বরিশালের ভিজিডি কার্ডধারী অসহায় ও দুঃস্থদের মাঝে খাবার অনুপযোগী চাল বিতরনের অভিযোগ

 

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বরিশালের ভিজিডি কার্ডধারী অসহায় ও দুঃস্থদের দেয়া হচ্ছে খাবার অনুপযোগী পঁচা ও নিন্মমানের চাল। গতকাল রবিবার জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের অধিকাংশ ভিজিডি কার্ডধারীরা এ চাল না নিয়েই ফিরে গেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপঙ্কর বিশ্বাস ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।

ভুক্তভোগী কার্ডধারী দুঃস্থরা জানান, রবিবার রাজিহার ইউনিয়নে ১৮৫ জন দুঃস্থদের মধ্যে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করার সময় পঁচা ও নিন্মমানের চাল হওয়ার কারনে অধিকাংশ কার্ডধারীরা পঁচা চাল না নিয়ে ফিরে গেছেন। ভিজিডি কার্ডধারী বাহাদুরপুর গ্রামের রবি মন্ডলের স্ত্রী বিথীকা মন্ডল জানান, এ চাল খাওয়া যায়না, গন্ধ আসে। ছেলে-মেয়েরা না খেয়ে থাকলেও এ পঁচা চালের ভাত খেতে চায়না। রামানন্দেরআঁক গ্রামের গোপাল গাইনের স্ত্রী মিঠু গাইন বলেন, গত বারের চাল রান্না করে আমরা পরিবারের কেউ খেতে না পেরে গরুর সামনে দিয়েছিলাম, গরুও এ পচাঁ চালের ভাত খায়নি। হাঁস মুরগীও চাল খাচ্ছেনা।

বাশাইল গ্রামের দেবেন্দ্র বাড়ৈর পুত্র অনন্ত বাড়ৈ বলেন, গত মাসের চাল নিজেরা না খেতে পেরে বাজারে বিক্রি করতে গিয়েছিলাম, কিন্তু কোন দোকানীরাই চাল ক্রয় করেননি। রাজিহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইলিয়াস তালুকদার কার্ডধারীদের চাল নেয়ার অনুরোধ করলেও তারা পঁচা চাল নিতে অনিহা প্রকাশ করেন।

চেয়ারম্যান পঁচা ও নিন্মমানের চাল গোডাউন থেকে তাদের সরবরাহ করার কথা স্বীকার করে বলেন, সরকার দুঃস্থদের চাল দেয় উপকারের জন্য, কিন্তু পঁচা চাল খেয়ে তারা পেটের পীড়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। গত ৫ মাস থেকে গোডাউন থেকে তাদের এমন পঁচা চাল দেয়া হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। একই অভিযোগ বাকাল ইউনিয়নের দুঃস্থদের। পঁচা চালের কারণে কার্ডধারীরা না নিতে চাওয়ায় গৈলা ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন লাল্টু এখন পর্যন্ত চাল উত্তোলনই করেননি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ৯২৮ জন দুঃস্থ ভিজিডি কার্ডধারী রয়েছেন। যাদের সবাইকেই গত ৫ মাস ধরে পঁচা ও দুর্গন্ধযুক্ত চাল বিতরন করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে রাজিহার ইউনিয়নের চাল বিতরণের দ্বায়িত্বে থাকা সরকারী কর্মকর্তা (ট্যাক অফিসার) উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের প্রতিনিধি এনায়েত সরদার বলেন, মার্চ, এপ্রিল, মে তিন মাস যাবত পঁচা চাল দেয়া হচ্ছে।

আগৈলঝাড়া খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ আলম চৌধুরীর বলেন, চালগুলো টেকেরহাট খাদ্য গুদাম থেকে তাদের গুদামে সরবরাহ করা হয়েছে। চালগুলো থাইল্যান্ডের। আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর বিশ্বাস বলেন, পঁচা চালের ব্যাপারে অনেকেই আমার কাছে অভিযোগ করেছেন। চালের মান অত্যন্ত খারাপ এবং খাবার অনুপযোগী। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।