বরিশালের আকাশে ডানা মেললো ইউনাইটে এয়ারওয়েজের বিমান

বিশেষ প্রতিনিধি ॥  প্রতিক্ষার পাঁচ বছর পর ফের বরিশালের আকাশে উড়ল বিমান। বরিশাল-ঢাকা রুটের আকাশ পথে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ (বিডি) লিমিটেড’র ফ্লাইট সার্ভিসের জমকালো উদ্বোধন করেছেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী কর্নেল (অবঃ) ফারুক খান-এমপি।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী কর্নেল (অবঃ) ফারুক খান-এমপি বেলা পৌঁনে বারোটায় ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের বিমানে করে বরিশাল বিমান বন্দরে এসে পৌঁছেন। এখানে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন পুলিশ বাহিনী। এরপর বিমান বন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে বরিশাল অঞ্চলের কুয়াকাটাকে ঘিরে একটি পর্যটন এলাকা গড়ে তোলার। এজন্য মাস্টার প্লানও তৈরী করা হয়েছে। যা বাস্তবায়নের জন্য কাজ চলছে। এসময় তিনি ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের চেয়ারম্যানকে যাত্রীদের সেবার মানের দিকে লক্ষ্য রাখতে বলেন। একই সাথে তিনি আশা করেন, সপ্তাহে দু’দিন নয় পর্যায়ক্রমে প্রতিদিনই যাতে করে এই রুটে বিমান চালানো হয় সে ব্যবস্থা করার জন্য। এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব শওকত হোসেন হিরন, সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, সৈয়দ মনিরুল ইসলাম মনি, গোলাম কিবরিয়া টিপু প্রমুখ। প্রাথমিক ভাবে এ বিমানের ফ্লাইট সপ্তাহে দু’দিন বৃহস্পতিবার বিকেল ও রবিবার সকালে ঢাকার হযরত শাহজালাল (রহঃ) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বরিশাল বিমান বন্দরে যাত্রী পরিবহন করবেন। যাত্রী প্রতি ভাড়া নির্ধারন করা হয়েছে ৩ হাজার টাকা।

এদিকে, বেসরকারি বিমানের সার্ভিস চালুকে স্বাগত জানিয়ে এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, খুব শীঘ্রই ঢাকা-বরিশাল রুটে পুনরায় জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস্ আবার ডানা মিলবে। এ লক্ষ্যে গত ২৪ মার্চ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে ঢাকা-বরিশাল আকাশপথে বাংলাদেশ বিমানের দু’টি ফ্লাইট চালুর ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্তনেয়া হয়েছে। মে মাস থেকে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট চালুর কথা জানালেও দিনক্ষণ এখনো ঠিক করা হয়নি বলেও প্রতিমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

উল্লেখ্য, বিমান শূন্য বরিশাল বিমানবন্দর গত ৫ বছরে গো-চারণ ভূমিতে পরিনত হয়েছিলো। ১৯৯২-৯৩ অর্থবছরে প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর রহমতপুর এলাকায় ১’শ ফুট প্রশস্ত ও ৬ হাজার ফুট দীর্ঘ বরিশাল বিমানবন্দর নির্মাণ করা হয়। ১৯৯৫ সনের ৩ ডিসেম্বর ঢাকা-বরিশাল আকাশপথে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান চলার মাধ্যমে এ বিমানবন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৬ সনের শেষের দিকে লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয় জাতীয় পতাকাবাহী বিমান চলাচল। মাঝে এয়ার পারাবাত ও জিএমজি এয়ারলাইনস ঢাকা-বরিশাল আকাশপথে চলাচল করলেও তাও লোকসানের অজুহাতে একসময় বন্ধ হয়ে যায়। সর্বশেষ ২০০৮ সনের ২৮ সেপ্টেম্বর চালু হয় ৩৭ সিটের বেসরকারি সংস্থার ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের ফ্লাইট। তাও লোকসানের অজুহাতে কারণে ২০০৯ সনের ৫ মে বন্ধ করে দেয়া হয়। সেই থেকে কোন বিমানই বরিশাল বিমানবন্দরের রানওয়ে স্পর্শ করেনি।