স্টাফ রিপোর্টার ॥ জনবল থেকে প্রয়োজনীয় উপকরনাদী সবই রয়েছে। রানওয়ে প্রস্তুত রয়েছে সর্বক্ষন। সামরিক বিমানসহ আসে বেসামরিক প্রশিক্ষণ বিমান। কেবল তিন বছর ধরে আসেনা কোন বানিজ্যিক বিমান। ফলে বরিশাল অঞ্চলের যাত্রীদের যেমন সমস্যা হচ্ছে, তেমনি সম্ভাবনা থাকা সত্বেও বরিশালসহ পুরো দক্ষিণাঞ্চলে গড়ে উঠছেনা বড় কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুরে ১৬০ একর জমির ওপর নির্মিত বিমান বন্দরটি ১৯৯৫ সন থেকে বিমান চলাচলের জন্য উপযোগী করে তোলা হয়। ওই বছরই এ্যারোবেঙ্গল এয়ারলাইন্সের ১৭ সিটের দুটি ওয়াই-১২ বিমান দিয়ে বরিশাল-ঢাকা রুটে বানিজ্যিক ভাবে বিমান চলাচলের যাত্রা শুরু হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে পারাবাত এয়ারলাইন্স, জিএমজি বিমান বাংলাদেশ এবং ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের বিমান বরিশাল-ঢাকা রুটে চলাচল করে আসছিলো। ২০০৯ সনের ৫ মে হঠাৎ করে লাভজনক এই রুটে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বরিশাল বিমান বন্দরের ব্যবস্থাপক মোঃ হানিফ গাজী বলেন, বিমান অবতরণের জন্য বরিশাল বিমান বন্দর সার্বক্ষনিক প্রস্তুত রয়েছে। এখানে জনবল থেকে শুরু করে অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই বলেই তিনি মন্তব্য করেন। তিনি আরো বলেন, ৬ হাজার ফুট দৈঘ্য রানওয়ে, টাওয়ার ইক্যুপমেন্ট, সেফটি সার্ভিসের পাশাপাশি বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ৬৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ১৫ জন আনসারসহ বর্তমানে ৭৮ জন স্টাফ বরিশাল বিমান বন্দরে কর্মরত রয়েছেন। তারপরেও বিমান আসছেনা বরিশালে। মাত্র ২৭ মিনিটের ব্যবধানে ব্যবসায়ীরা যেখানে বরিশাল থেকে ঢাকা যেতে পারতেন সেখানে এখন ৭ থেকে ৮ ঘন্টা সময় ব্যয় করে বাস অথবা লঞ্চযোগে ওইসব ব্যবসায়ী ও শৌখিন যাত্রীদের ঢাকায় যাতায়াত করতে হচ্ছে।
বিমান যাত্রী আয়শা তৌহিদ লুনা ও ডাঃ সৈয়দ হাবিবুর রহমান জানান, বিমান চলাচল বন্ধ থাকার সুযোগে ব্যবসায়ী ও শৌখিন যাত্রীরা জিম্মি হয়ে পড়েছে বাস ও লঞ্চ মালিক সিন্ডিকেটের কাছে। বরিশাল চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি এবায়দুল হক চাঁন বলেন, শিল্প ক্ষেত্রে বরিশাল অঞ্চলে রয়েছে অপার সম্ভাবনা। কেবল দ্রুত ও সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার কারনেই বিনিয়োগকারীরা এখানে আসতে চায়না। বরিশালের নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব ডাঃ মিজানুর রহমান জানান, লাভজনক এ রুটে বিমান চলাচল সচল রাখার দাবিতে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করেও কোন সুফল মেলেনি। তিনি আরো বলেন, বিমান চলাচল বন্ধ থাকার কারনে একদিকে যাত্রীদের যেমন সমস্যা হচ্ছে, তেমনি সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। অনেকটা অলস সময় কাটাচ্ছে বিমান বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তার চেয়েও বড় সমস্যা হচ্ছে, ক্রমেই শিল্পক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চল। পূনরায় এ রুটে বিমান চলাচল সচল করার জন্য তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।