বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ক্রমেই উত্তাল হয়ে উঠেছে মেঘনা ও কালাবাদর নদী। আর এরইমধ্যে প্রতিদিন বরিশালের লাহারহাট থেকে ভোলার ভেদুরিয়া লঞ্চঘাট পর্যন্ত নৌ-পথে যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে অনুমোদনহীন অবৈধ স্পিডবোট ও ট্রলার। প্রতিদিন অবৈধ এসব নৌ-যানে সহস্রাধীক যাত্রীরা চলাচল করছে। ফলে যেকোন সময় উত্তাল মেঘনা ও কালাবাদর নদী পাড়ি দেয়ায় ঘটতে পারে বড় ধরনের নৌ-দুর্ঘটনা।
অপরদিকে অবৈধ এসব যানবাহন চলাচলের জন্য বিআইডব্লিউটিসি’র অনুমোদিত লঞ্চঘাটের পাশেই বিকল্প ঘাট ইজারা দিয়েছেন স্থানীয় টুঙ্গিবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ বাহাউদ্দিন মিয়া। অবৈধ ওই ঘাট ইজারা নিয়েছেন মোহসিন হাওলাদার নামের চেয়রম্যানের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি। সে টিকেট ছাঁপিয়ে প্রতিদিন সহস্রাধীক যাত্রীদের কাছ থেকে তিনটাকা হারে আদায় করে নিচ্ছেন প্রচুর অর্থ। ইতোমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ট্রলার ঘাট ইজারা দেয়ার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থা বরিশাল জোন।
সংস্থার চেয়ারম্যান আলহাজ গোলাম মাওলার পক্ষ থেকে দায়ের করা ওই অভিযোগে (স্মারক নং বিআইডব্লিউ (পিসি) এবজ ১৩/৪৮৯) উল্লেখ করা হয়েছে, লাহারহাট লঞ্চঘাটের পাশ্ববর্তী জায়গা টুঙ্গিবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কর্তৃক ইজারা দেয়ায় সেখান থেকে অবৈধভাবে ট্রলার ও স্পীডবোট যাত্রী নিয়ে চলাচল করে। ফলে বরিশাল-ভোলাসহ অন্যান্য নৌ-পথগামী লঞ্চগুলো যাত্রী না পেয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাছাড়া যাত্রীরা সময় বাঁচাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত ট্রলার ও স্পীডবোটে চলাচল করায় যেকোন সময় বড় ধরনের নৌ-দুুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র অনুমোদিত ঘাট ইজারাদার এনামুল হক সাগর জানান, তিনিও বিআইডব্লিউটিএ’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে একিই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি বলেন, অনুমোদিত ঘাটের পাঁচ’শ গজের মধ্যেই টুঙ্গিবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অবৈধভাবে আরেকটি ঘাট ইজারা দেয়ায় আমি যেমন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি, তেমনি যাত্রীরাও রয়েছেন জীবনের ঝুঁকিতে। জরুরি ভিত্তিতে বিষয়টির প্রতিকার কামনা করেন তিনি।
বিআইডব্লিউটিএ’র অনুমোদিত লঞ্চঘাটের পাশে অবৈধ নৌ-যান চলাচলের জন্য আরেকটি ঘাট ইজারা দেয়ার অভিযোগের ব্যাপারে বরিশাল সদর উপজেলার টুঙ্গিবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ বাহাউদ্দিন মিয়া বলেন, আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের নিয়মানুযায়ী ওই ঘাটের ইজারা দেয়া হয়েছে। এখানে কারো কোন আপত্তি থাকলে আইনগতভাবে মোকাবেলা করতে পারে। আমি যেটা করেছি ইউনিয়ন পরিষদের আয় বৃদ্ধির জন্যই করেছি।
এ ব্যাপারে বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা মোঃ শহীদ উল্লাহ বলেন, বিআইডব্লিউটিএ’র অনুমোদিত ঘাটের এক কিলোমিটার এলাকার মধ্যে অন্যকারো ঘাট ইজারা দেয়ার কোন বৈধতা নেই। এ বিষয়ে আমরা একাধিক লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। খুব শীঘ্রই বিষয়টির তদন্ত করে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।