প্রেমানন্দ ঘরামী ॥ বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন ও ঘূর্ণিঝড় মহাসেন আতংকে যখন সবাই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছিলেন ঠিক তখনই নিয়মবর্হিভূত ভাবে ৩ কোটি ২৮ লক্ষ ৫৭ হাজার ৭৭৫ টাকার টেন্ডার নিয়ে সম্পূর্ণ লুকোচুরি খেলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দরপত্রের নিয়মানুযায়ী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধীকারিদের না জানিয়েই মোটা অংকের টাকা উৎকোচের বিনিময়ে গোপনে কতিথ লটারীর মাধ্যমে কতিপয় প্রভাবশালীদের মাঝে কাজগুলো বন্টন করা হয়েছে। এ নিয়ে ঠিকাদারদের মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সাধারন ঠিকাদাররা পূর্ণরায় টেন্ডার কিংবা ওপেন লটারী করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারের জিওবি ফান্ডের আই.আর.আই.ডি.পি প্রকল্পের অধীনে লোকাল গভারমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং ডেভলেপমেন্ট বরিশাল এলজিইডি অফিস থেকে গত ১৬ এপ্রিল প্রায় ৩ কোটি ২৮ লক্ষ ৫৭ হাজার ৭৭৫ টাকার টেন্ডার আহবান করা হয়। ওই টেন্ডারে গৌরনদী উপজেলার ৫টি, বানারীপাড়ার একটি, হিজলার একটি ও বরিশাল সদরের একটি রাস্তা নির্মান কাজ রয়েছে। ঘোষিত সিডিউল অনুযায়ী গত ১৫ মে (বুধবার) শেষদিনে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলার ২০টি সহ বিভিন্ন উপজেলা ও বরিশাল সদরের ঠিকাদাররা টেন্ডার দাখিল করেন।
আজ সোমবার দুপুরে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মামুন ট্রেডার্সের স্বত্তাধীকারি মোঃ মামুন মোল্লা, মেসার্স শাওন বিল্ডার্সের এস.এ শাওন, মেসার্স পিযুষ এন্টারপ্রাইজের অভিলাষ নন্দিসহ মেসার্স শরীফ এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স আশা এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স তানভীন এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স সেলিম এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স নয়ন এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স সোনার বাংলা ট্রেডার্স, মেসার্স এলাহী ট্রেডার্স, মেসার্স আনন্দ লাল সমদ্দার এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স কাজী ট্র্রেডার্স, মেসার্স চাকলাদার এন্ড সন্স, মেসার্স জিএম কন্সট্রাকশনের স্বত্তাধীকারিরা অভিযোগ করেন, গত ১৬ মে (বৃহস্পতিবার) টেন্ডারের লটারী হওয়ার কথা থাকলেও ওইদিন ঘূর্ণিঝড় মহাসেন আতংকে ও প্রবল বর্ষণের কারনে সকল কর্মকান্ড স্থগিত করা হয়। ঠিকাদার অভিলাষ নন্দি জানান, নিয়মানুযায়ী পত্রিকার মাধ্যমে পরবর্তী সময় বা তারিখ কিংবা সিডিউলের সাথে জমা দেয়া ঠিকাদারদের মোবাইল ফোনে বিস্তারিত জানানোর বিধান রয়েছে। ঠিকাদার মামুন মোল্লাসহ অসংখ্য ঠিকাদাররা অভিযোগ করেন, গত ১০দিনেও তাদের কিছু না জানানোর ফলে রবিবার তারা অফিসে গিয়ে জানতে পারেন গত ১৯ মে লটারী মাধ্যমে ওই কাজ বন্টন করা হয়েছে। ঠিকাদাররা অভিযোগ করেন, সম্পূর্ণ নিয়মবর্হিভূত ভাবে সংশ্লিষ্ট কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজসে কতিপয় ঠিকাদারদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা উৎকোচের বিনিময়ে চাঁপা লটারীর মাধ্যমে কাজগুলো বন্টন করা হয়েছে। ফলে ক্ষুব্ধ ঠিকাদাররা পূর্ণরায় টেন্ডার কিংবা ওপেন লটারী করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
ক্ষুব্ধ ঠিকাদারদের অভিযোগ অস্বীকার করে বরিশাল এলজিইডি’র প্রকৌশলী মোঃ রুহুল আমীন খান বলেন, নিয়মতান্ত্রিক ভাবেই লটারী করা হয়েছে।