নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ “বন্ধু তুমি না বলেছিলে, আমাকে ঘুড়ি উপহার দিবে। আমাকে ঘুড়ি না দিয়ে তুমি চির বিদায় হয়ে গেলে কেন। তোমার শেষ ইচ্ছেটাতো বন্ধু পূরন করলে না”। আবেগআপ্লুত হয়ে এভাবেই কথাগুলো বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন, জনপ্রিয় অভিনেতা প্রয়াত হুমায়ুন ফরীদির বাল্যবন্ধু বিশ্বনাথ মন্ডল (৬৩)।
সূত্রমতে, ১৯৫২ সনের ২৯ মে হুমায়ুন ফরীদি ঢাকায় জন্মগ্রহন করলেও বাবার চাকুরির সুবাধে তার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে বিভিন্ন জেলায়। যে কারনে ১৯৬২ সনে হুমায়ুন ফরীদি গৌরনদী হাইস্কুলে চতুর্থ শ্রেনীতে ভর্তি হন। সে সময় তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন বরিশালের গৌরনদী উপজেলার উত্তরপালরদী গ্রামের মৃত কালীচরন মন্ডলের পুত্র (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক) বিশ্বনাথ মন্ডল। হুমায়ুন ফরীদি ও বিশ্বনাথ মন্ডলের নেশা ছিলো ঘুড়ি উড়ানো। একত্রিত হয়ে ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগীতায় তারা মেতেছিলো ছয়মাস। পরবর্তীতে বাবার চাকুরির সুবাধে হুমায়ুন ফরীদি পরিবারের সাথে অন্যত্র চলে যান। এরপর আর তাদের সাথে দেখা ও কথা হয়নি। বছর খানেক পূর্বে একটি দৈনিকে হুমায়ুন ফরীদির একটি সাক্ষাতকারে লেখা ছিলো তার জীবনের শেষ ইচ্ছা। হুমায়ুন ফরীদি তার শেষ ইচ্ছার উত্তরে বলেছিলেন, যদি কোনদিন আমার বাল্যবন্ধু গৌরনদীর বিশ্বনাথ মন্ডলকে খুঁজে পাই তাহলে তাকে আমি একটি ঘুড়ি উপহার দিবো। এ লেখা দেখে গৌরনদীর এক সংবাদকর্মীর সহযোগীতায় বিশ্বনাথ মন্ডল তার বাল্যবন্ধু হুমায়ুন ফরীদির মোবাইল নাম্বার সংগ্রহন করে তার সাথে যোগাযোগ করেন। দীর্ঘ ৪৯ বছর পর দু’বন্ধুর কপোথকথন বলে কথা। বিভিন্ন জনের পরিচয়ের সূত্রধরে অপর ক্লাশমেইট বিশ্ব চাকলাদার, তার বোন বীনা চাকলাদারসহ অন্যান্যরা কে কোথায় ও কিভাবে আছে জানতে চান ফরীদি। তাদের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহন করে তাদের সাথেও সে যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন। বিশ্ব চাকলাদার দেশের বাহিরে থাকেন। কথাছিলো চলতি বছরের শেষের দিকে সে দেশে আসবে। আর সে সময় গৌরনদীতে তারা পুরনো বন্ধুরা একত্রিত হয়ে একটি পার্টি করে হুমায়ুন ফরীদি তার ঘনিষ্ঠ বাল্যবন্ধু বিশ্বনাথ মন্ডলকে ঘুড়ি উপহার দেবে। কিন্তু হুমায়ুন ফরীদির সেই শেষ ইচ্ছে আর পূরন হলোনা।