নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ বরিশালে বখাটেদের হামলায় জিলা স্কুলের দশম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্র সামি রাফি ইনান (১৯) খুন হয়েছে। সে নগরীর বাংলা বাজার বড় বাড়ির লেন এলাকার বাসিন্দা ঠিকাদার জাহাঙ্গীর হোসেন কানুর পুত্র। এ ঘটনায় মহানগর জাতীয় পার্টির (এরশাদ) সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম গফুরসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে স্কুল ছাত্রের হত্যকারীদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গতকাল রবিবার বিকেলে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে জিলা স্কুলের শিক্ষার্থীরা। এরপূর্বে সকাল এগারোটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত দু’ঘন্টা বাংলাবাজারের সকল দোকানপাট বন্ধ রেখে লাশ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে সড়ক অবরোধ করেছে এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীরা।
নিহত ইনানের মা মমতাজ বেগম ও বড় বোন ফাকেয়া আক্তার প্রমি জানান, শনিবার বিকেলে ইনান তার বন্ধুদের সাথে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের মাঠে ক্রিকেট খেলতে যায়। সেখানে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বন্ধুদের মধ্যে তার বাকবিতন্ডা হয়। সন্ধ্যায় বাংলা বাজার আরশেদ আলী কনট্রাক্টর গলির সম্মুখে ইনানকে একা পেয়ে বাকবিতন্ডার জেরধরে জাতীয় পার্টির নেতা রফিকুল ইসলাম গফুরের উপস্থিতিতে তার বখাটে পুত্র রিশাদ এবং রিফাত ও তাদের সহযোগী জুম্মান হোসেন রানা, হাসান, শিমন অর্তকিত ভাবে ইনানকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। স্থানীয়রা আশংকাজনক অবস্থায় ইনানকে উদ্ধার করে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকেরা ওইদিন রাতে ইনানকে ঢাকায় প্রেরন করেন। ঢাকায় নেয়ার পথে শনিবার রাত ১২টার দিকে কাওরাকান্দি এলাকায় বসে ইনান মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে। ইনানের মৃত্যুর খবর বাংলাবাজার এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী গফুরের বাসায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। কোতোয়ালী থানা পুলিশ ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে রিফাত ও রিশাতকে না পেয়ে বাংলাবাজারের নিজ বাসা থেকে গফুরকে আটক করে। গতকাল রবিবার দুপুরে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল থেকে হামলাকারী আবির ও মেডিকেলের পেছন থেকে সৌরভকে এলাকাবাসী আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এরমধ্যে সৌরভকে মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল রবিবার সকালে নিহতের পিতা বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মুজাহিদুল ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিফাত ও রিশাতের পিতা রফিকুল ইসলাম গফুরকে আটক করা হয়েছে। কোতোয়ালী থানার ওসি শাখাওয়াত হোসেন জানান, অন্যান্য আসামিদেরও গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্ঠা অব্যাহত রয়েছে।