নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বরিশালের এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তার স্ত্রীর করা মামলায় অভিযোগ গঠন করায় হুমকি পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন এক বিচারক। মঙ্গলবার ঢাকার ১ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার শুনানির সময় এই অভিযোগ করেন। তার অভিযোগ বরিশালের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে। যৌতুক চাওয়ার অভিযোগে মামলাটি করেছেন আবুল কালামের স্ত্রী আনোয়ার-ই তসলিমা। সাদিকুল ইসলামের আদালতে গত ১০ জুন এই মামলার অভিযোগ গঠন হয়। অভিযোগ গঠনের পর আবুল কালামসহ চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন বিচারক। মঙ্গলবার সাক্ষ্য দিতে এসে তসলিমা তার ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, মামলাটি চালানোর কারণে মাঝে-মধ্যেই অভিযুক্তরা তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে। তখন জজ সাদিকুল ইসলাম বলেন, “অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করায় আমাকেও বদলির হুমকি দিয়েছে।” জজের এই বক্তব্যের সময় এজলাসে প্রায় ২০ জন আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। সাক্ষ্যগ্রহণের এক পর্যায়ে বিচারক বাদির কাছে জানতে চান, তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলেন কি না। তখন তসলিমা জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরে গিয়ে নির্যাতনের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। গত ১৭ জানুয়ারি স্বামী আবুল কালাম আজাদসহ চারজনের বিরুদ্ধে এই আদালতেই মামলা করেন তসলিমা। চার আসামিই পলাতক থাকায় তাদের অনুপস্থিতিতেই মামলার বিচার চলছে। অন্য আসামিরা হলেন- মঞ্জু,সাব্বির, নাসির উদ্দিন টুকু। তারা সবাই আবুল কালামের আত্মীয়। মামলার নথিপত্রে দেখা যায়, মামলা দায়েরের সময় আবুল কালাম আজাদ পুলিশের বরিশাল রেঞ্জ অফিসে স্টাফ অফিসার (২) হিসাবে কমর্রত ছিলেন। নথিপত্রে দেখা যায়, আসামিরা হাইকোর্ট থেকে একবার জামিন নিয়েছিলেন। কিন্তু জামিনের মেয়াদ পার হয়ে গেলেও তারা এ আদালতে হাজির না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।
তসলিমা জানান, ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে পুলিশ কর্মকর্তা আবুল কালামের যোগাযোগ হয় ফেইসবুকের মাধ্যমে। এরপর ঘনিষ্ঠতার এক পর্যায়ে পরের বছর ১ জুলাই তাদের বিয়ে হয়। মামলায় অভিযোগ করা হয়, বিয়ের পর স্ত্রীর কাছ থেকে ওই পুলিশ কর্মকর্তা প্রথমে ৩ লাখ ও পরে ৫ লাখ টাকা যৌতুক নেন। এরপর গত বছরের ৮ অক্টোবর চাকরির বদলির জন্য আরো ২ লাখ টাকা চান। তা না দেওয়ায় বাদিকে হারপিক খাইয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়। টাকার দাবিতে মারধরও করা হয় বলে তসলিমার অভিযোগ।