স্কুলের ভবন ধ্বসের আপডেট সংবাদ : ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে করা হয়েছে সীলগালা

মোঃ জামাল উদ্দিন ॥  বরিশালের গৌরনদী উপজেলার হাপানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্র্ণ ভবনের ছাঁদের আস্তর খসে ও ভীম ধ্বসে পরে আজ রবিবার সকালে আট শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এছাড়া গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আহত হয়েছেন আরো দু’শিক্ষক। রবিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্কুল ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে সীলগালা করে দিয়েছেন।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আজ রবিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে ক্লাশ চলাকালীন সময় ওই ভবনের ছাদের আস্তর ও একটি ভীমের আংশিক ধ্বসে পরে কমপক্ষে আট শিক্ষার্থী আহত হয়। এরমধ্যে গুরুতরভাবে আহত হয় প্রথম শ্রেনীর ছাত্র মনির হোসেন, দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র আনিসুর রহমান, রবিন ও অনিকুল। এরপূর্বে গত ২৪ এপ্রিল প্রধান শিক্ষক এস.এম খলিলুর রহমানের মাথার ওপর আস্তর খসে পরে তিনি আহত হন। এর কয়েকদিন আগে আহত হন সহকারি শিক্ষক মাওলানা ইউসুব আলী।

প্রধান শিক্ষক এস.এম খলিলুর রহমান জানান, স্কুল ভবনটি দীর্ঘদিন থেকে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পরেছে। গত দু’বছর পূর্বে পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্রী সাদিয়া আক্তারের মাথায় ছাদের আস্তর খসে পড়ে সে গুরুতরভাবে আহত হয়। ওই ঘটনার পর জরাজির্ণ ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষনা করে নুতন ভবন নির্মানের দাবি জানিয়ে তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অসংখ্যবার আবেদন করেও কোন সুফল পাননি। স্থানীয় ছাত্র অভিভাবক ফারুক খান ক্ষোভের সাথে বলেন, আমাদের কথা কেউ শোনেনা। শিক্ষক ও আমাদের সন্তানদের কথা ভেবে আমরা নিজেরা চাঁদা তুলে খসেপরা অংশ মেরামত করেছি কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি। ভবন ধ্বসে পরে প্রাণহানির আশংকার ভয়ে এবছর অসংখ্য শিক্ষার্থীরা অন্য স্কুলে ভর্তি হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

আজ রবিবার ভবনটি পরিদর্শনে এসে গৌরনদী উপজেলা এলজিইডি অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ বজলুর রহমান জানান, ভবনটি পুরোপুরি ব্যবহারের অযোগ্য। স্কুল ভবনের ছাঁদের আস্তর ও ভীম ধ্বসে শিক্ষার্থীদের আহত হওয়ার খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক স্কুলটি পরিদর্শনে আসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিদারে আলম মোহাম্মাদ মাকসুদ চৌধুরী, শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম, ওসি আবুল কালাম ও মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু। নির্বাহী কর্মকর্তা তাৎক্ষনিক স্কুল ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষনা করে সীলগালা করে দিয়ে একটি অস্থায়ী স্কুল ঘর নির্মানের জন্য ১০ বান্ডিল টিন বরাদ্দের ঘোষনা দেন এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু নিজস্ব অর্থায়নে পুরো অস্থায়ী ঘরটি নির্মাণ করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

জানা গেছে, গৌরনদী উপজেলা এলজিইডি বিভাগ থেকে ১৯৯২-১৯৯৩ অর্থ বছরে হাপানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাকা ভবন নির্মানের জন্য প্রকল্প গ্রহন করা হয়। ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে মেসার্স হারুন এন্টারপ্রাইজ ভবন নির্মানের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন।