অলি বার বার ফিরে যায়, অলি বার বার ফিরে আসে…

দুই ইয়াতিমের জননী, তিন তিন বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী, ৪কোটি টাকার ইয়াতিমী ফান্ড নিয়ে আদালতী ফ্যসাদে জড়িয়ে আছেন। দেশীয় ইয়াতমদের জন্যে বিদেশী খয়রাতী এনে অনেক বছর কাটিয়ে দেয়ার পর বুঝতে পারলেন, ’যাহা কিছু উত্তম তাহা নিজ ঘর হইতেই শুরু করা উত্তম’। এক শহীদ পরিবারের দুই ইয়াতিমকে অনেকদিন ধরে দুঃখ-কষ্টে লালন করেছেন, কেউ যদি ইয়াতিমী ফান্ডের খয়রাতী অর্থ পাওয়ার অধিকার রাখে নিশ্চয় নিজ সন্তানদ্বয়! ৪কোটি ৪৪ লাখ টাকা বিলিয়ে দিলেন দুই সন্তানের মাঝে। ইয়াতিমদ্বয় ধন্য হল, ধন্য হল বাংলাদেশ। এতকিছু ধন্য হলে হবে কি, দেশের আদালত ধন্য হলনা, তারা সমনজারী করল ইয়াতিম পরিবারের ততোধিক ইয়াতিম কর্নধারকে। ইয়াতিমদ্বয়ের ব্যথায় ব্যথিত সাংসদরা গো ধরল, এই অবলা পরিবারকে আইনী ঝামেলা হতে সন্মানের সাথে মুক্তি না দিলে তেনারা সংসদমূখী হবেন্‌না। ৩০০কোটি টাকার সম্পত্তিতে বাস করে ইয়াতিম পরিবারের সবাই মুচকি হাসল। এক মাঘে শীত যায়না এমনটা ভেবে পুলকিত বোধ করল। সে পুলক ছড়িয়ে পরল সাংসদদের মাঝে, তারাও হাসল। গো ধরা প্রতিজ্ঞা টুটে গেল জিঞ্জিরা তৈরী ম্যানিলা দড়ির মত। একাধিক চাঁদাবাজী মামলার আসামী দুই দুই বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীও পুলক বোধ করলেন, উনারা আসছেন শেষ পর্যন্ত। আসার পরিবেশ তৈরী হয়েছে, তাই চারদিকে এখন আগমনী সুবাতাস।

গল্পটা ইস্কুলের পাঠ্য বইয়ে পড়েছিলাম, ইংরেজীতে। এক রাজা, বেজায় মহব্বত করেন তার প্রজাদের। গরীব প্রজারা জায়গা-জমির অভাবে চাষাবাদ করতে পারেনা শুনে রাজা প্রায়ই ব্যথিত হন। প্রজাদের প্রতি মহব্বত প্রমানের তাগাদায় অদ্ভূদ এক ঘোষনা দিলেন রাজা, “আগামীকাল সূর্য্যদোয় হতে সূর্য্যাস্ত পর্য্যন্ত যে যতটুকু জায়গা দৌঁড়াতে পারবে ততটুকু জায়গা তার”। তবে শর্ত হল, সূর্য্যাস্তের ঠিক আগে রাজদরবারে ফিরে আসতে হবে। অনেকেই দৌঁড়াল এবং সময়মত রাজ দরবারে ফেরত এসে বুঝে নিল জমির দখল। কিন্তূ রাজ্যের লোভি এক প্রজা, সেই যে দৌঁড় শুরু করল থামলনা কোথাও। দৌঁড়ায় আর জমির মালিকানার কথা ভেবে মনের আনন্দে হাসে। হাসতে হাসতে অনেকটা জমি দৌঁড়ে ফেলে সে। বেলা গড়িয়ে যায়, রাজ দরবারে ফিরতে হবে সূর্য্যাস্তের আগে, উলটা পথে দৌঁড়াতে শুরু করল সে। অনেক দেরী হয়ে গেছে, পশ্চিম দিগন্তে সূর্যটা হেলে পরতে শুরু করেছে ততক্ষনে। দরবারে পৌঁছানোর আগেই সূর্য্য ডুবে গেল, তবু সে পৌঁছল এবং পৌঁছা মাত্রই পিঞ্জিরা হতে জান নামের পাখীটা উড়ে গেল (ইন্না লিল্লাহে… রাজেউন)। আমাদের সাংসদদের জন্যে এমন একটা দৌঁড়ের আয়োজন করলে কেমন হয়? লোভ লালসা মাপার জন্যে এ হতে পারে সহস্রাব্দীর সেরা দৌঁড়! পরিবেশ নাই, কথা বলার সূযোগ নাই, সামনে বসতে না দিলে মানিনা, নেত্রীর ডাইনে না হলে চলবেনা, এটা না হলে হবেনা, ওটা না হলে আসবনা; বছরের পর বছর ইংলিশ রোড মার্কা এ সব বস্তাপচা পেচাল আর কাহাতক সহ্য করা যায় আপনারাই বলুন? আমরা মানি আর না মানি, দেশটাতো উনাদেরই। অংশিদারিত্বের মালিকানা নিশ্চিত করতে এমন একটা দৌঁড়ের শুরু হতে পারে সংসদ ভবন হতে এবং মালিকানা নিশ্চিন্ত করে দিনান্তে ফিরে আসতে পারেন এই সংসদেই। যত ধানাই পানাই করুক না কেন, মাননীয় সাংসদরা শেষ পর্য্যন্ত কিন্তূ ফিরে আসেন এই সংসদেই, হোক তা শুল্কমুক্ত গাড়ির টানে অথবা ৯০ দিনের বেড়াজালে।

বিনাশুল্কে গাড়ি আমদানীর পারমিট হাতে নিয়ে সংসদ হতে কেটে পরার নতুন পাঁয়তার করলে দয়া করে ধাওয়াবেন মহামান্য সাংসদদের। এটা ওনাদের পাওনা হয়ে আছে।

Source : Ami Bangladeshi (WatchDog)