্লিক, ইস্তিদান হাজরার বিরুদ্ধে রয়েছে চাঁদাবাজির মামলা। সম্প্রতি অনিতা গাইন নামে একজন এদের বিরুদ্ধে ৩২৩, ৩৭৯, ৩৫৪, ৩৮৫, ৩৮৭ ধারার অভিযোগ এনে বরিশাল জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছে। মামলাটি তদানন্তিন পর্যায়ে রয়েছে। স্থানীয় লোকজন ওই জমিতে বস্তি বানানোর বিরোধিতা করে জানিয়ে এই ভিআইপি এলাকায় বস্তি গড়ে উঠলে এখানে সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসা, খুন খারাবী, রাহাজানিসহ অপরাধ এর স্বর্গরাজ্যে পরিণত হবে। ওই জমির দক্ষিণ পার্শ্বে জেলা প্রশাসকের বাসভবন, জেলা ও দায়রা জজের বাসভবন সহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বাসভবন। জমির পূর্ব পার্শ্বে চার্চ। অন্য পার্শ্বে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউ হেলথ্ এন্ড টেকনোলজী। তারা বলেছে এখানে বস্তি হলে চার্চের পবিত্রতা নষ্ট হবে। ইতিমধ্যে ওইখানের একটি টংঘরে ধর্ষণের মত ঘটনা ঘটেছে। গাঁজার গন্ধে ভারি হয়ে উঠছে চার্চ এলাকার আকাশ বাতাস। বাংলাদেশ ব্যাপ্টিষ্ট চার্চ ট্রাস্টের পালক প্রধান অরবিন্দ সরকার যারা টংঘর তুলেছে তাদের অন্যত্র চলে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। ট্রাস্টের জমি অবৈধভাবে দখলের ষড়যন্ত্র থেকে ও বিরত থাকার আহবান জানিয়েছেন।

পালক প্রধান বলেন, সংবাদ সম্মেলনে পল প্রভাকর সাহা স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্য শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মিথ্যা, বানোয়াট ও গাঁজা খুড়ি তথ্য দেয়া হয়েছে। জমিটি বিক্রি হয়নি। বিক্রির চেষ্টা করা হয়নি অথচ খান এন্ড সন্স গ্রুপকে জড়ানো হয়েছে। ওই ভূমিদস্যু গ্রুপটি বিভিন্নজন থেকে ২হাজারকে লাখ টাকা দিচ্ছে ঘর দেয়ার নাম করে। এ ব্যাপারে পল প্রভাকর সাহা বলেন, বিভিন্ন খরচা বাবদ টাকা নেয়া হয়। তিনি বলেন, আমার ব্যাপ্টিষ্ট এলাকায় আমার নিজের জমি রয়েছে। অসহায়দের সহায়তা করার জন্য তাদের পক্ষে কাজ করছি। একটি টং ঘরের লোক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি জানান পল প্রভাকর টাকা নিয়ে ঘর উঠিয়ে দিবে তাই তিনি এসব কর্ম করছে। পালক প্রধান ট্রাস্টের জমিতে হাতে গোনা কয়েকটি টংঘর উচ্ছেদের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।