দধি-মিষ্টি তৈরী করে ঐতিহ্য ধরে রেখেছে আগৈলঝাড়ার সুদক্ষ কারিগররা

আগৈলঝাড়া সংবাদদাতা ॥ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার সুদক্ষ কারিগররা জীবন জিবীকার তাগিদে দধি-মিষ্টি তৈরী করে ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও এ পেশাকে আকরে রেখেছেন তারা। দেশের ঐতিহ্য আগৈলঝাড়ার দধি-মিষ্টি জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক ভাবে ক্ষ্যতি অর্জন করেছে। ভোজন বিলাসী মানুষের কাছে এ উপজেলার দধি-মিষ্টি ছাড়া ভোজন রসনা যেন অপূর্নতা রয়ে যায়। ঐতিহ্যগত কারনেই ক্রেতা সাধারনের কাছে লোভনীয় সামগ্রী। চাহিদার সাথে সাথে কিছু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার লোভে গুনগত মান খারাপ করে থাকে। তারই মধ্যে সুনামকে ধরে রাখতে অধিক মুনাফার কথা চিন্তা না করে ঐতিহ্যগত ভাবে দধি-মিষ্টি তৈরী করে আসছে অনেক ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে ভাল জিনিস তৈরীকরা খুবই কষ্টকর। কথাগুলো বলেছিলেন, বংশগত ভাবে দধি-মিষ্টি তৈরীর পেশায় আসা এবং ৩০ বছর ধরে সুনামের সহিত ব্যবসা পরিচালনাকারী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী গৈলা বাজারের শ্রী দূর্গা মিষ্টান্ন ভান্ডারের স্বত্তাধিকারী গোসাই দাস।

আগৈলঝাড়ার ঐতিহ্য দধি, মিষ্টি, ঘি’র সুনাম শুধু বাংলাদেশেই নয় বর্হিবিশ্বেও এর কদর রয়েছে। বহুকাল থেকে দধি,মিষ্টি, ঘি’র জন্য এ উপজেলা বিক্ষ্যাত। সারাদেশে আগৈলঝাড়ার দধি, মিষ্টি, ঘি’র যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। বিবাহ অনুষ্ঠান, বৌ-ভাত, জন্মদিন, মৃত্যুবার্ষিকীসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দধি-মিষ্টির জন্য দুর-দুরান্ত থেকে আসেন ক্রেতারা। প্রতিদিন শত শত মন দধি, মিষ্টি এখান থেকে ঢাকা-বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, খুলনা, মাদারীপুর, সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। দেশের বাইরেও ব্যাপক ভাবে আগৈলঝাড়ার দধি-মিষ্টি, ঘি’র সুনাম রয়েছে। আগৈলঝাড়ার দধির  প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ১০/১৫ দিনেও স্বাভাবিক আবহাওয়ায় নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা নেই। যে কোন যানবাহনে সহজে বহন করা যায়। শুকনো মিষ্টি একমাসেও নষ্ট হয় না। ঘি একবছরেও নষ্ট হয়না। এখানকার ব্যবসায়ীরা জানান বর্তমানে ১৫ প্রকারের মিষ্টান্ন দ্রব্য তৈরী করা হয় এখানে। তবে বর্তমানে ১৫ প্রকারের মিষ্টান্ন দ্রব্যর মধ্যে রয়েছে দধি, চমচম, কালোজাম, শুকনো মিষ্টি, বড় রসগোল্লা, রসমালাই, ছানার সন্দেশ, খিরপুরী, মাওয়া, ছানার জিলাপি উল্লেখযোগ্য।

তারা আরও বলেন, সরকারী বা বে-সরকারী ভাবে কোন সহযোগীতা পাচ্ছেন না দধি-মিষ্টি প্রস্তুতকারীরা। ব্যবসায়ীদের  চড়া দামে দুধ ক্রয় করতে হচ্ছে। তাছাড়া  ঘড়ভাড়া, বিদ্যুৎবিল, লাকড়ি খরিদ, কর্মচারীদের বেতন, টালীসহ বিভিন্ন দ্রব্য ক্রয়করে তাদের ব্যবসায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে।
ব্যবসায়ীরা আরো জানান, আগৈলঝাড়ার ঐতিহ্যবাহী দধি, মিষ্টি, ঘি’র ঐতিহ্য ধরে রেখে ব্যবাবসায়ীদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ বিতরণ করা, দুধের বাজার, ডেইরী ফার্ম স্থাপন এখন জরুরী হয়ে পড়েছে। এজন্য তারা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু দৃষ্ঠি কামনা করছেন।