হঠাৎ ভয়ঙ্কর একটা দু:স্বপ্নে ধড়্ফড়্ করে ওঠে মমতা। বুকটা ওর ধুক্ধুক্ করে উঠেছে। র্থর্থ করে কাঁপছে সারাশরীর। উঠে বসলো বিছানায়। সকাল না সন্ধ্যে, মুহূর্তের জন্য ঠাহরই করতে পাচ্ছিল না। চোখ পাকিয়ে তাকায় চারিদিকে। তখনও আবছা অন্ধকার বাইরে। দিগন্তের পূর্ব প্রান্তর জুড়ে ঊষার ক্ষীণ আলোর আভায় ক্রমশ লাল হয়ে উঠছে। পিছন ফিরতেই দ্যাখে, খোকনের ঘরে আলো জ্বলছে। দরজা-জানালা খোলা। পাশে বাথরুমে ঝর্ণার মতো ঝিরঝির করে পাইপ কলের জল পড়ছে, শোনা হচ্ছে। -‘খোকা স্নান করছে নিশ্চয়ই! কিন্তু এতো ভোরে! খোকা আজ যাচ্ছে কোথায়!’
ন্বগতোক্তি করতে করতে বিছানা থেকে নেমে মমতা দ্রুত গিয়ে ঢুকলো খোকনের ঘরে। ঢুকেই নজরে পড়ে, একটা কাপড়ের পোটলায় কি যেন বাঁধা, বিছানার পাশে টি-টেবিলে পড়ে আছে। হঠাৎ মনে হয়েছিল, কোনো জন্তু-জানোয়ার ঢুকে পড়েছে জানালা দিয়ে। টেবিলল্যাম্পের আড়ালে ঘুপচি মেরে বসে আছে। আকারে বেশ বড়। খানিকটা বিস্ময় নিয়ে মমতা কাছে এগিয়ে গেল। গিয়ে দেখল, কোন প্রাণী নয়, সেটি একটি বস্তু। খুব ভারী জিনিসই মনে হচ্ছে! -‘আশ্চর্য্য, এভাবে বেঁধে রাখার মতো খোকার এমন কি জিনিস থাকতে পারে, যে ওর মা জানবে না!’ বলল মনে মনে।
স্বাভাবিক কারণে সেটা খুলে দেখার বড্ড কৌতূহল হলো মমতার। কিন্তু পোটলাটা হাতে নিয়ে দেখতেই ও’ চমকে ওঠে, -‘মা, তুমি এঘরে, কি করছ? সর্বণাশ, ওটা রেখে দাও শিগ্গির!’
বলে মাথা মুছতে মুছতে বাথরুম থেকে দ্রুত এগিয়ে আসে খোকন। খানিকটা বিরক্তি প্রকাশ করে বাজপাখীর মতো একরকম ছোঁ মেরে কেড়ে নিলো কাপড়ের পোটলাটা। উপেক্ষা করে বলল, -‘তুমি খামাখা ঘুম থেকে উঠে এলে! আজ আমাদের ইউনিভার্সিটিতে খুব জরুরী একটা মিটিং আছে! আর্লি মর্নিংএ এ্যাটেন্ড্ করতে হবে সবাইকে, তাই..! যাও, যাও, গিয়ে শুয়ে পড়ো গে যাও!
Comments are closed.