বরিশালে মিডস্ আইটি ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও

নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ছাত্র ছাত্রীদের তথ্য প্রযুক্তির ফাঁদে ফেলে মারর্স এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (গঊউঝ) নামের একটি প্রতিষ্ঠান প্রতারনা করে ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। ছাত্র ছাত্রীদের কম্পিউটার শিক্ষার পাশাপাশি বোনাস পাঠ ও মার্কেটিং করে আউট সোর্সিং (ডান হাত+বাম হাত) এর লোভনীয় ফাঁদে ফেলে ওই টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। গত এক সপ্তাহ থেকে প্রতিষ্ঠানটির সকল কার্যক্রম বন্ধসহ অফিসে তালা ঝুঁলছে।

প্রতারিত ছাত্র ছাত্রী, স্থানীয় লোকজন ও সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ৯ মাস পূর্বে গৌরনদীর স্থানীয় একাধিক যুবকের সহায়তায় মোঃ সাকিব, মোঃ দ্বীন ইসলাম, মোঃ হায়দার হোসেন ও রাশেদ রায়হান নামে চার যুবক পৌর সদরে গৌরনদী নাহার সিনেমা সংলগ্ন এ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেনের বাড়ির একটি ফ্লাট ভাড়া নেন। ওই বাড়িতে তারা মারর্স এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (গঊউঝ) গৌরনদী শাখা অফিসের নামে একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে কার্যক্রম শুরু করেন। ওই প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটর শিক্ষক কাজী পলাশ  জানান, মিডসের কর্মকর্তারা গৌরনদী অফিস নিয়েই ১০ টি কম্পিউটর স্থাপনসহ কম্পিউটর শিক্ষায় দক্ষ চার জনকে কম্পিউটর শিক্ষক পদে ও মোঃ রফিকুল ইসলাম নামে একজনকে ইংরেজী শিক্ষক পনের হাজার টাকা বেতনে শিক্ষক পদে নিয়োগ দান করেন। তাদের গত ৫ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা দীন ইসলাম মোবাইল ফোনে জানান, প্রতিষ্ঠানটি ধানমন্ডির প্রিয়াঙ্গন শপিং কমপ্লেক্সে তাদের হেড  অফিস রয়েছে। কম্পিউটার ইংরেজী ও ইন্টারনেট শিক্ষা গ্রহনের মাধ্যমে বোনাস পাঠ ও মার্কেটিং করে আউট সোর্সিং (ডান হাত+বাম হাত) ঘরে বসে লাখ লাখ টাকা আয়ের প্রলোভন দেখানো হয়। এসব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সদস্য ভর্তি ফি হিসেবে ৫ হাজার করে নেয়া হয়। তারা আরো জানান,  বোনাস পাঠ পকল্পে যে যত নতুন সদস্য বৃদ্ধি করতে পারবে তার হিসাব নম্বরে প্রত্যেকের বিপরিতে ১ হাজার টাকা জমা হবে। ডান বাম ৩-৩ মেচিং হলে তার হিসাব নম্বরে আরো ১ হাজার ৪ শ টাকা জমা হবে, ১৫-১৫ মেচিং হলে তাকে জেএমি পদবীসহ তার হিসেবে ৪ হাজার টাকা জমা হবে। ততোর্ধি মেচিং হলে দামি মোবাইল ফোন সেট, প্রাইভেট কার ও ফ্লাট বাড়ির প্রদান করা হবে। এ ছাড়া ভর্তি হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে ইন্টারনেটের মাধ্যমে মার্কেটিং এরকাজ করে ঘরে বসে লাখ লাখ টাকা রোজগারের প্রলোভন দেখানো হয়। প্রতি তিন মাস পর পর প্রত্যেককে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধিনে ব্রিটিশ কাউন্সিলের ইংরেজী ও কম্পিউটর শিক্ষার সনদ প্রদান করার আশ্বাস দেয়া হয়। সরকারি গৌরনদী কলেজের সারেক ছাত্র মোঃ  মামুন বলেন, আমি মিডসের লোভে পরে আমার সহপাঠী ও বন্ধু মহলের ১৭ জনকে উৎসাহিত করে ৮৫ হাজার টাকা দিয়ে সদস্য করেছি। মাহিলাড়া কলেজের ছাত্রী মাহমুদা আক্তার বলেন, আমি নিজেসহ আমার ৭ বান্ধবীকে মিডসের সদস্য করেছি। ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে ভর্তি হই কিন্তু আমাদেরকে দেয়া কোন প্রতিশ্র“তি রাখা হয়নি। প্রতারনা করে আমাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। সোমবারর সরেজমিনে গিয়ে ওই প্রতিষ্ঠাটি তালাবদ্ধ দেখা যায় এবং কোন কর্মকর্তাদের খুজে পাওয়া যায়নি। এ সময়  মিডসের সদস্য মোঃ আলতাফ, মোঃ শাওন, ইমরান হোসেন জানান, প্রতিষ্ঠানটির প্রতারনার বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ার আমরা ৮ জনের সদস্য ফি ফেরত আনতে এসেছিলাম।

মিডসের বাড়ির মালিক এ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেন জানান, গত চার মাস ধরে তার বাড়ি ভাড়া বকেয়া পড়েছে। অফিসের কর্মকর্তাদের খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। গৌরনদী মিডসের সিনিয়র নির্বাহী মার্কেটিং ব্যবস্থাপক মোঃ সাকিব হোসেনের কাছে প্রতারনা করে ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা উধাও হয়ে যাইনি। কিছু ঝামেলা হওয়ায় অফিস সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে।