সিটি নির্বাচন : হিরনকে জাতীয় পার্টির সমর্থন

হাসান মাহমুদ, বিশেষ প্রতিনিধি ॥  সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আজ বুধবার বিকেলে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) নির্বাচনে ১৪দল সমর্থিত সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী সদ্য বিদায়ী মেয়র আলহাজ্ব শওকত হোসেন হিরনকে সমর্থন দিয়েছে জাতীয়পার্টি। বরিশাল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ সমর্থনের কথা জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে ও পার্টির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক আধুনিক নগর উন্নয়নের একমাত্র দাবিদার শওকত হোসেন হিরনকে সমর্থন দেয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরো উল্লেখ করা হয়, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি এককভাবে কোন প্রার্থী না দেয়া এবং যেহেতু এটি একটি স্থানীয় নির্বাচন সেহেতু স্থানীয় উন্নয়নের কথা চিন্তা করে আমরা দল নয়; ব্যক্তি হিরনকে সম্মিলিত ভাবে সমর্থন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পার্টির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা টেলিভিশন প্রতীকের জন্য ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করে শওকত হোসেন হিরনকে পূনরায় নির্বাচিত করার লক্ষ্যে পার্টির মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন হাবিলকে আহবায়ক ও সদর উপজেলার আহবায়ক বশির আহম্মেদ ঝুনুকে সদস্য সচিব করে ইতোমধ্যে একটি মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক, মহানগর জাপার সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন, সম্পাদক আলতাফ হোসেন ভাট্টি, সহসভাপতি ডা. র ইসলাম সিরাজী, রুস্তুম আলী খান, সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিল হোসেন, উপজেলা শাখার আহবায়ক বশির আহম্মেদ ঝুনু, জাহাঙ্গীর হোসেন মল্লিকসহ জেলা ও মহানগর জাপার নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। ওইদিন থেকেই তারা হিরনের টেলিভিশন মার্কার সমর্থনে নগরীতে গণসংযোগে নেমেছেন। এ নগরীতে জাপার ৩০ হাজার ভোট রয়েছে।

আরমাত্র কয়েকদিন পরেই অনুষ্ঠিত হবে এ সিটির নির্বাচন। হিরনকে জাপার সমর্থন দেয়ার পরেই পাল্টে গেছে ভোটের হিসেব নিকেস। তাই শেষ সময়ে পুরোদমে জমে উঠেছে প্রচার-প্রচারণা ও ভোটারদের আলোচনার ঝড়। এখানে তিনজন মেয়র পদপ্রার্থী নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়ালোও মুল লড়াই হবে টেলিভিশন ও আনারসে। তাই বরিশালের ভোটারদের মধ্যে চলছে চুলচেঁড়া বিশ্লেষন-আনারস না টেলিভিশন? পাড়া-মহল্লা, বাজার-ঘাট, দোকানপাট থেকে শুরু করে চায়ের দোকান পর্যন্ত আলোচনা চলছে এ ফল আর যন্ত্র নিয়ে। আগামী ১৫ জুনের ভোটযুদ্ধে টেলিভিশন প্রতীক নিয়ে মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন সদ্যবিদায়ী মেয়র, ১৪ দল মনোনীত সম্মিলিত নাগরিক কমিটির মেয়র পদপ্রার্থী আলহাজ্ব শওকত হোসেন হিরন ও আনারস প্রতীক নিয়ে রয়েছেন বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী নাগরিক পরিষদের আহসান হাবিব কামাল।

জানা গেছে, এ মহানগরীতে ব্যাপক উন্নয়ন করায় দলমত নির্বিশেষে শওকত হোসেন হিরনের টেলিভিশনে আকর্ষন হচ্ছে বেশি। আহসান হাবিব কামাল অতীতে মেয়র থাকাকালীন সময় তার কয়েকটি আপত্তিকর কর্মকান্ডকে বিশেষ করে রিকসা উচ্ছেদ অভিযানকে এখনো মেনে নিতে নারাজ সাধারন ভোটাররা। তারা তাই কঠোর হিসেব নিকেশ করে এবার ভোট দেবেন বলেও জানিয়েছেন।

 

 

 

কামালের গণসংযোগ

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ১৮ দল সমর্থিত জাতীয়তাবাদী নাগরিক পরিষদ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আহসান হাবিব কামাল তার আনারস মার্কার সমর্থনে আজ বুধবার দিনভর নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করেছেন। বেলা ১১ টায় তিনি নগরীর ওয়াপদা এলাকায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে গণসংযোগকালে পুলিশ কমিশনার মোঃ শামসুদ্দিনের সাথে মতবিনিময় করেন। দুপুর ১২টায় আহসান হাবীব কামাল নগরীর ১২ নম্বর ওয়ার্ড শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের সামনে চরের বাড়ি এলাকায় এবং দুপুর একটায় তিনি খ্রিষ্টান কলোনীতে গণসংযোগ করে আনারস মার্কায় ভোট প্রার্থনা করেন। এসময় তার সাথে ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক এ্যাডভোকেট বিলকিস জাহান শিরিন, বিএনপি নেতা এ্যাডভোকেট সাইয়েদ উদ্দিন আহমেদ মধু, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জি.এম আতায়ে রাব্বী, আহমেদ জাকি অনুপম, বিএনপি নেতা হালিমুজ্জামান খান মাহমুদ, শাহাদাত হোসেন তোতা, সৈয়দ মনিরুল কবির মনির, লুৎফর রহমান, ১০ নম্বর ওয়ার্ড নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক জুলহাস উদ্দিন মাসুদ প্রমুখ।

 

হিরনের গণসংযোগ

সম্মিলিত নাগরিক কমিটির মেয়র পদপ্রার্থী শওকত হোসেন হিরন তার নির্বাচনী প্রতীক টেলিভিশন মার্কার ভোট প্রার্থনার জন্য আজ বুধবার নগরীর ৬ ও ১৩ নং ওয়ার্ডে ব্যাপক গণসংযোগ করেছেন। এসময় তার সাথে জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস-এমপি, নাগরিক পরিষদের সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহাবুব উদ্দিন আহমেদ-বীর বিক্রম, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমান অগ্রনী ব্যাংকের পরিচালক এ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু, আ’লীগ নেতা মোহাম্মদ হোসেন চৌধুরী, শিক্ষক নেতা ফরিদুল আলম জাহাঙ্গীরসহ ১৪ দলের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।