হরতাল সফল করতে মাঠে থাকছে বিএনপি ॥ প্রতিহত করবে আওয়ামীলীগ

নেতা-কর্মীরা স্ব-স্ব উপজেলার রাজপথে নামবেন। আর হরতাল প্রতিহত করতে একইদিন মাঠে থাকবেন পুলিশ প্রসাশনসহ আওয়ামীলীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। বিশ্বস্ত সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।


সূত্রমতে, ৩০ নবেম্বরের হরতালকে সফল করতে গৌরনদী উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব আবুল হোসেন মিয়ার উদ্যোগে গত শনিবার এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সমাবেশে সকল বাঁধাবিঘ্নকে উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে হরতাল পালনের জন্য বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা রাজপথে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এরমাত্র একদিন পূর্বে (শুক্রবার) বিকেলে গৌরনদী বাসষ্ট্যান্ডে এক স্মরন সভায় বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস জনগনকে সাথে নিয়ে ইস্যুবিহীন হরতাল প্রতিহতের ঘোষনা দিয়েছেন। তার এ ঘোষনার পরই উপজেলা আওয়ামীলীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা হরতালের দিন রাজপথে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে গৌরনদী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মাহবুব আলম বলেন, হরতালের নামে কেহ যেন বিশৃংখলা ও যানমালের ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য তারা হরতালের দিন রাজপথে থাকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

অপরদিকে গত শনি ও রবিবার হরতালের সমর্থনে বরিশাল জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে মিছিল বের করা হলে পুলিশ দু’দিনই মিছিলে বাঁধা প্রদান করে। এসময় পুলিশের সাথে বিএনপির সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার-এমপি অভিযোগ করে বলেন, তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ ও তাদের সহযোগী হিসেবে সরকার দলীয় ক্যাডাররা হামলা চালিয়েছে। আওয়ামীলীগ নেতারা তার এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। অপরদিকে পুলিশ ও আওয়ামীলীগ সমর্থকদের হামলার প্রতিবাদে মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম আহবায়ক আহসান হাবিব কামাল রবিবার বিকেলে বরিশাল প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন। এ খবর শুনে কোতয়ালী থানা ও আমর্ড পুলিশ প্রেসক্লাবের প্রবেশ পথ অবরুদ্ধ করে রাখে। এ সময় প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক লিটন বাসারসহ অন্যান্য সাংবাদিকরা পুলিশের কাছে পথঅবরুদ্ধ করে রাখার কারন জানতে চাইলে পুলিশ কর্মরত সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়ে বেধড়ক লাঠিচার্জ পেটা করে। পুলিশের লাঠিচার্জে ১০ জন সাংবাদিক আহত হন।

এ দিকে ৩০ নবেম্বরের হরতাল নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ ও ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন, সোহেল সরদার, সিদ্দিক আহম্মেদসহ একাধিক ব্যবসায়ীরা বলেন, হরতাল শুধু মানুষের ভোগান্তি বাড়ায়। বিএনপির নেতারা মুখে জনগনের কথা বললেও প্রকৃতভাবে বাড়ি নিয়েই এ হরতাল ডাকা হয়েছে। তারা বিএনপির নেতৃবৃন্দের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, জনগনের মঙ্গলের জন্যই যদি হরতাল ডাকা হয়, তাহলে হরতালের দিন সাধারন জনগনের যানমালের কোন ক্ষতি যেন না হয়। সর্বপরি তাদের মতে হরতালের দিন বরিশালসহ গোটা উপজেলায় বড়ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।