ওমর আলী সানি, আগৈলঝাড়া ॥ বরিশালের আগৈলঝাড়া-গৌরনদী-পয়সারহাট মহাসড়ক উন্নয়নে নির্মাণ কাজ ধীরগতি ও নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে। একারণে স্থানীয়দের মাঝে চরম ােভ বিরাজ করছে। জানাগেছে, বরিশালের আগৈলঝাড়া-গৌরনদী-পয়সারহাট মহাসড়ক নির্মাণের জন্য ২০০৯ সালে টেন্ডার আহ্বাণ করা হয়। টেন্ডারে উপজেলা সদর থেকে পয়সারহাট পর্যন্ত ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজটি পায় ফরিদপুরের সেঙ্গুইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানী লিমিটেড। ২০১০সালের অক্টোবর মাসে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। কার্যাদেশে ২০১১ সালের মধ্যে মহাসড়ক উন্নয়ন কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সমস্যার বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে এপর্যন্ত পয়সারহাট থেকে আগৈলঝাড়া সদর সড়ক নির্মাণের অর্ধেক কাজও শেষ করতে পারেনি সেঙ্গুইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানী লিমিটেড। আগৈলঝাড়া থেকে পয়সারহাট পর্যন্ত মহাসড়কের নির্মাণ কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। তবে বিশ্বস্ত একটি সূত্রে জানা গেছে, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান প্রভাবশালী হওয়ায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বে থাকা এসও’র কথার কোন গুরুত্ব দিচ্ছেননা তারা। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সাইট ম্যানেজার নিখিল চন্দ্রকে দিয়ে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যাবহার করানো অভিযোগ করেছেন স্থানীয় জনসাধারণ। তাকে এব্যাপারে বারবার এলাকাবাসী বলেও কোন সুফল হয়নি। ওই সড়কের কাজ দেখার দায়িত্বে রয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের ওয়ার্ক এসিস্ট্যান্ট কুতুব মিয়া। তিনি নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করা দেখেও কোন ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। একই সড়কের গৌরনদী থেকে আগৈলঝাড়া সদর অংশে ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে মহাসড়কের উন্নয়ন কাজ ধীরগতিতে চালাছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওটিবিএল কোম্পানী। এই মহাসড়কে বর্তমানে যানবাহন চলাচলে সমস্যাসহ প্রতিদিনই ছোট বড় দূর্ঘটনা ঘটছে। তবে এই মহাসড়কের কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে তা আদৌ কেউ বলতে পারছেনা। এ সরকারের আমলে নির্মাণ কাজ শেষ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন স্থানীয় জনগনসহ মতাসীন দলের নেতাকর্মীরাও। উলেখ্য, গত ২০০০ সালে তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকারের সময় এসড়কটিকে মহাসড়কে উন্নীত করে নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আব্দুলাহ্। সরকার পরিবর্তনের পর বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসে আর এ মহাসড়কের উন্নয়ন কাজ বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ প্রতিক্ষা পরে বর্তমান সরকার জনগনের দূর্ভোগ দেখে কাজটি শুরু করে। আগৈলঝাড়া-গৌরনদী-গোপালগঞ্জ মহাসড়কের উন্নয়ন কাজ শেষ হলে বরিশালের সাথে যশোর ও খুলনার দূরত্ব ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার কমে যাবে। মহাসড়কটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি এসব এলাকার জনগণের জীবনযাত্রার মান, সামাজিক রীতি-নীতি ও ব্যবসা-বানিজ্যে ইতিবাচক উন্নতি হবে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিকের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। এব্যাপারে বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ মোহাম্মদ সামস্ মোকাদ্দেস সাংবাদিকদের জানান, আমি সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কোন অভিযোগ এখনও পাইনি। কাজ দ্রুত গতিতে চলছে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে কাজ সমাপ্ত হবে। ভূমি অধিকগ্রহনের টাকা ডিসি অফিসের মাধ্যমে জমির মালিকদের পরিশোধ কাছেন।