নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের বাজারগুলোতে পানের আকাল দেখা দিয়েছে। ফলে এখন প্রতি বিড়া (৭২টি) পান তিন’শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত শীত মৌসুমে অস্বাভাবিক কুয়াশায় এতদাঞ্চলের পান বরজগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাজারে বর্তমানে পানের সংকট চলছে। বাজারে পান পাওয়া যাচ্ছে না বললেই চলে। যাওবা পাওয়া যাচ্ছে তার দাম স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক গুন বেশি।
গতকাল সোমবার বরিশালের সর্ববৃহৎ পান বাজার গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, যেখানে প্রতিদিন সকালে তিন থেকে চার’শ পান চাষী তাদের বরজের পান বিক্রি করতে আসতেন। সেখানে কেবল দশজন পান চাষী সামান্য কিছু পান নিয়ে তা বিক্রি করতে এসেছেন। চন্দ্রহার গ্রামের পান চাষী আশীষ চন্দ্র জানান, গত দু’মাস ধরে পান পাতা বিবর্ণ হয়ে ঝড়ে পড়ে বরজগুলো অনেকটা পানশূণ্য হয়ে পড়েছে।
ক্রেতারা জানিয়েছেন, বড় এবং মাঝারি আকারের পান বাজারে নেই। অন্যান্য বছর যে পান ফেলে দেয়া হতো সে আকারের ছোট ছোট পান তারা আড়াই থেকে তিন’শ টাকা দরে প্রতি বিড়া ক্রয় করে ক্রেতাদের কাছে একটি খিলি পান ৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন।
শোলন গ্রামের পান চাষী বিলন বাড়ৈ জানান, তার দু’টি বরজের মধ্যে একটি বরজে সামান্য কিছু পান রয়েছে। অবশিষ্ট পান ঝড়ে গেছে। তার মতো সকল পান চাষীরাই ব্যাপক লোকসানের মধ্যে রয়েছেন। গৌরনদী, আগৈলঝাড়া ও উজিরপুর উপজেলার হাজার-হাজার পানের বরজের এ করুন অবস্থার জন্য পান চাষীদের এখন পথে বসার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাজারে পান না পাওয়ায় ক্রেতারা পরেছেন বিপাকে। পান চাষীরা সহজ শর্তে ঋণ পেয়ে ঘুরে দাঁড়াবার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জোর দাবি করেছেন।
বরিশাল জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চল থেকে প্রতিবছর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিদেশেও রপ্তানী করা হয়। এ বছরের শীত মৌসুমে অস্বাভাবিক কুয়াশার কারনে পানের বরজগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে পানের এ আকাল দেখা দিয়েছে।