ঢাকা সদরঘাট শ্রমিক লীগ কর্তৃক বরিশাল বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপর হামলা – আহত ৭০

শাহীন হাসান, বরিশাল ॥ বরিশাল থেকে ঢাকায় পৌছে বরিশালের হাজার হাজার যাত্রীরা চরম বিপাকে পরেছে গতকাল। লঞ্চগুলোকে ঢাকায় সদর ঘাটে ভিড়তে দেয়নি ঘাট শ্রমিকলীগের নেতা-কর্মীরা। ফলে ট্রলার ও নৌকা যোগে ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জ, ও কাশপুর পোস্তাকলা ব্রীজ হয়ে সাধারন যাত্রী সহ বিএনপি নেতা-কর্মীদের ঢাকার মাটিতে পা রখতে হয়েছে। পরপরি দফায়-দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে শ্রমিকলীগ বনাম বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে। এতে প্রায় শ খানেক নেতা-কর্মী আহত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকায় পৌছানো বিএনপির নিতা-কর্মীরা। এমনকি বরিশাল অন্যান্ন রুট থেকে আগত লঞ্চগুলোকেও ঘাটে পৌছাতে দেয়নি সদরঘাটের শ্রমিল লীগের নেতা-কর্মীরা। কয়েকটি লঞ্চের অভ্যান্তরে ঢুকে সাধারন যাত্রী, বিএনপি সহ চার দলীয় জোট সরকারের নেতা-কর্মীদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে।

বরিশাল সদর আসনের-৫ এমপি মজিবর রহমান সরোয়ার জানান, লঞ্চের কেবিন ভেঙ্গে মুলাদী উপজেলার চেয়ারম্যান আব্দুর ছত্তারকে ঘাট শ্রমিকলীগের নেতারা পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। লঞ্চ ভিড়তে না দেয়ায় নেতা-কর্মী সহ সাধারন যাত্রীরা ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জে কেউ বা নৌকা ও ট্রলার যোগে তীরে উঠতে বাধ্য হয়েছে। লঞ্চে থাকা বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ন আহবায়ক আরিফুল ইসলাম জনি জানান, তাদের মধ্যে নেতৃত্ব দানকারী বেশীর ভাগ নেতা-কর্মীরা গুরুতর আহত হয়েছে। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, বরিশাল কলেজের উলফত রানা রুবেল, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ন আহবায়ক আরিফুর রহমান মুন্না, হাতেম আলী কলেজ চৌমাথার হারুন, হাতেম আলী কলেজ শাখার বেল্লাল,বরিশাল কলেজের ছাত্র দল নেতা তুহিন, আরিফ, কাউনিয়া সাধুর বটতলা এলাকার ছাত্রদল কর্মী মামুন, আমানত গঞ্জের ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি ছাব্বির হোসেন, ১৯নং ওয়ার্ড যুব দলের বজলুর রহমান বজলু, সাজ্জাদ খান রনি, কাউনিয়া মনষা বাড়ি গলির যুব দল নেতা মনির ওরফে বুইড়া মনির সহ প্রায় ২০জনের মত।

কামাল পন্থিদের মধ্যে বরিশাল কলেজের ছাত্রদল নেতা রাফসান আহমেদ জিতু জানান, ঘাট শ্রমিকদের লাঠি পেটায় জিতু নিজে সহ আহত হয়েছে বরিশালের কমপক্ষে শতাধিক নেতা-কর্মী। লঞ্চ ঘাটে ভীড়তে না দেয়ায় প্রায় ঘন্টা খানেক বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চ নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে। পরে ট্রলার যোগে ভিন্ন পথে সাধারন যাত্রী সহ নেতা-কর্মীরা কাশপুর পস্তকলা ব্রীজে গিয়ে নামে। সেখানে গিয়ে তাদের উপর হামলা চালানোর চেষ্টা করলে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সাথে সাধারন যাত্রীরাও শ্রমিক লীগের নেতা-কর্মীদের উপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে দু’গ্রুপ মুখো-মুখি হলে মারামারির একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় শ্রমিকদের লাঠি-চলার আঘাতে আহত হয় বিএনপি নেতা এ্যাড মোহন, মাকসুদ আলম, নূর ইসলাম, শেখ সেলিম, মহাগনর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক ফিরোজ আল-আমিন পলাশ, আমিনুল ইসলাম লিমন, মিজানুর রহমান পলাশ, বিএম কলেজের মাসুম, হাতেম আলী কলেজের মামুনর রশিদ, ছাত্র দল নেতা তারেক আল ইমরান সহ ৫০জনের বেশী।

এ বিষয়ে সাংসদ মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, আওয়ামিলীগ সরকার দেশর বর্তমান প্রেক্ষাপটে সাধারন জনগনকে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে দেশ তার গনতন্ত্র হারিয়েছে। আমরা দেখেছি ১৯৯৬ সালে আ’লীগ আমর্স ক্যাডার দিয়ে আওয়ামিলীগ বরিশাল বিএনপির অফিস ও ক্লাবগুলোতে হামলা চালিয়েছে। এবার তারা পুলিশের সহায়তায় তার থেকেও ন্যাক্কার জনক আচরন করেছে লঞ্চ ও বাস যোগে আসা সাধারন যাত্রী সহ আমাদের নেতা-কর্মীদের। ঘাট শ্রমিক লীগ গতকাল বরিশাল থেকে আসা লঞ্চগুলোকে ঘাটে ভিড়তে দেয়নি। বরং তারা লঞ্চে গিয়ে আমাদের নেতা-কর্মী সহ সাধারন যাত্রীদের সাথে পশুর মত আচরন করে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে। দেশব্যপী সর্বস্তরের জনগনের জাগরন দেখে আ’লীগ সরকার বুঝতে পেরেছে তাদের পতন অনিবার্য। তাই তারা বিভ্ন্নি অজুহাতে যান-বাহন বন্ধ করে দিয়ে সারাদেশর যোগাযোগ ব্যবস্থাকে অচল করে দিয়েছে। দেশ তার গনতন্ত্র হারিয়েছে বলে মন্তব্য করে সরোয়ার আরো বলেন, সাধারন মানুষ কি দোষ করেছে। তারা তাদের নানা মুখি কাজে ঢাকা আসবে যাবে এটাই স্বাভাবিক। অনেক রোগীরা তাদের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আসছিল। তাদের অবস্থা কি একবার ভেবেছেন বলে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে সরোয়ার বলেন এটাকি কোন স্বাধীন দেশের চিত্র?